প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  সম্প্রতি মুকুল রায়ের পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের একটি ফেসবুক পোস্ট রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টি করে রাজ্য রাজনীতিতে। সদ্য ক্ষমতায় আসা তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের যেভাবে বিরোধিতা করতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারতীয় জনতা পার্টি, সেই উদ্দেশ্যে একটি ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দেন বীজপুরের প্রাক্তন বিধায়ক। যেখানে সরকারের সমালোচনা না করে আত্মসমালোচনার দিকে নজর দেওয়া উচিত বলে ভারতীয় জনতা পার্টিকে বলে বার্তা দিতে দেখা যায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পুত্রকে।

আর তারপর থেকেই গুঞ্জন তৈরি হয়, তাহলে কি মুকুল রায়ের পুত্র শুভ্রাংশু রায় এবার বিজেপি ত্যাগ করার চিন্তাভাবনা করছেন! তিনি কি আবার ফিরে যেতে চাইছেন তাঁর প্রাক্তন দল তৃনমূল কংগ্রেসে? কেননা ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই যাযা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তারা আবার তৃণমূলে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

সেদিক থেকে মুকুল রায়ের পুত্রের এই ফেসবুক পোস্ট রীতিমত গুঞ্জন বাড়িয়ে দেয়। আর এই পরিস্থিতিতে এবার সেই ফেসবুক পোস্ট নিয়ে শুভ্রাংশু রায়ের গলায় শোনা গেল তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য। যেখানে বর্তমান পরিস্থিতিতে এই ফেসবুক পোস্ট নিয়ে মন্তব্য না করে তিনি তার মায়ের শরীর খারাপ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন বলে জানিয়ে দিলেন বীজপুরের প্রাক্তন বিধায়ক।

বস্তুত, শনিবার একটি ফেসবুক পোস্ট করেন মুকুল রায়ের পুত্র শুভ্রাংশু রায়। যেখানে তিনি লেখেন, “বিপুল জনাদেশ নিয়ে ক্ষমতায় আসা সরকারের সমালোচনা না করে আত্মসমালোচনা করা উচিত।” অর্থাৎ বিজেপির ভরাডুবির পর তিনি গেরুয়া শিবিরের উদ্দেশ্যেই এই বার্তা দিলেন, তা তার সেই ফেসবুক পোস্ট থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়। আর তারপর থেকেই শুভ্রাংশু রায়ের রাজনৈতিক গতি প্রকৃতি নিয়ে তৈরি হয় জল্পনা।

আর এই পরিস্থিতিতে আজ এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয় শুভ্রাংশুবাবুকে। যার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “এই ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে এই মুহূর্তে আমি কোনো মন্তব্য করতে ইচ্ছুক নই। আমার মা অসুস্থ রয়েছেন, আমি সেই নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি। এইসব নিয়ে এখন কিছু আলোচনা করতে চাই না।” স্বাভাবিক ভাবেই শুভ্রাংশুবাবুর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে আবার নতুন করে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে রাজ্য জুড়ে।

বিশেষজ্ঞরা একাংশ বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেস অন্য দল থেকে আসা নেতাদের গ্রহণ করার ব্যাপারে কিছুটা হলেও কঠোর মনোভাব গ্রহণ করেছে। এক্ষেত্রে ছয় মাস না পেরোলে তারা এই ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। আর এই পরিস্থিতিতে শুভ্রাংশু রায়ের এই মন্তব্যের পর রাজ্য রাজনীতিতে আলোরন পড়ে গিয়েছিল। অনেকটাই চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। যার জেরে কি সিদ্ধান্ত নেবেন শুভ্রাংশু রায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়।

অবশেষে মায়ের অসুস্থতা নিয়ে তিনি সব থেকে বেশি ব্যস্ত আছেন বলে গোটা বিষয়ে মন্তব্য না করে কার্যত জল্পনাকে আরও বাড়িয়ে দিলেন বীজপুরের প্রাক্তন বিধায়ক। একাংশ বলছেন, এই সময় সঠিকভাবে যদি শুভ্রাংশু রায় এই ব্যাপারে কোনো বার্তা দেন, তাহলে তিনি চাপে পড়ে যেতে পারেন। তাই সুকৌশলী পদক্ষেপ গ্রহণ করে মায়ের অসুস্থতার কথা তুলে ধরে গোটা বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেন তিনি। তবে সাময়িকভাবে গোটা বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও, পরবর্তীতে এই ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন মুকুল রায়ের পুত্র, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।