এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > দিলীপ ঘোষের উপর আক্রমণের প্রতিবাদে রাজু-শঙ্কুর নেতৃত্বে উত্তাল কলকাতার রাজপথ

দিলীপ ঘোষের উপর আক্রমণের প্রতিবাদে রাজু-শঙ্কুর নেতৃত্বে উত্তাল কলকাতার রাজপথ


লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় কার্যত ধরাশায়ী হওয়ার পর আর দেরি না করে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস নির্বাচন বিশেষজ্ঞ প্রশান্ত কিশোরকে দলের পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মসূচি ঠিক করার দায়িত্ব দেয়ার দায়িত্ব দেয়। আর দায়িত্ব নিয়েই প্রশান্ত কিশোর নিজের মতো একের পর এক কর্মসূচি তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের জন্য নিয়ে আসেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কর্মসূচির মাধ্যমে তৃণমূল কংগ্রেস তাদের হারানো জনভিত্তি ফিরে পেতে জনসংযোগের নতুন পন্থা নিয়েছে।

কিন্তু বিশ্বের সবথেকে বেশি সমর্থক পরিবেষ্টিত দল বিজেপি বর্তমানে পাখির চোখ করেছে নবান্ন দখল। সুতরাং, জনসংযোগ কর্মসূচিতে পিছিয়ে থাকতে তারাও বিন্দুমাত্র আগ্রহী নয়। আর তাই এই মুহূর্তে বিজেপির অন্যতম তুরুপের তাস দিলীপ ঘোষকে সামনে রেখে চায়ে-পে-চর্চার বঙ্গ-ভার্সন নিয়ে এসেছে। নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ সকালে প্রাতঃভ্রমনের সময় দিলীপবাবু লেকটাউনের সাধারণ মানুষের সঙ্গে চা খেতে খেতে জনসংযোগ করার পরিকল্পনা করেন।

কিন্তু গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ সেই কর্মসূচির সময় তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় কাউন্সিলরের নেতৃত্বে প্রায় আড়াইশো তৃণমূল কর্মী সমর্থক দীলিপবাবুকে ঘিরে ধরে রীতিমত ধস্তাধস্তি শুরু করে। ঘটনার ফলে বিজেপির দুই কর্মী মাথায় গুরুতর আঘাত পান। অন্যদিকে, আজই তৃণমূল কর্মীদের দ্বারা আক্রান্ত হন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া বনগাঁ-উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। আর নিজেদের রাজ্য সভাপতির ও বিধায়কের উপর একইদিনে এই ধরনের আক্রমন মোটেই ভালভাবে নেয়নি বিজেপি।

ফলে সকালেই সিদ্ধান্ত হয়ে যায়, বাংলার ৩৮ টি সাংগঠনিক জেলায় আজ বিকেলে প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়া হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গোটা রাজ্যজুড়েই দিলীপবাবু ও বিশ্বজিৎবাবুর উপর আক্রমণের প্রতিবাদ করে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা রাস্তায় নামেন। তবে এদিন বিজেপির সবথেকে বড় প্রতিবাদ মিছিলটি হয় – বিজেপির রাজ্য সদর দপ্তরের কাছেই। অন্যতম শীর্ষ নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় ও সদ্য যুব সংগঠনের রাজ্য কমিটিতে ঠাঁই পাওয়া শঙ্কুদেব পণ্ডার নেতৃত্বে এক বিশাল প্রতিবাদ মিছিল বের হয় সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ থেকে। সেই মিছিল কলুটোলা পর্যন্ত পৌঁছে পথ অবরোধ শুরু করে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর তার সঙ্গে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের দ্বারা দিলীপবাবুর উপর আক্রমণের প্রতিবাদ জানিয়ে শুরু হয় তীব্র স্লোগান। ঘটনার ফলে স্তব্ধ হয়ে যায় সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ। অবিলম্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। এদিকে ততক্ষনে গুরুতর আহত বিশ্বজিৎ দাসকে নিয়ে আসা হয়েছে কলকাতার এক বিখ্যাত নার্সিংহোমে। খবর পেয়েই প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে সেখানে ছুটে যান শঙ্কুদেব পণ্ডা। সেখানে গিয়েই বিশ্বজিৎবাবুর চিকিৎসা ও শুশ্রূষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেন তিনি। কিছুক্ষন বাদে সেখানে উপস্থিত হন বঙ্গ-বিজেপির অন্যতম শীর্ষনেতা মুকুল রায়ও।

এদিকে ততক্ষনে, যুবনেতা শঙ্কুদেব পণ্ডার নির্দেশের উত্তরবঙ্গ, হাওড়া, হুগলি সহ রাজ্যের প্রায় সর্বত্রই বিজেপির যুব সংগঠনের নেতা-কর্মীরা রাস্তায় নেমে পড়েছেন প্রতিবাদে। বিজেপির যুব সংগঠনের প্রতিবাদ ও ধর্নায় উত্তাল হয়ে ওঠে বেশিরভাগ জেলায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিজেপি যুব নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। চিত্রটা অনেকটা এককম ছিল কলুটোলাতেও। সেখানে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও বিধায়কের উপর আক্রমণের প্রতিবাদ ক্রমশ তীব্রতর হয়ে উঠতে থাকে। ফলে, পুলিশ গ্রেপ্তার করে বিজেপি রাজ্যনেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় সহ একাধিক গেরুয়া কর্মী-সমর্থককে।

ঘটনার জেরে কার্যত উত্তাল হয়ে ওঠে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ। পরে এই প্রসঙ্গে বিজেপি যুবনেতা শঙ্কুদেব পণ্ডার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, লোকসভা নির্বাচনেই প্রমাণিত হয়ে গেছে, তৃণমূল কংগ্রেসের এই রাজ্যে আর কোনো জনসমর্থন নেই। ফলে, ঘাসফুল শিবির সম্পূর্ণরূপে দিশাহীন হয়ে পড়েছে। আমাদের রাজ্য সভাপতির উপর আক্রমণ, সেই দিশাহীনতারই বহিঃপ্রকাশ। তবে এইভাবে গেরুয়া শিবিরের উত্থান আটকানো যাবে না কিছুতেই। বাংলার জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়েই নিয়েছেন, বর্তমান সরকারকে ছুঁড়ে গঙ্গার জলে ফেলে দেবেন বলে।

তিনি আরও জানান, আর সেই দেওয়াল লিখন স্পষ্ট হতেই, তৃণমূল কংগ্রেস একের পর এক অরাজনৈতিক ও বর্বরোচিত পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে। রাজ্যের পুলিশকে ‘দলদাস’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে! গণতন্ত্রের লজ্জা হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমান রাজ্য সরকার। তবে এইভাবে মেরে বিজেপিকে আটকানোর যায়নি, যাবেও না। তৃণমূলের নেতারা যত গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করতে চাইবে, আগামীদিনে রাজ্যজুড়ে সাধারণ মানুষের বিজেপির উপর সমর্থন ও ভরশা ততইবেড়ে যাবে। নির্বাচন হলেই এই সরকারের পতন নিশ্চিত, আর তাই বিজেপির উপর আক্রমণ হেনে সেই পতন ঠেকানোর ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বর্তমান শাসকদল।

https://www.youtube.com/watch?v=tVYI5Jsyfc0

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!