প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একুশের বিধানসভা নির্বাচন যতই কাছে এগিয়ে আসছে, ততই রাজ্যের দুই বিরোধী দল তৃণমূল এবং বিজেপি পরস্পরের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে। এ রাজ্যে একুশের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যেই জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। আর সেদিকে নজর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের দামামা ইতিমধ্যেই বাজিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেদিকে নজর দিয়েই বাংলা দখলের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রাজ্য বিজেপি। রাজ্যের উপরে পুরোপুরি ছেড়ে না দিয়ে বাংলাকে পাঁচটি জোনে ভাগ করে ইতিমধ্যেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে 5 কেন্দ্রীয় নেতাকে।

অন্যদিকে রাজ্যে কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সাথে বাংলার দায়িত্ব পেয়েছেন বিজেপির আইটি সেল এর প্রধান অমিত মালব্য। বাংলায় দায়িত্ব পেয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণ চালাচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি মমতা সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্য বিজেপির সহকারি পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য সরব হয়েছেন রাজ্যে বিনিয়োগের প্রস্তাবটি নিয়ে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মিথ্যাচারের অভিযোগ করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত কিছুদিন আগে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরও রাজ্যের বিনিয়োগ সম্মেলন এবং বিনিয়োগের পরিমাণ নিয়ে সরব হয়েছিলেন। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের একটি বিজ্ঞাপনের অংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরে অমিত মালব্য অভিযোগ করেছেন 2019 এর ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববাংলা বাণিজ্য সম্মেলন হয়।

এরপরে রাজ্য সরকার দাবি করেছিল এই রাজ্যে 2,84,288 কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেই বিনিয়োগের কোনরকম চিহ্ন দেখা যায়নি। পাশাপাশি 2020-21 সালের বাংলায় মোট বাজেটের ব্যয় হয়েছে 2,55,677 কোটি টাকারও কম। এ প্রসঙ্গে অমিত মালব্য তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে অভিযোগ করেন, তৃণমূল নেত্রী এরাজ্যে আইটি হাবের কথা উল্লেখ করেছিলেন। সেই অনুযায়ী বিজ্ঞাপনও দিয়েছিলেন। কিন্তু সে ব্যাপারে বিন্দুমাত্র কোনরকম পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি রাজ্য সরকার। আর এই কথা নিয়ে অমিত মালব্য দাবি করেছেন, বাংলার উচ্চাভিলাষী যুবকরা যখন রাজ্য সরকারের পরিবর্তনের দাবি করছেন তাতে অবাক হবার কিছুই নেই।

একই সঙ্গে তিনি আরও একটি টুইট করেছেন এ দিন সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে তিনি অভিযোগ করেছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের শহরে ফিরিয়ে আনার জন্য ভাড়ার আবাসন প্রকল্প চালু করেছেন কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু চার মাস পরেও বিরোধী শাসিত পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি এবং ঝাড়খন্ড সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে সাড়া দেয়নি। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সাহায্য নিতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে অস্বীকার করেন, তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন এদিন রাজ্য বিজেপির সহকারি পর্যবেক্ষক। অন্যদিকে বিনিয়োগ নিয়ে কিছুদিন আগেই সরব হয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।

বিশ্ববাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে কত টাকা বিনিয়োগ হয়েছে, কি কি চুক্তি হয়েছে সে ব্যাপারে বিশদে জানতে তিনি রাজ্যের অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। তবে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, সেক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রীর পক্ষ থেকে কোনরকম উত্তর আসেনি। সম্প্রতি কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে আক্রমণ করতে গিয়ে কুনাল ঘোষ সারদা কেলেঙ্কারির কথা তুলে ধরেন। আর তারপরেই পাল্টা মুখ খোলেন অমিত মালব্য। কুণাল ঘোষকে তিনি তৃণমূলের কলঙ্কিত মুখপাত্র বলে অভিহিত করেন।

2014 সালের সেপ্টেম্বরে কুনাল ঘোষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে কি বলেছিলেন, সেই বক্তব্যের ভিডিও টুইট করে পোস্ট করেছেন অমিত মালব্য। প্রসঙ্গত 2014 সালে কুণাল ঘোষ সর্বসমক্ষে সারদা কেলেঙ্কারিতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জড়িত থাকার ব্যাপারে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। যদিও অমিত মালব্যের পোস্ট করা ভিডিওটি সম্পর্কে কোনো সত্যতা যাচাই করে উঠতে পারেনি প্রিয় বন্ধু মিডিয়া। সব মিলিয়ে রাজ্য তৃণমূল শিবিরকে রীতিমতো কোণঠাসা করতে উদ্যত হয়েছেন বিজেপির আইটি সেল এর প্রধান অমিত মালব্য।

প্রসঙ্গত, বিজেপির আইটি সেল অত্যন্ত শক্তিশালী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সেক্ষেত্রে অমিত মালব্যের ভূমিকা যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। আর এবার বাংলার দায়িত্ব পেয়ে অমিত মালব্য রীতিমত উঠে পড়ে লেগেছেন এ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে চাপে ফেলতে। আর তার জন্যই চলছে একের পর এক আক্রমণ। আপাতত দেখার অমিত মালব্যর আক্রমণের ঝাঁঝ সামলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কী জবাব দেওয়া হয়!