খড়্গপুর উপনির্বাচন: কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সামনে রেখে তীব্র দ্বন্দ্বের আবহ তৃণমূল-বিজেপির মেদিনীপুর রাজ্য October 27, 2019 দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিধানসভা নির্বাচন ও উপনির্বাচন শুরু হয়ে গেছে। এবার উপনির্বাচন হবার মুখে পশ্চিমবঙ্গের খড়্গপুর সহ ৩ বিধানসভা কেন্দ্রে। লোকসভা ভোটে জয়ের পর এবার বিজেপির লক্ষ্য, সামনের নির্বাচনগুলি জেতার। পশ্চিমবঙ্গে পরপর এখন – বিধানসভা উপনির্বাচন, পুরসভা নির্বাচন ও সর্বোপরিবিধানসভা নির্বাচন। প্রসঙ্গত খড়্গপুর কেন্দ্রের বিধায়ক দিলীপ ঘোষ সংসদ হয়ে যান। আর সেই পদ খালি হওয়াতেই উপনির্বাচনের ব্যবস্থা। খড়্গপুর আদতে তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা শুভেন্দু অধিকারীর অন্যতম খাসতালুক। অন্যদিকে, এইমুহূর্তে বঙ্গ-বিজেপির অন্যতম পোস্টার-বয় দিলীপ ঘোষ এখান থেকেই বিধায়ক ও সাংসদ হয়েছেন। আর তাই, এই উপনির্বাচন কার্যত দুই দলের প্রেস্টিজ ফাইট। কেউ কাউকেই এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে রাজি নয়! আর এই পরিস্থিতিতে এবার উপনির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সামনে রেখে, ভোট করানোর নিয়ে তীব্র দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে – দুই মূল প্রতিপক্ষ বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে। খড়্গপুরে উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা হওয়ার পর বিজেপি দাবি তুলল এবার, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে উপনির্বাচন করাতে হবে। আর এই দাবির কথা সামনে আসতেই তৃণমূল বিজেপির মধ্যে সংঘাত শুরু হয়েছে। বিজেপি দাবি জানিয়েছে, সমস্ত বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখতে হবে। অন্যদিকে এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল কটাক্ষ করে বলেছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী শুধু না, আন্তর্জাতিক বাহিনী নিয়ে আসার দাবি জানাক বিজেপি! আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - বিজেপির আশঙ্কা, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া যদি উপনির্বাচন করা হয়, তাহলে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল দুষ্কৃতীর সাহায্যে সমস্ত ভোট লুঠ করবে। এই প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, “তৃণমূল ফের চাপ দিয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে জেতার চেষ্টা করবে, আমরা প্রস্তুত। কেন্দ্রীয় বাহিনী যাতে এখানে নিয়োগ হয় তার জন্য নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছি।” অন্যদিকে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্যকে কটাক্ষ করে জানান, “আন্তর্জাতিক বাহিনী এনে নির্বাচন হলেও খড়্গপুরে আমরা জিতব।” প্রসঙ্গত, উপ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ দিন এক সর্বদলীয় বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে আদর্শ আচরণবিধি সম্বন্ধে রাজনৈতিক দলগুলিকে অবহিত করা হয়েছে। উপ নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি আগামী বুধবার 30 অক্টোবর জারি হবে। মনোনয়ন চলবে 6 নভেম্বর পর্যন্ত। এ ব্যাপারে মেদিনীপুরের জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচন আধিকারিক রশ্মি কমল জানিয়েছেন, “এ ব্যাপারে কিছু সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। সব দিক খতিয়ে দেখা হবে। দেখে জেলা থেকে যে পদক্ষেপ করার করা হবে।” অন্যদিকে, নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়ে জেলা পুলিশ সুপার দিনেশ কুমার জানিয়েছেন, “খড়্গপুরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিকই রয়েছে। যা পদক্ষেপ করার, করা হচ্ছে।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, খড়্গপুরের উপনির্বাচন কার্যত তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপির দিলীপ ঘোষের প্রেস্টিজ ফাইট। ফলে, উপনির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসবে, ততই দুপক্ষ একে অপরকে চাপে ফেলার কৌশল নেবে। আর সেই চাপের খেলা উপনির্বাচনে কেন্দ্রিয়বাহিনী দেওয়া বা না দেওয়া নিয়ে এখন থেকেই শুরু হয়ে গেল। এখন দেখার, এই চাপ কাটিয়ে বিজেপি না তৃণমূল – শেষপর্যন্ত বাজিমাত করে কোন পক্ষ। নাকি, তৃণমূল-বিজেপির লড়াইয়ের আবহে পিছন থেকে জয় ছিনিয়ে নেবে কংগ্রেস-বামফ্রন্ট জোট প্রার্থী? এইসবের দিকেই এখন সাগ্রহে তাকিয়ে খড়্গপুরবাসীর সঙ্গে কার্যত গোটা বাংলা। আপনার মতামত জানান -