এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > আরও প্রকট হচ্ছে বিজেপির আদি-নব্য দ্বন্দ্ব! আরও দ্রুত পায়ের তলার মাটি সরছে!

আরও প্রকট হচ্ছে বিজেপির আদি-নব্য দ্বন্দ্ব! আরও দ্রুত পায়ের তলার মাটি সরছে!

রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো থেকে তাদের দলের ভিড় বাড়ার ফলে বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের পুরনো বনাম নতুন কর্মীদের মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। যার জেরে পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয়ে ওঠে যে, সেই নব্য বনাম আদি কর্মীদের দ্বন্দ্বে ভোটের ফল পর্যন্ত খারাপ হতে শুরু করে তৃণমূলের। সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে অন্যান্য কারনগুলোর সঙ্গে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও তাদের ফল খারাপ হওয়ার একটি প্রধান কারণ বলে মত রাজনৈতিক মহলের।

কিন্তু দলীয় স্তরে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব করলে যে অবস্থা অত্যন্ত বেগতিক হয়, তা যেন তৃণমূলকে দেখেও শিখে উঠতে পারল না বিজেপি। সূত্রের খবর, গেরুয়া শিবিরের নতুন বনাম পুরাতন কর্মীদের দ্বন্দ্বের ফলে এবার কোচবিহারের আরও একটি গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয়ে গেল তাদের। বস্তুত, সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনের পর কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি জয়লাভ করলে তৃণমূলের দখলে থাকা বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের নিজেদের দলে যোগদান করিয়ে তা দখল করতে শুরু করে গেরুয়া শিবির।

জানা যায়, সেই সময় হাজরাহাট-1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের 13 জন সদস্যদের মধ্যে প্রধান সহ প্রায় 7 জন সদস্য বিজেপিতে যোগদান করেন। যার ফলে সেই পঞ্চায়েতের ক্ষমতা বিজেপির দখলে চলে যায়। কিন্তু তৃণমূলের প্রধান বিজেপিতে যোগদান করার পরই সেই পঞ্চায়েতে আদি বনাম নব্য বিজেপি কর্মী সমর্থকদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। অভিযোগ, বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রধানের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলে বিজেপির একশ্রেণীর কর্মীসমর্থকরা তার বাড়ি ঘেরাও করেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এতেই আরও উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি।এরপর থেকেই সেই প্রধানের সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের দূরত্ব বাড়তে থাকে। যার সুযোগ নেয় তৃণমূল। জানা যায়, এদিন প্রধান সহ সেই পঞ্চায়েত সদস্যদের হাতে নিজেদের দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে তাদের তৃণমূলে যোগদান করান কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। ফলে, লোকসভা নির্বাচনে গোটা উত্তরবঙ্গে যে গেরুয়া ঝড় উঠেছিল, তা রুখে দিয়ে কার্যত আবার সেখানে ঘাসফুল শিবির ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। আর এই ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে তৃণমূলকে সুবিধা করে দিচ্ছে বিজেপির আদি বনাম নব্যের লড়াই!

কিন্তু কেন তিনি আবার তৃণমূলে যোগ দিলেন! এদিন এই প্রসঙ্গে প্রধান রুম্পা বর্মণ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমি তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচনে জিতে প্রধান হয়েছিলাম। গত লোকসভা নির্বাচনের পর ভয় দেখিয়ে হুমকি দিয়ে আমাকে বিজেপিতে যোগদান করাতে বাধ্য করা হয়েছিল। কিন্তু কাজ করতে দেওয়া হয়নি। আমি তৃণমূলের লোক। তাই আবার তৃণমূলের ফিরে এলাম।” তবে প্রধান সহ অন্যান্য সদস্যদের তৃণমূল নিজেদের দিকে যোগদান করালেন তা নিয়ে পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি।

এদিন এই প্রসঙ্গে, জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বর্মন বলেন, “জেলা জুড়ে যে সমস্ত পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূল ছেড়ে আমাদের দলে এসেছিলেন, তাদের ভয় দেখিয়ে নিজেদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল।” তবে অভিজিতবাবু এই কথা বললেও নিজেদের দলের কোন্দলের কথা স্বীকার করেননি। তবে বিজেপির এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। এদিন এই প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “বিজেপি যে একটি অগণতান্ত্রিক দল, তা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।”

তিনি আরও বলেন, “এরা জোর করে আমাদের পঞ্চায়েত প্রধানদের নিজেদের দলে নিয়েছিল। এখন সবাই সেটা বুঝতে পেরেছে।” সব মিলিয়ে নিজেদের দখল করা পঞ্চায়েত দলীয় কোন্দলের জেরে তৃণমূলের কাছে চলে যাওয়ায় হতাশ গেরুয়া শিবির। দল বাড়াতে গেলে অন্য দল থেকে সদস্যদের বিজেপিতে নিয়ে আসতে হবে – এই কথা বারবার মোহন ভাগবত থেকে কৈলাশ বিজয়বর্গীয় স্মরণ করিয়ে দিলেও, গেরুয়া শিবিরে কিন্তু আদি ও নাব্য লড়াই থামার কোনো লক্ষণই নেই! যার ফায়দা নিয়ে তৃণমূল কিন্তু ক্রমশ ঘর গুছিয়ে নিচ্ছে সন্তপর্ণে!

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!