এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ >  জেলা পরিষদ স্তরে বিজেপির ঘুম উড়িয়ে সব “কেড়ে নিতে” ঘুটি সাজানো শুরু তৃণমূলের

 জেলা পরিষদ স্তরে বিজেপির ঘুম উড়িয়ে সব “কেড়ে নিতে” ঘুটি সাজানো শুরু তৃণমূলের


 

গত 19 তারিখ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় এসে গঙ্গারামপুর স্টেডিয়াম থেকে জেলা পরিষদের কাজ নিয়ে রীতিমত বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে জেলার উন্নয়নের কাজ থমকে থাকায় মুখ্যমন্ত্রীর রোষের সম্মুখীন হতে হয় খোদ জেলাশাসককে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কার্যত সেদিনই মুখ্যমন্ত্রীর কথায় স্থির হয়ে গিয়েছিল যে, এবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস ভারতীয় জনতা পার্টির জেলা পরিষদের সভাধিপতি এবং তিনজন কর্মাধ্যক্ষকে কোণঠাসা করতে সচেষ্ট হবেন। আর এবার সেই আশঙ্কাকেই সঠিক প্রমাণিত করে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের তিনজন কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য মালদহের ডিভিশনাল কমিশনের কাছে আবেদন করল 13 সদস্য বিশিষ্ট দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের তৃণমূল দল।

এক্ষেত্রে ডিভিশনাল কমিশনারের পাশাপাশি অনাস্থা বৈঠকের চিঠির প্রতিলিপি ভারতীয় জনতা পার্টির তিনজন জেলা পরিষদ কর্মাধ্যক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। অনাস্থা বৈঠক সম্বন্ধে বলতে গিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি তৃণমূলের ললিতা টিগ্গা বলেন, “বিজেপির 3 কর্মাধক্ষ থাকার কারণে জেলা পরিষদের উন্নয়ন থমকে রয়েছে। আমরা তাদের সরাতে স্থায়ী সমিতিগুলির বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে আসতে মালদহের ডিভিশনাল কমিশনের কাছে চিঠি জমা দিয়েছি। চিঠির উত্তর আসলেই যাবতীয় প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। জেলা পরিষদে আমাদেরই সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই আমরা অনাস্থা নিয়ে আসতে পারি এবং ওরা আস্থা প্রমাণের সভা না ডাকলে আমরা অনাস্থা প্রস্তাব সহজেই পাস করিয়ে নেব।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পাশাপাশি এই পদক্ষেপকে জেলার উন্নয়নের জন্য জরুরি বলেও মন্তব্য করেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি ললিতাদেবী। তবে আইনি দিক থেকে আড়াই বছর আগে জেলা পরিষদে কোনরকম অনাস্থা আনা যায় কিনা, সেই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি কোনো প্রশাসনিক আধিকারিকরা। অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে বলতে গিয়ে জেলা পরিষদের কৃষি ও সেচ কর্মাধক্ষ শঙ্কর সরকার বলেন, “আমার কাছে একটা চিঠি এসেছে। সেখানে আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে আসার জন্য মালদহের ডিভিশনাল কমিশনের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা যতদূর জানি, আড়াই বছর আগে কোনোভাবেই জেলা পরিষদের সভাধিপতি বা সহকারি সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে আসা যায় না।”

এক্ষেত্রে পঞ্চায়েত আইনের কথা উল্লেখ করে শংকরবাবু বলেন, “পঞ্চায়েত আইনে স্থায়ী সমিতির বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে আসার কোনো উল্লেখ নেই।” স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল কংগ্রেস যদি এই অনাস্থা নিয়ে আসে, তাহলে তা সমস্তই ক্ষমতার অপব্যবহার করে। এক্ষেত্রে অবশ্য স্থায়ী সমিতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা যায় কিনা, তা নিয়ে প্রশাসনিক স্তর থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ শংকর সরকার আরও বলেন, “আমরা নিয়মিত বিপ্লব মিত্রের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, এই ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিষয়ে।” রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভা ভোটে বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্র থেকে এই বছর আশানুরূপ ফল করতে পারেনি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে জয়যুক্ত হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর বিজেপির জয়ের পিছনে প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।

পরবর্তীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিপ্লব মিত্রকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় তিনি 10 জন জেলা পরিষদের সদস্যকে নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেন। আর এরপর থেকেই কার্যত জেলা পরিষদের কর্মপরিচালনার ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় জেলা প্রশাসনকে।

জানা গেছে, মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ চিন্তামণি বিহা, কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ শংকর সরকার এবং পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মফিজউদ্দিন মিয়ার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে চিঠি দিয়েছে জেলা পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল কংগ্রেস। তবে এই ধরনের অনাস্থা কি আইনগতভাবে আদৌ সম্ভবপর হবে! পরবর্তীতে পরিস্থিতি কি আদালতের দরজা পর্যন্ত গড়াবে! এখন সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে ওয়াকিবহাল মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!