এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ >   বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরতেই বিভেদ গায়েব, শুরু “উন্নয়নের জোয়ার”! উঠছে একাধিক প্রশ্ন

  বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরতেই বিভেদ গায়েব, শুরু “উন্নয়নের জোয়ার”! উঠছে একাধিক প্রশ্ন

 

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ এবং সভাধিপতি লিপিকা রায় নিজের কাজ ঠিকঠাক করছেন না বলে সম্প্রতি গঙ্গারামপুরে প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে উন্নয়নের কাজ ত্বরান্বিত করতে অন্যান্য কর্মাধ্যক্ষ এবং জেলা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক নিখিল নির্মলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।

শুধু তাই নয়, জেলা পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা যেহেতু তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে রয়েছে, তা সত্ত্বেও সভাধিপতির না থাকায় কেন কাজ হচ্ছে না! এই নিয়ে জেলাশাসককে রীতিমতো ভর্ৎসনা র শিকার হতে হয় মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু রাজনীতি এবং ক্রিকেট খেলায় শেষ পর্যন্ত কিছু বলা যায় না।

মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকের কয়েক মাস কাটতে না কাটতেই, গত রবিবার তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে এসেছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি লিপিকা রায়। আর সভাধিপতি ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ দখল করতে সক্ষম হয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তাই উন্নয়নের কাজ নিজেদের মত করে করতে আর কোনোরকম বাধা থাকল না শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

এদিন ফিরে আসার পরপরই গতকাল সভাধিপতিকে সঙ্গে নিয়ে জেলার প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিত্ব এবং সমাহর্তার সঙ্গে উন্নয়নমূলক বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের ভাইস চেয়ারম্যান অর্পিতা ঘোষ। বৈঠকের পরে আটকে থাকা জেলা পরিষদের কাজকর্ম নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

জেলাশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎকার হয় সভাধিপতির। আগামী দিনে সভাধিপতিকে সঙ্গে নিয়ে কাজকর্ম করা হবে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জেলাশাসক নিখিল নির্মল। তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই সভাধিপতির নিরাপত্তারক্ষী ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। আবার প্রশাসনিক স্তরে বৈঠক করে এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান অর্পিতা ঘোষ জানিয়েছেন, সবাই যেন আবার আগের মতো একসঙ্গে কাজ করে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পাশাপাশি তিনি বলেন, “জেলা পরিষদের সভাধিপতির সঙ্গে একাধিক বৈঠক করা হয়েছে। সেখানে জেলা পরিষদের থমকে থাকা কাজগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। আগামীতে জেলা পরিষদের উন্নয়নের কাজ করার আর কোনো বাধা থাকল না। আশা করছি, জেলার উন্নয়নে সভাধিপতি দ্রুততার সঙ্গে কাজ করবেন।” এদিকে এদিনের বৈঠকের পর তৃণমূলে ফিরে আসা জেলা পরিষদের সভাধিপতি লিপিকা রায় বলেন, “বেশ ভালো লাগছে। বিজেপিতে থাকার সময় নিজেকে খুব একা লাগত। এখন আবার দলের লোকজনেদের কাছে পেলাম। আমাদের দলের সদস্য ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। তারা আমাকে সব দিক থেকে সাহায্য করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। জটিলতার কারণে বেশ কিছু কাজ থমকে রয়েছে। সেগুলো যাতে দ্রুত চালু করা হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হবে।”

তবে রাজনৈতিক মহলের মধ্যে কিন্তু প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে, যেমন তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে একাধিকবার বলা হয়, ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করলেই রক্ষা পাওয়া যায়, তৃণমূল কংগ্রেসে থাকাকালীন রাজ্য সরকারের নিরাপত্তারক্ষী পাওয়া যায়। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস থেকে অন্য দলে চলে গেলে নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। আবার তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসলেই নিরাপত্তারক্ষী ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কাজেই দল এবং সরকারের মধ্যে যে কোনো রকম তফাৎ থাকছে না, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে রাজনৈতিক মহলের কাছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এছাড়াও যেই জেলা পরিষদের সভাধিপতির বিরুদ্ধে একাধিক অসহযোগ থেকে শুরু করে উন্নয়নের কাজে বাধা দেওয়ার মত অভিযোগ করা হচ্ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে, সেই জেলা সভাধিপতি দলে ফিরে আসতেই সব ঠিকঠাক হয়ে গেল। ভারতীয় জনতা পার্টিতে থাকাকালীন একাধিকবার লিপিকাদেবীর তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, জেলাশাসক তার সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করছে না। এমনকি জেলাশাসক সভাধিপতির সঙ্গে দেখা করছে না বলেও অভিযোগ করেছিলেন লিপিকাদেবী।

কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসার পরেই জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে সৌজন্য সাক্ষাতকার করে সব রকম অভিযোগ দূরীভূত হল। তবে বিরোধীদের তরফ থেকে কিন্তু অভিযোগ করা হচ্ছে, আদতে সরকার এবং শাসক দলের মধ্যে কোনোরকম তফাত নেই।

সভাধিপতি তৃণমূল কংগ্রেসের ফিরে আসার পরে এদিন জেলা পরিষদে দলীয় কর্মাধ্যক্ষ এবং সদস্যদেরকে নিয়ে বৈঠক করেন সভাধিপতি। আগামীদিনে জেলার উন্নয়নের ক্ষেত্রে সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করা হবে বলে বার্তা দেওয়া হয়েছে। এখন জেলা পরিষদের বন্ধ থাকা কাজগুলি ত্বরান্বিত হয়ে জনগণ উন্নয়নের কি কি সুযোগ সুবিধা লাভ করে! সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!