এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > বাংলায় পদ্ম ফোটাতে মমতা ব্যানার্জির ‘গড়’ থেকেই লড়াইটা শুরু করার ডাক গেরুয়া শিবিরের

বাংলায় পদ্ম ফোটাতে মমতা ব্যানার্জির ‘গড়’ থেকেই লড়াইটা শুরু করার ডাক গেরুয়া শিবিরের

বাংলার কঠিন জমিতে এতদিন সেভাবে পদ্মের বিকাশ ঘটে নি, যা মাঝেমাঝে দু-একটা সাফল্য এসেছে তা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের জোট করে বা বিমল গুরুংয়ের বদান্যতায়। কিন্তু চিত্রটা বদলাতে শুরু করে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকেই। সেখানে সবাইকে অবাক করে দিয়ে আসানসোল থেকে বাবুল সুপ্রিয় তো জেতেনই সঙ্গে বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক পৌঁছে যায় অভাবনীয়ভাবে ১৭%, তারপরে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যজুড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝড়ের মাঝে ভোট অনেকটা কমলেও রেকর্ড-সংখ্যক তিন-তিনজন বিধায়ক পায় গেরুয়া শিবির। আর তারপরের বিভিন্ন উপনির্বাচনে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলতে থাকে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হওয়ার দিকে ক্রমশ এগোচ্ছে পদ্ম-শিবির। সদ্য হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের নাম যে বিজেপি – এনিয়ে আর কোনো দ্বিমত নয়।

আর বঙ্গ-বিজেপির এহেন পারফর্ম্যান্সে অসম্ভব খুশি বিজেপির কেন্দ্রীয়-নেতৃত্ত্ব। বঙ্গের রুক্ষ জমিতে পদ্ম ফোটার সব লক্ষণ বিদ্যমান এই কথা মেনে নিচ্ছেন স্বয়ং সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। আর তাই বাংলায় বিজেপির সেই অগ্রগতি ধরে রেখে ২০১৯-এ বাংলাকে বার্তা দিতে চায় গেরুয়া শিবির যে ২০২১ সালে বাংলায় পরিবর্তনের পরিবর্তন হতে চলেছে। আর সেই কঠিন লড়াইটা শুরু করার ভাবনা চলছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘গড়’ হিসাবে খ্যাত দক্ষিণ-কলকাতা কেন্দ্র থেকেই। ১৯৮৪ সালে যাদবপুর কেন্দ্রে সিপিআইএমের হেভিওয়েট প্রার্থী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে ‘ইন্দ্রপতন’ ঘটান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরেই তিনি চলে আসেন অধুনা দক্ষিণ-কলকাতা কেন্দ্রে। সেখানে কংগ্রেসের টিকিটেই হোক বা তৃণমূল কংগ্রেসের – ক্রমশ ‘মিথ’ হয়ে ওঠেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এমনকি ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাম-ঝড়ের সামনে দাঁড়িয়ে এই একটিমাত্র আসনে জয়লাভ করে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১১ সালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীত্ত্বের ভার নেওয়ার পর সেই আসনের দায়িত্ত্ব তিনি দেন নিজের সবথেকে আস্থাভাজন সুব্রত বক্সীর উপর। সুব্রত বক্সীকেও নিরাশ করেননি এতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিতিয়ে আসা এই কেন্দ্রের ভোটাররা, পরপর দুবার তাঁকে সাংসদ করে দিল্লি পাঠান দক্ষিণ-কোলকাতাবাসী।

আর তাই, রাজ্যবাসী তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘বার্তা’ দিতে এই আসনেই এবার জিতে দেখতে চান অমিত শাহরা। লোকসভার আগে বাংলায় দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতির হালহকিকত খতিয়ে দেখতে আগামী ২৭ এবং ২৮ জুন পশ্চিমবঙ্গে আসছেন তিনি। আর তাঁর সফরসূচিতে বিশেষ গুরুত্ত্ব পাচ্ছে এই লোকসভা কেন্দ্র। সূত্রের খবর, আগামী ২৭ তারিখ সুনির্দিষ্টভাবে কালীঘাট এলাকায় দলের বুথ কর্মীদের সঙ্গে জরুরি সাংগঠনিক বৈঠক সারতে চাইছেন বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। এমনিতেই তিনি নির্দেশ দিয়েছেন লোকসভা নির্বাচনের আগেই বাংলায় ১০০% বুথ-কমিটি তৈরী করতে হবে, যাতে আগামীদিনের যে কোনো নির্বাচনী লড়াইয়ে প্রতি বুথে অন্তত ১০ জন করে নেতা-কর্মী থাকেন। রাজ্য নেতাদের দাবি বাংলার অন্যান্য লোকসভা কেন্দ্রের মত দক্ষিণ-কলকাতা কেন্দ্রেও প্রায় ৮০% বুথ-কমিটির কাজ শেষ, কিন্তু তা শুধু রাজ্য নেতাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে নয়, একেবারে সরাসরি তৃণমূল-স্তরের কর্মীদের সঙ্গে নিজে কথা বলে বুঝে নিতে চাইছেন অমিত শাহ। আর তাই সবমিলিয়ে গেরুয়া শিবিরের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘গড়’ দখলের রণনীতি নিয়ে যথেষ্ট কৌতূহল তৈরী হয়েছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!