এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বিজেপি বিরোধিতায় ধর্মঘটের ডাক বামেদের, পাল্টা ধর্মঘটের বিরোধিতায় তৃণমূল!

বিজেপি বিরোধিতায় ধর্মঘটের ডাক বামেদের, পাল্টা ধর্মঘটের বিরোধিতায় তৃণমূল!

 

2011 সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ধর্মঘটের বিপক্ষে মত পোষণ করতে দেখা গেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হলেও, ধর্মঘট করে যে তা আদায় করা যায় না, তা বারেবারে জানিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ধর্মঘটের ডাক দিলেও, তা বানচাল করতে বাংলাকে সচল রাখা নানা পন্থা নিতে দেখা গেছে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারকে।

তবে এবার শ্রমিক সংগঠনগুলো আগামী 8 জানুয়ারি দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। সেক্ষেত্রে সেই সমস্ত শ্রমিক সংগঠনগুলো যে সমস্ত নীতির প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে, সেই নীতিকে মানতা দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু বাংলায় এই ধর্মঘট যে তারা করতে দেবে না, তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছে ঘাসফুল শিবির। ইতিমধ্যেই আগামী 8 তারিখ যাতে সারা বাংলা সচল থাকে, তার জন্য নিজ নিজ আঙ্গিকে এই ধর্মঘটের বিরোধিতা করে চলেছে তৃণমূলের নেতা নেত্রীরা। ফলে বামেদের শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে তৃণমূলের এই দ্বৈত নীতি নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।

অনেকে বলছেন, “তৃণমূল কেন্দ্রের বেপরোয়া বেসরকারিকরণ, বিলগ্নিকরণ ও এনআরসি বিরুদ্ধে আন্দোলন চালাচ্ছে। কিন্তু যখন এই ইস্যুর বিরোধিতা করে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে, তখন তারা কেন এই ধর্মঘটকে সমর্থন করছেন না! তাহলে তাদের সাথে কি বিজেপির তলায় তলায় যোগসাজশ রয়েছে!” তবে এক্ষেত্রে অবশ্য অন্য যুক্তি দিচ্ছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

তাদের দাবি, বিজেপি এই সমস্ত কিছু করে সাধারণ মানুষের পেটের ভাত কেড়ে নিতে চাইছে। ফলে ধর্মঘট করে সেই সাধারণ মানুষের রুটি-রুজি নষ্ট হবে। তাই শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন করা যায়। কিন্তু বিজেপির এই ধ্বংসাত্মক নীতির বিরুদ্ধে ধর্মঘট করেও আর একটা ধ্বংস করা অনুচিত। তাই তারা এই ধর্মঘটের বিরোধিতা করছে। তবে যে যাই বলুন না কেন, ইতিমধ্যেই এই বিষয় নিয়ে তৃণমূল এবং বামেদের মধ্যে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তরজা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

এদিন এই প্রসঙ্গে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “একদিকে এনআরসি ও সিএএ নিয়ে কেন্দ্রের সমালোচনা, অন্যদিকে মোদি সরকারের শ্রম এবং আর্থিক নীতির প্রতি পরোক্ষ সমর্থন দিচ্ছে তৃণমূল। সঙ্ঘ পরিবার আর তৃণমূল ছাড়া দেশের সমস্ত অবিজেপি শক্তি এই ধর্মঘটের পক্ষে সওয়াল করছে।” এদিকে তারা এই ধর্মঘট কোনভাবেই বরদাস্ত করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

এদিন এই প্রসঙ্গে শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী তথা সাংসদ দোলা সেন বলেন, “সারা বাংলার সমস্ত কারখানা খোলা থাকবে। অফিস কাছারিতে কর্মীরা অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক ভাবে কাজ করবেন। বন্ধ বা ধর্মঘট করে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের মোকাবিলা সম্ভব নয়। সেই কারণে ধর্মঘটে আমাদের কোনো আস্থা নেই। মুখ্যমন্ত্রীকে নষ্টহীন উন্নয়নমুখী বাংলা উপহার দিয়েছে রাজ্যের শ্রমজীবী মানুষ। কোনোমতেই তা ব্যাহত হতে দেওয়া যাবে না।”

একইভাবে এই ব্যাপারে সেই ধর্মঘটের বিরোধিতা করে তার মত পোষণ করেছেন তৃণমূল মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, “নীতিগতভাবে তৃণমূল কোনোরকম কর্মনাশা বন্ধের বিরোধী। দলনেত্রী স্পষ্টভাষায় তা রাজ্যবাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন। যারা রাজ্যটাকে ধ্বংস করে কোটি কোটি টাকা ঋণের বোঝা চাপিয়ে চলে গিয়েছে, তারাই ধর্মঘটের সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে চাইছে। বাংলার উন্নয়নকে ব্যাহত করাই তাদের লক্ষ্য। কিন্তু আমরা এই বন্ধ হতে দেব না।”

তোর পার্থবাবু কর্মনাশা বন্ধের বিরুদ্ধে যে কথাই বলুন না কেন, বামেরা কিন্তু তৃণমূলের এই দ্বৈতনীতি নিয়ে তাদের সঙ্গে বিজেপির সমঝোতা রয়েছে একথা তুলে ধরতে ব্যস্ত। ফলে গোটা পরিস্থিতিতে আগামী 8 জানুয়ারি শ্রমিক সংগঠনগুলোর ডাকা বনধ বাংলায় সেভাবে পালন হয় কিনা! সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!