বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরতে প্রায়শ্চিত্ত বাধ্যতামূলক? নয়া ট্রেন্ডে টালমাটাল বাংলা! তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য হাওড়া-হুগলি June 23, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – 2017 সালে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করার পর বর্তমান তৃণমূল নেতা মুকুল রায় বলেছিলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষমতায় বসিয়ে আমি পাপ করেছি। তাই বিজেপিতে এসে গোটা রাজ্যজুড়ে বিজেপির হয়ে প্রচার করে সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করছি।” এমনকি মুকুল রায়ের কথায় সহমত পোষণ করে সেইসময় তার অনেক অনুগামীরা তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করে সেই একই কথা বলতে শুরু করেছিলেন। তবে চার বছর আগেকার পরিস্থিতি আর বর্তমান পরিস্থিতি এক নয়। কিছুদিন আগেই মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে আবার যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসে। আর এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় জনতা পার্টি 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হওয়ার পর বিজেপির অনেক নীচুতলার কর্মী থেকে শুরু করে ওপরতলার নেতারা দলবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির অনেক নেতা-কর্মীরা গেরুয়া শিবির ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরের নাম লেখানোর জন্য তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে আবেদন করছেন। অনেক ক্ষেত্রে তৃণমূল নেতৃত্ব কঠোর পদ্ধতি অবলম্বন করার কারণে অনেকেই প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে যাতে তাদের দলে অন্তর্ভুক্ত করানো হয়, তার জন্য আবেদন করতে শুরু করেছেন। তবে এবার কার্যত অন্যরকম ঘটনা ঘটতে দেখা গেল বাংলায়। যেখানে বিজেপিতে থেকে পাপ করেছেন বলে সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে নিজেদের মাথার চুল কেটে ন্যাড়া হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন ব্যাপক বিজেপি কর্মী সমর্থক। স্বাভাবিক ভাবেই এই গোটা ঘটনায় রীতিমত হতবাক হয়ে গিয়েছেন বাংলার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সূত্রের খবর, এদিন হুগলির আরামবাগ মহকুমার খানাকুলে পাঁচশো জন বিজেপি কর্মী-সমর্থক নিজেদের মাথার চুল কেটে ফেলেন। যেখানে ন্যাড়া করে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়ে দেন তারা। অর্থাৎ এতদিন বিজেপিতে থাকার কারণে তারা যথেষ্ট পাপ করেছেন। কিন্তু এবার তারা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে সেই পাপকে ত্যাগ করতে রীতিমত মাথার চুল ছেড়ে দিয়ে নজির গঠন করলেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকে বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেস বর্তমানে বিজেপি থেকে আসা নেতা-নেত্রীদের খুব একটা সহজে গ্রহণ করতে চাইছে না। তাই সেদিক থেকে বিজেপিতে থেকে পাপ করার কথা বলে মাথার চুল ন্যাড়া করে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইলেন খানাকুলের পাঁচশো জন বিজেপি কর্মী-সমর্থক। এক্ষেত্রে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য তাদের এই পদক্ষেপ স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলেই মনে করছেন সকলে। এদিন এই বিজেপি কর্মী সমর্থকদের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করান আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ অপরুপা পোদ্দার। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ আপূর্বা পোদ্দার বলেন, “বিজেপি এই সমস্ত কর্মী-সমর্থকদের ভুল বুঝিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। তারা ভুল শুধরে আবার দলে ফিরে এসেছেন। বিজেপিতে যাওয়া যে তাদের ভুল হয়েছিল, তা বুঝতে পেরেই তারা মাথা মুড়িয়ে প্রায়শ্চিত্ত করে পুরনো দলে ফিরে এসেছেন।” অর্থাৎ একসময় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন এই সমস্ত কর্মী-সমর্থকরা। কিন্তু বিজেপির হাওয়া ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করলে তারা দলবদলে সিদ্ধান্ত নেন। তবে গেরুয়া শিবির রাজ্যে খুব একটা ভালো ফলাফল করতে পারেনি। 200 আসনের টার্গেট দিয়ে শেষ পর্যন্ত 77 টি আসন দখল করে কোনোরকমে বিরোধী দলের জায়গা দখল করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর তারপর থেকেই বিজেপিতে বেসুরো নেতা-নেত্রীদের পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছে। অনেক জায়গাতেই তৃণমূলের পার্টি অফিসের সামনে কান ধরে ক্ষমা চেয়ে তাদের যাতে দলে গ্রহণ করা হয়, তার জন্য আবেদন জানাতে শুরু করেছেন বিজেপির অনেক কর্মী সমর্থকরা। কিন্তু এবার কার্যত বেনজির ভাবে বিজেপিতে কাজ করার জন্য পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে মাথার চুল ছেদন করে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত হলেন পাঁচশো বিজেপি নেতা কর্মী। স্বভাবতই গোটা ঘটনায় ভারতীয় জনতা পার্টি যে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়ে গেল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -