বিজেপির হাত ধরেই কী দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরন হতে চলেছে রায়গঞ্জ বাসীর! উত্তরবঙ্গ কলকাতা রাজ্য January 9, 2020 পূর্ণ হতে চলেছে রায়গঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। এখন দিনের ট্রেনের অপেক্ষায় দিন গুণছে উত্তর দিনাজপুর জেলার বাসিন্দারা। লোকসভা নির্বাচনের আগেই ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্তের কাছে উত্তর দিনাজপুর তথা রায়গঞ্জ বাসীর একটা বড় দাবি ছিল, রায়গঞ্জ থেকে কলকাতা পর্যন্ত অতিরিক্ত রেল পরিষেবা চালু করা। আর এবার উত্তর দিনাজপুর থেকে কলকাতায় যাতায়াতের জন্য দিনের বেলার ট্রেন চালুর প্রস্তাব নিয়ে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী কাছে দরবার করতে দেখা গেল উত্তর দিনাজপুর জেলার গেরুয়া শিবিরের নেতৃত্বদেরকে। বস্তুত, 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে জেলার রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র এবং কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ব্যাপক ভোটে লিড পেয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী। সেই কারণে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কানাইয়ালাল আগরওয়ালাকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়ে জয়যুক্ত হয় দেবশ্রীদেবী। কিন্তু বিজয়ী সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর কাছে ওই বিধানসভা কেন্দ্রগুলি এবং সমগ্র জেলার একটা বড় দাবি ছিল, রেলের মানচিত্রে উত্তর দিনাজপুর জেলা তথা রায়গঞ্জের উন্নতি। কলকাতা থেকে রায়গঞ্জ পর্যন্ত অতিরিক্ত রেল পরিষেবা। তবে লোকসভা নির্বাচনের ছয় মাস পার হয়ে গেলেও, এখনও পর্যন্ত সেই স্বপ্ন অধরাই রয়েছে উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দাদের। কলকাতা পর্যন্ত যাতায়াত করতে একমাত্র রাধিকাপুর এক্সপ্রেসই ভরসা স্থানীয়দের। সীমান্তবর্তী এই এলাকা থেকে কলকাতা পর্যন্ত যাতায়াত যথেষ্ট কষ্টকর ব্যাপার বলে মত সাধারন জনগনের। কারণ রেলের জন্য একমাত্র রাধিকাপুর এক্সপ্রেস ভরসা। আর অন্যান্য ট্রেন ধরতে গেলে তাদের ছুটতে হয় সুদূর মালদা পর্যন্ত। সড়কপথে মালদা জেলা থেকে রায়গঞ্জের যাত্রাপথ দুই ঘন্টার। এতে করে অতিরিক্ত সময় একদিকে যেমন বাহিত হয়, তেমনই অতিরিক্ত খরচার সম্মুখীন হতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদেরকে। সেই কারণে কেন্দ্রের শাসক দলের প্রার্থীকে জয়যুক্ত করার সময় এলাকার মানুষের দাবী ছিল বাড়তি রেল পরিষেবা। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার গঠন এবং স্থানীয় সাংসদের মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও, এলাকার ভাগ্যে নতুন রেল জোটেনি। যার জন্য বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছে রায়গঞ্জ এলাকা এবং কালিয়াগঞ্জ এলাকার বাসিন্দারা। জনগণ যে কতটা ক্রোধান্বিত, তার প্রমাণ কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে কিছুটা পেয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্ব। লোকসভা নির্বাচনে যেখানে প্রায় 57 হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি প্রার্থী, সেই কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে পরাজয়ের মুখ দেখতে হয়েছে পদ্মফুল শিবিরের নেতৃত্বদেরকে। সেই কারণেই আগামী পৌরসভা নির্বাচন এবং 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কোনো রকম ঝুঁকি নিতে চাইছে না ভারতীয় জনতা পার্টির কর্তাব্যক্তিরা। সেই কারণেই ইতিমধ্যে দিল্লিতে দরবার করতে শুরু করে দিয়েছেন তারা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - শুধু রেল নয়, সড়কপথেও উত্তর দিনাজপুরের সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরামদায়ক বাস পরিষেবা না থাকার কারণে যাতায়াতের অসুবিধাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণবঙ্গ থেকে ভাল চিকিৎসক এবং অন্যান্য সরকারি কর্মীরাও রায়গঞ্জ এলাকায় পোস্টিং নিতে চান না। আবার এলাকায় শিল্পের উন্নতির সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কারণে অবহেলিত হয়ে এসেছে এই জেলা বলে মত বিশেষজ্ঞদের। সেই কারণেই অন্ততপক্ষে রেলের আবশ্যিক উন্নতি প্রয়োজন। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কিন্তু কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী জয় হওয়ার পরেই কালিয়াগঞ্জ থেকে কলকাতা এবং শিলিগুড়ি সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এসি বাস পরিষেবা চালু করতে চলেছে রাজ্য পরিবহন দপ্তর। সেই কারণেই ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে কেন্দ্র সরকারের অধীনস্থ রেল প্রকল্প এলাকায় শুরু করা এখন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ভারতীয় জনতা পার্টির জেলা নেতৃত্বের উদ্যোগ দেখে এখন মনে হচ্ছে, আশা পূর্ণ হতে চলেছে রায়গঞ্জবাসীর। এই বিষয়ে ভারতীয় জনতা পার্টি সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যেই রায়গঞ্জের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী রেল বিভাগের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা সেরেছেন। আবার ভারতীয় জনতা পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ লাহিড়ী বলেন, “আশা করছি, ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ রাধিকাপুর থেকে কলকাতা যাতায়াতের জন্য দিনের ট্রেন দ্রুত চালু হতে পারে। তিনি আরও বলেন, “নতুন ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্ত সমস্যা সমাধান হলেই দ্রুত পরিষেবা পেতে শুরু করবে এলাকার মানুষ জন।” এখন সবকিছু মিলিয়ে রায়গঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হয় কিনা, সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -