বিজেপিতে যোগ দিতেই তৃণমূলের তরফ থেকে বড় ধাক্কা খেলেন বিপ্লব মিত্র, জেনে নিন উত্তরবঙ্গ জাতীয় রাজ্য June 26, 2019 নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে গত সোমবারই সবুজ জার্সিটাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে গায়ে গেরুয়া জার্সি চড়িয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি বিপ্লব মিত্র। তবে শুধু তিনি নন, তার হাত ধরে রাজ্যের প্রথম দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের 10 জন তৃণমূলের সদস্য যোগ দেন বিজেপিতে। এদিকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তথা গোটা উত্তরবঙ্গের তৃণমূলের প্রথম দিনের সৈনিক বিপ্লব মিত্র বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় উত্তরবঙ্গের তৃণমূলে যে বড়সড় ভাঙ্গন ধরতে চলেছে সেই ব্যাপারে প্রথম থেকেই আশঙ্কায় ছিল শাসক দলের নেতৃত্বরা। আর সেই আশঙ্কাকে পাথেয় করেই এবার বিপ্লব মিত্রের ভাই তথা গঙ্গারামপুর পৌরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্র, সরকারী কমিটিতে থাকা বিপ্লবের অপর ভাই চিরঞ্জীব মিত্র এবং বিপ্লব মিত্র ঘনিষ্ঠ নেতা রতন ঘোষকে দল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ। অনেকে বলছেন, আসলে বিপ্লব মিত্রের মতো সাংগঠনিক নেতা বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৃণমূল ভেঙে পড়েছে। আর তাইতো এখন দলের ভাঙ্গন রুখতে সেই বিপ্লব ঘনিষ্ঠ নেতাদের ডানা ছাটতে শুরু করলেন অর্পিতা ঘোষ। কিন্তু এতসব করেও কি বিপ্লববাবুর গ্রাস থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাকে রক্ষা করতে পারবেন অর্পিতাদেবী! তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সূত্রের খবর, সোমবার বিপ্লব মিত্র বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই মঙ্গলবার বালুরঘাটের সুবর্ণতটে একটি জরুরি পর্যায়ের একটি সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ। যেখানে উপস্থিত ছিলেন বালুরঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক তথা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি শংকর চক্রবর্তী, কুমারগঞ্জের বিধায়ক তোরাফ হোসেন মন্ডল, সত্যেন্দ্রনাথ রায় সহ অন্যান্যরা। আর সেখানেই অর্পিতা ঘোষ বলেন, “আমরা নেত্রীর অনুমতিক্রমে বর্ষীয়ান নেতা বিপ্লব মিত্র, যিনি বিজেপিতে গেছেন, তার ভাই গঙ্গারামপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্র, তার অপরভাই উত্তরবঙ্গ ক্রিয়া পর্ষদের দায়িত্বে থাকা চিরঞ্জীব মিত্র এবং রতন ঘোষকে বহিস্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” এদিকে প্রশান্ত মিত্রের বিরুদ্ধে গঙ্গারামপুর পৌরসভার তৃণমূল কাউন্সিলররা খুব শীঘ্রই অনাস্থা আসতে চলেছে বলেও জানা গেছে। কিন্তু যেখানে জেলা পরিষদের প্রায় 10 জন সদস্য বিজেপিতে চলে গেলেন এবং জেলাপরিষদ হাতছাড়া হল তৃণমূলের, সেখানে খাস গঙ্গারামপুরে বিপ্লব মিত্রের গড়ে থাকা গঙ্গারামপুর পৌরসভার কাউন্সিলররা বিজেপিতে যাবেন না, এই গ্যারান্টি কি করে দিচ্ছেন অর্পিতাদেবী? এদিন এই প্রসঙ্গে অর্পিতা ঘোষ বলেন, “জেলা পরিষদের সদস্যরা বিজেপিতে গেছেন, তাদের অনেকেই দলে ফিরতে চাইছেন। কাজেই জেলাপরিষদ বিজেপির হয়ে গিয়েছে এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই।” কিন্তু এই ব্যাপারে কি বলছেন তৃণমূলের প্রাক্তন হেভিওয়েট নেতা তথা সদ্য বিজেপিতে যোগদানকারী বিপ্লব মিত্র? এদিন এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি সবাইকে টিকিট দিয়ে জিতিয়ে এনেছি। তাই আগে জেলায় ফিরি, তারপর পৌরসভা নিয়েও ভাবব।” রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তলায় তলায় সমস্ত ঘুঁটি সাজিয়েই রেখেছেন বিপ্লব মিত্র। আর দক্ষ সাংগঠনিক এই নেতার ব্যক্তিগত ক্যারিশমার জেরে তৃণমূলের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় যেভাবে উত্থান ঘটেছে, তাতে সেই বিপ্লব মিত্র বিজেপিতে গেলে যে তৃণমূলকে এখানে শূন্য থেকে শুরু করতে হবে, তা আঁচ করতে পেরেই এবার তাঁর ঘনিষ্ঠদের ডানা ছাঁটতে শুরু করলেন অর্পিতা ঘোষ! কিন্তু এতে কি অর্পিতাদেবী এবং তার অনুগামীদের আরও বেশি করে বিপাকে পড়তে হবে না? কি করবেন বিপ্লব মিত্র! জেলায় ফিরে তার রণনীতি কি হবে? তৃণমূলকে ভেঙে দিয়ে দুটি পৌরসভা এবং পঞ্চায়েতগুলি কি গেরুয়া শিবিরের ছাতার তলায় আনতে পারবেন তিনি! এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -