বিরোধী মহাজোটে ভরসা নেই পিকের, মোদীকে সরাতে কি পরিকল্পনা! জেনে নিন জাতীয় রাজ্য June 22, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেষ্টা করেছিলেন, সমস্ত বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে একত্রিত করে নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠতে। কিন্তু তার সেই চেষ্টা সফলতা পায়নি। বরঞ্চ তৃতীয়বারের জন্য নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তবে তৃতীয়বার পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা দখল করার পরেই এবার সর্বভারতীয় রাজনীতির দিকে বেশি নজর দিতে শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই জাতীয় ঘুটি সাজানো যায়, তার জন্য চেষ্টা শুরু করেছেন তিনি। দলকে বৃহৎ আকারে বিস্তৃতি দেওয়ার পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের 2019 থেকে 2021 পর্যন্ত রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা প্রশান্ত কিশোরকেও বেশ সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছে। যেখানে বিশিষ্ট এই ভোটকৌশলী একের পর এক বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে শুরু করেছেন। যার মধ্যে অন্যতম শরদ পাওয়ারের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের বৈঠক। তবে বিরোধী মহাজোটের উপর ভরসা করে সংঘবদ্ধভাবে লড়াই করার জল্পনা তৈরি হলেও, বিরোধী মহাজোট তত্ত্বের উপর ভরসা নেই প্রশান্ত কিশোরের। এক্ষেত্রে বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক দল যাতে লড়াই করে, সেই ব্যাপারে নিজের মত পোষণ করতে শুরু করেছেন তিনি। অর্থাৎ বিজেপি বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো যদি একটি রাজ্যে পৃথক পৃথকভাবে প্রার্থী দেয়, তাহলে ভোট কাটাকুটিতে শেষ পর্যন্ত ফায়দা তুলে নিতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি। তাই পশ্চিমবঙ্গ মডেলকে সামনে রেখে যে সমস্ত রাজ্যে যে সমস্ত বিজেপি বিরোধী দল শক্তিশালী, সেখানে তারা প্রার্থী দিয়ে যাতে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করে, তার পক্ষেই মতামত দিতে দেখা গেল বিশিষ্ট এই নির্বাচনী রননীতিকারকে। আপনাদের সুবিধার্থে খবরের শেষে বিধানসভা ২০২১ উপলক্ষে আমাদের করা সর্বশেষ সমীক্ষার প্রতিটির লিঙ্ক দেওয়া আছে। আপনার মতামত জানান - সূত্রের খবর, এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বৈঠকের পরই মুখ খোলেন প্রশান্ত কিশোর। এদিন তিনি বলেন, “2024 সালের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে। তবে এই বৈঠকের সঙ্গে দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিকল্প শক্তির কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিকল্প শক্তির যে কথা বলা হচ্ছে, তা অর্থহীন। ইতিহাস বলছে, দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিকল্প তৈরি করে বিজেপিকে আটকানোর কৌশল সফল হয়নি।” অর্থ্যাৎ 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী মহাজোট তৈরীর চেষ্টা হলেও, এই বিকল্প শক্তি একাধিক থাকার কারণে লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। তাই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে একক ভাবে লড়াই করার তৃণমূল কংগ্রেস যেভাবে গেরুয়া শিবিরকে পর্যুদস্ত করেছে, সেই একই ফর্মুলায় যদি প্রতিটি বিরোধী রাজনৈতিক দল আগামী লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করতে পারে, তাহলেই সাফল্য আসবে বলে জানিয়ে দিলেন প্রশান্ত কিশোর। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন রাজ্যগুলোতে বিজেপির বিরুদ্ধে যারা শক্তিশালী, তাদের প্রার্থী দেওয়ার কথা ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যের মধ্যে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন তিনি। যার ফলে প্রশান্ত কিশোরের এই মন্তব্য আদতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যেরই নামান্তর বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। একাংশ বলছেন, গত 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে এই কথাই বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন রাজ্যে যেখানে যে দল বেশি শক্তিশালী, সেখানে সেই দলের বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করলে প্রতিটা বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দল সেখানে সাহায্য করবে। যার ফলে বিজেপিকে চাপে ফেলা অনেকটাই সহজ হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনেক রাজ্যের ক্ষেত্রেই তা সম্ভব হয়নি। একাধিক বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো পৃথক ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়ার কারণে ভোট কাটাকুটিতে শেষ হাসি হেসেছে গেরুয়া শিবির। তবে অতীতের সেই ভুল যাতে আর না হয়, তার জন্য এখন থেকে কৌশল গ্রহণ করতে শুরু করলেন প্রশান্ত কিশোর। পশ্চিমবঙ্গ মডেলকে সামনে রেখে ভবিষ্যতে বিরোধীরা যাতে ভারত জয় করতে পারে এবং কেন্দ্রের ক্ষমতা দখল করতে পারে, তার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন তিনি। আর সেই কারণেই শরদ পাওয়ারের মত অভিজ্ঞ নেতার সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের বৈঠকের মধ্যে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে আগামীদিনে বিরোধী মহাজোট নাম হলেও, পৃথক পৃথক রাজ্যে প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে সেই বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এই প্রস্তাবে কতটা রাজি হয়, পশ্চিমবঙ্গ মডেলকে সামনে রেখে 2024 এর লোকসভা নির্বাচনে প্রশান্ত কিশোরের স্ট্র্যাটেজি মত বিরোধীরা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের চাপ বাড়াতে পারে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -