এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বিজেপিতে বড়সড় সাংগঠনিক পরিবর্তন, পদ হারাতে চলেছেন বহু পুরোনো নেতা? জল্পনা চরমে

বিজেপিতে বড়সড় সাংগঠনিক পরিবর্তন, পদ হারাতে চলেছেন বহু পুরোনো নেতা? জল্পনা চরমে


আগামী 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচন বিজেপির কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। লোকসভা নির্বাচনে তারা 18 টি আসন লাভ করলেও সংখ্যাতত্ত্বের হিসাবে অনেক আসনেই নিজেদের ফল ভালো করতে পারেনি ভারতীয় জনতা পার্টি। অনেক বিধানসভা আসনে লোকসভা ভিত্তিক ফলাফলে তারা তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। সেদিক থেকে বিভিন্ন জায়গায় ভালো ফল করতে গেলেও তাদের সাংগঠনিক শক্তি আরো মজবুত করা দরকার।

আর তাই এবার সংগঠনের গুরুদায়িত্ব তরুণদের হাতেই তুলে দিতে চলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি বলে খবর। বিজেপির সাংগঠনিক রীতিনীতি অনুযায়ী, বুথস্তর থেকে শুরু করে মণ্ডল স্তর পর্যন্ত সব কমিটি গুলোর মধ্যে তরুণদের আধিক্য থাকবে বলে জানা যাচ্ছে বিজেপির দলীয় সূত্রের মাধ্যমে। আর সেইমত করেই দলকে কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বলে জানা গেছে। সেখানে বলে দেওয়া হয়েছে, দায়িত্বে থাকা সভাপতিদের বয়স গড়ে 40 বছরের মধ্যে হতে হবে।

পাশাপাশি ছুটোছুটি করে কাজ করার জন্য তাদের প্রত্যেকের মোটরবাইক থাকা আবশ্যক বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে। সদস্য সংগ্রহ অভিযানের পরে ইতিমধ্যেই বাংলা জুড়ে শুরু হয়ে গেছে বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন। একেবারে বুথস্তর থেকে শুরু হয়ে সেই নির্বাচন নভেম্বর 19 তারিখের মধ্যে মণ্ডল কমিটির নির্বাচন দিয়ে শেষ হতে চলেছে। আর এই মণ্ডল কমিটির নির্বাচন হয়ে গেলেই জেলা কমিটির নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবে ভারতীয় জনতা পার্টি।

এই সমস্ত ঘটনা নিয়ে পর্যালোচনা করার জন্য গত মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতার মহারাষ্ট্র নিবাসে সারাদিন ব্যাপী রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব এবং কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক শিব প্রকাশ, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, দলের রাজ্য সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়, কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা, সাংসদ সুভাষ সরকার সহ দলের অনেক শীর্ষ নেতৃত্ব উপস্থিত থেকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন। বিজেপির সাংগঠনিক পরিকাঠামো পশ্চিমবঙ্গে মোট 1164 টি মন্ডল কমিটি রয়েছে। সেই মন্ডলের সভাপতিদের বয়স 40 বছরের মধ্যে হতে হবে বলে স্পষ্টতই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

যদি খুব অসুবিধা হয়, তাহলে খুব বেশি হলে 42 বছর পর্যন্ত সেই বয়স রাখা হতে পারে বলে জানানো হয়েছে গেরুয়া শিবিরের তরফে। পাশাপাশি সেই সমস্ত কর্মীদেরকেই গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে, যারা দলের জন্য সব সময় কাজ করতে পারবে। আর এই নির্দেশিকা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতা শিব প্রকাশ বলে জানা যাচ্ছে দলীয় সূত্রে। বিজেপি নেতা শিব প্রকাশ মন্তব্য করেন, দলের উন্নতির স্বার্থে কাজের লোক বসাতে হবে। যোগ্যদের দায়িত্ব দিতে হবে।

প্রতিটি জেলার জেলা সভাপতিদের কাছে নিজেদের অবস্থান এই ভাবেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন শিব প্রকাশ। ইতিমধ্যেই জানা গেছে, উত্তরবঙ্গ সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় নিজেদের ফল ভালো করলেও কলকাতা লাগোয়া শহরগুলিতে বিশেষত বীরভূম, দক্ষিণ 24 পরগনা, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া সহ একাধিক জায়গায় সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির। অনেকে মনে করছেন, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা হওয়াতেই কিছু এলাকায় ভালো ফল করতে পারেনি হিন্দুত্বের রাজনীতি করা ভারতীয় জনতা পার্টি।

কিন্তু সাংগঠনিক জোর থাকলে এবং সমগ্র লোকসভা আসনে ভালো ফল না করতে পারলেও বিধানসভা ভিত্তিক ফল ভালো হওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। রাজ্যে প্রায় 79 হাজার 68 হাজারের মত বুথে দলের সাংগঠনিক নির্বাচন ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে বলে জানা যাচ্ছে। বাকি যে সমস্ত বুথগুলো রয়েছে, সেই সমস্ত বুথের সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে এবং তার কারণগুলো নিয়ে ইতিমধ্যেই বৈঠক শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়ে দিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

যেহেতু নিজেদের সাংগঠনিক বিস্তৃতিই মূল বিষয় ছিল ভারতীয় জনতা পার্টির – তাই, ওই বৈঠকে এনআরসি সংক্রান্ত বিষয়, রাজ্যের আগামী নির্বাচন সহ অন্যান্য কোনরকম আলোচনা হয়নি বলেই বঙ্গ বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে। আর এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ইতিমধ্যেই সাড়া জাগিয়ে তুলেছে রাজ্য রাজনীতির আঙিনায়। বস্তুত, যদি আগামী বছর রাজ্যের পৌরসভা নির্বাচনগুলি হয়ে যায় তাহলে তার ফলাফলের মধ্যে দিয়েই আগামী বিধানসভা নির্বাচনের প্রতিচ্ছবি সামনে আসবে বলে মনে করছেন একাধিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ।

সেই হিসাবে প্রথমে পুরসভা ও পরে বিধানসভা নির্বাচনের বৈতরণী পার হওয়ার জন্য বর্তমানে নির্বাচিত কমিটির উপরেই নির্ভর করতে হবে গেরুয়া শিবিরকে। আর তাই দলে, তারুণ্যের জোয়ার আনার চেষ্টা চলছে। কিন্তু, এই বয়সসীমা বেঁধে দেওয়ায় অনেক পুরোনো নেতাই এবার পদ হারাতে পারেন। এমনিতেই, দলের মধ্যে আদি ও নব্য গোষ্ঠীর লড়াই শুরু হয়ে গেছে। সেখানে সাংগঠনিক পরিবর্তনে বহু পুরোনো নেতা পদ হারালে, সেক্ষত্রে নতুন কোনো অশনি সঙ্কেত বয়ে আনে কিনা সেদিকেই এখন নজর সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!