এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তরবঙ্গে সংগঠন বাড়াতে ‘মাস্টারস্ট্রোক’ বিজেপির

লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তরবঙ্গে সংগঠন বাড়াতে ‘মাস্টারস্ট্রোক’ বিজেপির


পঞ্চায়েত নির্বাচন ফলের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যে উল্কার গতিতে উত্থান হচ্ছে গেরুয়া শিবিরের, ইতিমধ্যেই বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে তৃণমূল কংগ্রেসের মূল প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে তারা। সামনেই লোকসভা নির্বাচন, সেখানেও কার্যত তৃণমূল কংগ্রেসকে গেরুয়া শিবির বুঝিয়ে দিতে মরিয়া যে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে তারাই হবে মূল চ্যালেঞ্জার। অন্যদিকে, ইতিমধ্যেই ‘মোদী সরকার হটাও’ যজ্ঞের প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে অবিজেপি পার্টিগুলো – যার নেতৃত্ত্বে আবার স্বয়ং তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাই গেরুয়া শিবির সেই তৃণমূল কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বাংলায় এবার ‘দুর্দান্ত’ ফলাফল করতে মরিয়া। আর সে কাজ করতেই নতুন করে ঘুঁটির চাল সাজাচ্ছেন জাতীয় পদ্মনেতৃত্বরা।

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

আসন্ন লোকসভা যুদ্ধে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি ধরে রাখা যে রীতিমত কষ্টসাধ্য হতে চলেছে তার আঁচও তাঁরা পেয়ে গিয়েছেন সাম্প্রতিক অতীতে হওয়া নির্বাচন এবং উপনির্বাচনের আবহে। আর তাই এই কঠিন পরিস্থিতে দলীয় শক্তি বাড়াতে কোচবিহারের বসে যাওয়া বামপন্থী নেতা ও ‘বিশিষ্ট’ জনদের কাছে টানতে নতুন পরিকল্পনা করছে গেরুয়া শিবির। একসময় বামেদের প্রাণকেন্দ্র ছিল কোচবিহার। এবার সেই ঘাঁটিকেই চাঙ্গা করে নিজেদের প্রয়োজনে লাগাতে নতুন অঙ্ক কষছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। সূত্রের খবর, এলাকার বাম-সমর্থকদের একটা তালিকাও তৈরি করা হয়েছে এবং সেই তালিকা মোতাবেক বামমনোভাবাপন্ন মানুষগুলোর বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ঘনিষ্টতা বাড়াতে চেষ্টা করবেন জেলা বিজেপি নেতৃত্বরা। তারপর তাঁদের সামনে তুলে ধরা হবে এতোদিনে বিজেপির জনস্বার্থে করা উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান। বিজেপি শিবিরের খবর, চলতি সপ্তাহ থেকেই এই অভিযান পর্ব শুরু হয়েছে জেলার বিজেপি নেতাদের তত্ত্বাবধানে। প্রত্যেক নেতা ২৫ জন ব্যাক্তির সঙ্গে দেখা করবেন বলেই জানা গেছে, যা চলবে আগামী ৬ জুলাই পর্যন্ত। ইতিমধ্যেই যেসব বাম সমর্থকদের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁদের, তাঁরা ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াই দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্বরা।

এ প্রসঙ্গে কুচবিহার জেলা বিজেপি সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে সংবাদমাধ্যমকে জানান যে জেলার যেসব বিশিষ্টজনের সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বামপন্থী নেতারাও। তাঁদের সামনে তুলে ধরা হবে কেন্দ্রীয় উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোর খতিয়ান। তবে এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ ভিন্ন সুর জেলা বামফ্রন্ট নেতৃত্ত্বের। বামেদের জেলা আহ্বায়ক তারিণী রায় জানান, আসলে বিজেপি তৃণমূলবিরোধী কথা বলে লোকসভা ভোটে বাম সমর্থন পেতে চাইছে। ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি করে বাম কর্মীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। তবে এসব করে বিজেপির বিশেষ কোনো লাভ হবে না। উল্লেখ্য, কোচবিহার জেলাতে এমন কিছু বাম নেতা রয়েছেন যাঁরা সক্রিয় রাজনীতি থেকে বর্তমানে বেশ কিছুটা দূরে। তবে তৃণমূল জামানায় এখনও তাঁদের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে জেলায় বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের। কেননা সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও তাঁদের প্রতিনিধিত্বে এখনও চলে আইনজীবী, লেখক, শিল্পি, বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে তৈরি বিভিন্ন সংগঠন। আর এই নেতাদেরই এবার কৌশলে পাশে পেতে ঝাঁপাচ্ছেন বিজেপি নেতারা। ইতিমধ্যেই বাম সমর্থক বলে পরিচিত এক আইনজীবী এবং চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করে ‘জন-সম্পর্ক’ করেছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব এবং তাঁদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়াও মিলেছে বলে খবর। ফলে লোকসভা নির্বাচনের আগে এই সব বামনেতাদের যদি গেরুয়া ছাতার তলায় আনা যায়, তাহলে তার প্রভাব ভোটবাক্সে পড়তে বাধ্য, যা বদলে দিতে পারে অনেক সমীকরণ। আর তাই গেরুয়া শিবিরের এই নতুন অঙ্কে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেক পোড়খাওয়া রাজনৈতিকই।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!