কিছুদিন আগেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন রাজ্যের স্কুলগুলিতে শিক্ষক সমস্যা দূর করতে ও শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এবার থেকে রাজ্যের প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত ইন্টার্ন নিয়োগ করা হবে। আর প্রাথমিকের ইন্টার্নদের জন্য মাসিক ২,০০০ টাকা ও উচ্চপ্রাথমিকের জন্য মাসিক ২,৫০০০ টাকা করে ইন্টার্নশিপ দেওয়া হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরেই রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন এর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ দেখতে শুরু করে। আর এবার, লক্ষ লক্ষ বি.এড. এবং ডি.এল.এড. ট্রেনিং প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের বঞ্চিত করে মুখ্যমন্ত্রী বিদ্যালয়ে ইন্টার্ন শিক্ষকের নাম করে তৃণমূলের ক্যাডার ঢোকাতে চাইছে – সরাসরি এই অভিযোগ করে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকরকে চিঠি পাঠাল বিজেপি শিক্ষক সেল। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষক শিক্ষণ নিয়ামক সংস্থা NCTE-এর নির্দেশ অনুসারে যেখানে বি.এড. এবং ডি.এল.এড. প্রশিক্ষণ ছাড়া প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ করা যাবে না – সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর ট্রেনিং ছাড়া ইন্টার্ন শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা সম্পূর্ণ বেআইনি।

বিজেপি শিক্ষক সেলের রাজ্য কনভেনার দীপল বিশ্বাস জানান, লক্ষ লক্ষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত যুবক-যুবতীদের বঞ্চিত করে মুখ্যমন্ত্রী বিদ্যালয়ে সিভিক টিচার নিয়োগ করে, আদতে তৃণমূলের ক্যাডারদের ঢোকাতে চাইছে। ফলে পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়বে, বিদ্যালয়ে অরাজকতা সৃষ্টি হবে। তাই আমরা কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে সমস্ত কিছু লিপিবদ্ধ করে পাঠাচ্ছি।

অন্যদিকে, বিজেপি শিক্ষক সেলের প্রাথমিক শাখার রাজ্য কো-ইনচার্জ সব্যসাচী ঘোষ জানান NCTE এর নির্দেশ অনুসারে D.EL.ED. প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত এবং TET পাশ করা পরীক্ষার্থীরাই প্রাথমিক শিক্ষক পদের যোগ্য। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর মাসিক দুই হাজার টাকা ভাতায় ইন্টার্ন শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণায় লক্ষ লক্ষ D.EL.ED. প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বেকার যুবক-যুবতীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে গেল। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠরত খুদে পড়ুয়া যারা আমাদের ভবিষ্যৎ তারাও প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। তাই আমরা কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকরজীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।