এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > উত্তরবঙ্গে দিদির পাশাপাশি দাপাল গেরুয়া শিবিরের ফ্লেক্সও! শক্তিবৃদ্ধির স্পষ্ট ইঙ্গিত বিজেপির

উত্তরবঙ্গে দিদির পাশাপাশি দাপাল গেরুয়া শিবিরের ফ্লেক্সও! শক্তিবৃদ্ধির স্পষ্ট ইঙ্গিত বিজেপির

বর্তমান রাজনীতিতে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে যুযুধান দুই পক্ষ। একদিকে কেন্দ্রের শাসন ক্ষমতায় আসীন ভারতীয় জনতা পার্টি, অন্যদিকে পশ্চিমবাংলার মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। আর গোটা রাজ্যে যে এই রকম রাজনৈতিক বাতাবরণ তাতে করে এই দুই দলের নেতা-নেত্রীদের সামান্যতম ঘনিষ্ঠতা বড়সড় খবর হয়ে দাঁড়ায় সাংবাদিক মহলের কাছে। কিন্তু কোনো একটি ফ্লেক্স বা ব্যানারে, শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং রাজ্যের বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা নেত্রীদের ছবি পাশাপাশি থাকবে এযেন ভাবাই যায় না। কিন্তু এরকম অসম্ভব ঘটনা বাস্তবের মাটিতে সম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে জলপাইগুড়ি জেলায়।

সেখানকার পান্ডাপাড়া সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যানার বানিয়ে তাতে ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিনন্দন জ্ঞাপন ছাপানো হয়‌। পাশাপাশি জলপাইগুড়ি পৌরসভার চেয়ারম্যান মোহন বোসের অভিনন্দন বার্তাও ফ্লেক্সে স্থান পায়‌। স্বাভাবিকভাবেই কোনো একটি পুজো মন্ডপে শাসক থেকে শুরু করে বিরোধী নেতা, নেত্রী সকলের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের বার্তা প্রকাশ পায় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।

পাশাপাশি জনমানসে মৃদু গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, যখন সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিরোধী রাজনীতি করা এমএলএ, এমপি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পর্যন্ত ডাক পাননা, সেরকম একটি সময় পশ্চিমবাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে জলপাইগুড়ির উল্লেখিত ওই ক্লাব শাসক থেকে শুরু করে বিরোধী সকলের অভিনন্দন জ্ঞাপন ব্যানারে রেখে কি নতুন রাজনৈতিক সৌজন্যতা তৈরি করলেন! নাকি আবার অন্য দিক থেকে সকলকে খুশি রাখার বা ক্লাব সদস্যদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক মতের লোক থাকায় প্রত্যেকের মন রক্ষা করতেই এই পদক্ষেপ! তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। তবে গোটা ব্যাপারটাকে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ব্যাখ্যা দিয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

ক্লাবের তরফ থেকে সম্পাদক দেবরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আমাদের ক্লাবের পূজো সার্বজনীন পুজো। পুজো উদ্বোধনকে ঘিরে অনেক জায়গায় রাজনীতি দেখা গিয়েছে। তাই আমরা রাজনৈতিক সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছি। আমরা দেশের প্রধান, রাজ্যের প্রধান, শহরের প্রধানের শুভেচ্ছা বার্তা সম্মিলিতভাবে ফ্লেক্সে টাঙ্গিয়েছি। আবার এই বিষয়ে বলতে গিয়ে জলপাইগুড়ি পৌরসভার চেয়ারম্যান তথা বর্ষিয়ান তৃণমূল নেতা মোহন বসু বলেন, “এইভাবে ফেক্স টাঙ্গানোয় আমি কোনরকম রাজনীতি খুঁজে পাইনি। দীর্ঘদিন ধরেই ওই পূজা কমিটির সঙ্গে আমি জড়িত। ওরা শুভেচ্ছাবার্তা চেয়েছিল, তাই দিয়েছি। সবার শুভেচ্ছাবার্তা গিয়েছে। পুজো সবার জন্য। এ নিয়ে রাজনীতি করা যায় না।”

অপরদিকে সমগ্র বিষয়ে জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বাপি গোস্বামী জানান, “পুজো মানে উৎসব, পুজো মানে আনন্দ। পুজোয় রাজনীতি হয় না। সবাই মিলে আনন্দ করছি, এটাই আমাদের শিষ্টাচার।” তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে পদাধিকারীরা যাই বলুন না কেন, বাস্তব কিন্তু অন্য কথা বলছে। বিশেষ সূত্র মারফত পাওয়া খবর অনুযায়ী, উদ্যোক্তাদের অধিকাংশ সদস্যরাই ভারতীয় জনতা পার্টির সমর্থক বলে জানা যাচ্ছে। জলপাইগুড়ি জেলাতে বড় বাজেটের পূজা হিসেবে পরিচিত পান্ডাপাড়া সার্বজনীন দুর্গোৎসবকে কোনভাবেই হাতছাড়া করতে চায়নি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বরা এবং মনে মৃদু আশঙ্কাও ছিল, কোনোভাবেই এই ক্লাব যেন ভারতীয় জনতা পার্টির দখলে না চলে যায় সেই জন্য তারা সচেষ্ট ছিল দীর্ঘদিন ধরে বলে জানা যাচ্ছে। তাই সেখানে প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী দুইজনের শুভেচ্ছা বার্তায় স্থান পেয়েছেন।

অপরদিকে কিছুটা অভিযোগের সুরে ওই ক্লাবের বিজেপি সমর্থকদেরকে বলতে শোনা যায়, আমরা সৌজন্যের আবহাওয়াকে বজায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছাবার্তা পুজো মণ্ডপে এটা দিয়েছি। কিন্তু তৃণমূল সমর্থকদের আধিক্য যুক্ত অন্য কোনো ক্লাবে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা টাঙ্গাতে দেখা যায়নি। যদিও এই বিষয়ে কটাক্ষ করতে ছেড়ে দেননি শাসকদলের অনুগামীরা। তাদের কথা, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের কাছেও দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দেশের প্রধানমন্ত্রী যথেষ্ট আদরণীয়।

কিন্তু বিগত দিনে কোনদিনই দুর্গাপূজার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা স্থান পায়নি। এবার আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই ধরনের ব্যানার টাঙানো হচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী দিনে বাংলার উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা এমনকি উপস্থিতিও আরও বেশি বেশি করে সামনে আসবে। কারণ ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে টার্গেট 2021। তৃণমূল কংগ্রেসের কাছেও লড়াই সেই 2021 কে সামনে রেখে। ফলে দুই পক্ষ কিরকম জড়িয়ে পড়ে, সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে ওয়াকিবহাল মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!