প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আনা কৃষক আইনের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব হতে দেখা গেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রায় প্রতিটি জনসভায় 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলার বর্তমান বিরোধী দল বিজেপির বিরুদ্ধে বেশি করে সরব হতে দেখা গেছে তৃণমূল নেত্রীকে। আর বিজেপির অস্বস্তি আরও বেশি করে বাড়িয়ে দিতে ফের গোটা দেশজুড়ে নিজের বিজেপি বিরোধী ভাবমূর্তি সামনে আনার চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার টুইট করে দেশজুড়ে সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে আন্দোলনে নামার ডাক দিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

যার ফলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতিতে। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজেপি বিরোধিতায় সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে এক ছাতার তলায় আনার উদ্যোগ নিতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা সফলতা পায়নি। তবে সামনে যখন পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন, তখন তার আগে আবার কৃষক আইনকে হাতিয়ার করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এইভাবে ময়দানে নামাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই দেখছে রাজনৈতিক মহল।

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার এই ব্যাপারে একটি টুইট করেন তৃণমূল নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। যেখানে তিনি লেখেন, “কৃষকদের জীবন-জীবিকা নিয়ে মারাত্মক উদ্বেগে রয়েছি। ভারত সরকারের উচিত নতুন কৃষি বিল প্রত্যাহার করে নেওয়া। এই মুহূর্তে বিল প্রত্যাহার না করা হলে আমরা রাজ্য এবং দেশজুড়ে আন্দোলনে নামব। আমরা প্রথম থেকেই এই কৃষক বিরোধী বিলের বিরোধিতা করে আসছি।” অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন, বিজেপিকে চাপে রাখতে এই কৃষক আইনকে হাতিয়ার করে তার দল আগামী দিনে ময়দানে নামতে চলেছে।

পাশাপাশি এই ব্যাপারে সকলকে বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার জন্যেও আহ্বান জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। বস্তুত, ইতিমধ্যেই বৃহস্পতিবার সকালে এই কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং। যেখানে বৈঠকের পর তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে। কারণ আন্দোলনের ফলে আমার রাজ্যে অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ছে। দেশের নিরাপত্তায় প্রভাব পড়ছে।”

এদিকে নতুন এই কৃষি আইনকে “কালাকানুন” বলে টুইট করেছেন কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী। অর্থাৎ বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে এই কৃষক আইনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে প্রতিমুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকারকে চাপে রাখা হচ্ছে।আর এমত পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ধরনের টুইট নতুন করে গুঞ্জন সৃষ্টি করল রাজ্য রাজনীতি এবং জাতীয় রাজনীতির অন্দরমহলে। অনেকে বলছেন, সামনেই 2021 এর বিধানসভা নির্বাচন।

ইতিমধ্যেই বিজেপির পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ দখল করার জন্য নানা ব্লু প্রিন্ট তৈরি করা হচ্ছে। যার ফলে চাপে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপিকে পাল্টা চাপে রাখতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষকদের স্বার্থের কথা তুলে ধরে এই আইন বাতিলের দাবি জানাতে শুরু করলেন। অর্থাৎ নিজের দলকে এই আইনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামিয়ে তিনি গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করার কৌশল বাড়িয়ে দিলেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।