এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > যে কোনও মুহুর্তে কালীঘাটেও সিবিআই হানা! জল্পনা ক্রমশ বাড়াচ্ছেন গেরুয়া নেতারা!

যে কোনও মুহুর্তে কালীঘাটেও সিবিআই হানা! জল্পনা ক্রমশ বাড়াচ্ছেন গেরুয়া নেতারা!

দেশের বিভিন্ন এলাকায় যখন বিরোধী নেতাদের উপরে থাকা আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলো, তখন স্বাভাবিক কারণেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের কেন্দ্রে শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টির উপরে ক্ষোভ উগরে দেওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র সরকারের শাশ্বত বিরোধিতায় যেভাবে পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হন, সেরকম সরব হতে খুব কম নেতা নেত্রীকেই দেখা যায়।

আর এটাই কারণ, যার জন্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে রাজ্য নেতৃত্ব কেউই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে বা কটাক্ষ করতে ছেড়ে দেন না। রাজ্যে ওঠা যেকোনো বিষয়ের উপর সমালোচনার নজর থাকে ভারতীয় জনতা পার্টির। সম্প্রতি ভারতবর্ষের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কথা কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরমকে পাঁচিল টপকে গ্রেপ্তার করেছে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন টিম। তার পরেও কবিতা লিখে চিদাম্বরমের গ্রেপ্তারের বিরোধিতা করেছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এইভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরোধিতাকে কটাক্ষ করতে ছেড়ে দেননি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু তাঁদের গলায় বারবার স্বাভাবিক স্বরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর সিবিআই তদন্তের কথা প্রকাশ পায়। সিবিআই যেমনটা চিদাম্বরমকে গ্রেপ্তার করেছে, তেমনি ‘কালীঘাটে লোক দেখানো ইঁটের বাড়িতে’ গিয়ে এবং ‘রাজপ্রাসাদ থেকে ভাইপোকে’ গ্রেপ্তার করবে। বৃহস্পতিবার মালিয়ারা রাজবাড়ী মাঠের সভায় এই ভাবেই হুঁশিয়ারি দেন বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়।

তাঁর কথায়, মোদীজি চাওয়ালা থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আর দিদিমণি মুখ্যমন্ত্রী থেকে চাওয়ালি হবে। এদিনের এই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু পুলিশকর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যাঁরা আমাদের কর্মীদের মিথ্যে মামলা দিচ্ছেন, তাঁদের নাম আমরা লিখে রাখছি। আমরা ক্ষমতায় এলে তাঁদের কিভাবে কালিম্পং থেকে ডায়মন্ড হারবার সরাতে হয়, টের পাবে।”

পাশাপাশি তিনি বলেন, যে পুলিশ চোখ রাঙাচ্ছে তাদের চোখ উপড়ে নেব। যারা গলাবাজি করছে তাদের গলা কেটে নেব। তবে আমরা নই, সাধারণ মানুষ পুলিশের আচরণে বীতশ্রদ্ধ হয়েই এই কাজ করবে। তাই এখনও সময় আছে পুলিশকর্মীরা নিজেদের শুধরে নিন। এদিনের সভায় বিজেপি রাজ্য নেতা ছাড়াও অভিনেত্রী রিমঝিম মিত্র সহ জেলা নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বারবার রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের মুখ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে সিবিআই হানার যে কথা উচ্চারিত হচ্ছে, তা উসকে দিচ্ছে নানান প্রশ্নকে।

তবে কি অন্যান্য রাজনৈতিক বিরোধীদলগুলোর বিভিন্ন নেতা-নেত্রীকে যেভাবে তাদের আর্থিক কেলেঙ্কারির জেরে বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, তেমনই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় উপরেও আঘাত হানতে পারে সিবিআই। কিন্তু এরকম যেকোনো পদক্ষেপে যে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব এরকম বলাবলি করলেও এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে সেরকম কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কড়া কোনো প্রমাণ ছাড়া কোনো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উপরে গ্রেপ্তারের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু বাংলাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র – রাজ্যের যে সংঘাত উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। বিশেষ করে বিজেপি নেতারা যেভাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ‘টার্গেট’ করে একের পর এক হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, তাতে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, সেদিকেই উদগ্রীব হয়ে তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!