প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলার বুকে তৃণমূল ও বিজেপির রাজনৈতিক সম্পর্কের উত্তাপ ক্রমশই বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে জোরদার চর্চা। অন্যদিকে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের প্রতিটি ঘটনাকেই বিজেপি নিজেদের অস্ত্র বানিয়ে প্রয়োগ করছে শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি আবারও তৃণমূল এবং বিজেপির রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ালো মেদিনীপুরে। শনিবার সন্ধ্যাবেলায় রামনগর কলেজ মোড় এলাকায় একই সাথে বিজেপি এবং তৃণমূলের কর্মসূচি শুরু হয়।

অভিযোগ উঠেছে বিজেপির পক্ষ থেকে, তৃণমূল তাঁদের কর্মসূচিতে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা সৃষ্টি করেছে। রীতিমত উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এলাকায়। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে অবধারিতভাবে পুলিশের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি পুলিশের কাছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত শনিবার রামনগরের কলেজ মোড় এলাকায় তৃণমূলের প্রতিবাদ প্রতিবাদ সভা ছিল কৃষি বিল সহ বিভিন্ন ইস্যুতে কেন্দ্রীয় উদ্যোগ এর বিরুদ্ধে।

অন্যদিকে জানা যাচ্ছে, ওই একই দিনে সামান্য দূরে বিদ্যাসাগরের জন্মদিন উপলক্ষে স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা পড়ুয়াদের শিক্ষা সামগ্রী বিতরণের কর্মসূচি শুরু করে। এবং সেখানে হাজির ছিলেন বিজেপি ঘনিষ্ঠ সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক স্বদেশ নায়েক। অন্যদিকে সামান্য দূরে তৃণমূলের প্রতিবাদ সভা থেকে আওয়াজ ওঠে স্বদেশ নায়েকের বিরুদ্ধে। স্থানীয় বিজেপি নেতারা অভিযোগ জানিয়েছে, প্রতিবাদ করলে দুজন বিজেপি কর্মীকে মারধর করে তৃণমূলের লোকজন আর তারপরেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

অন্যদিকে স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা সংশ্লিষ্ট দেপাল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনুপ মাইতি তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, বিজেপির লোকেরাই করোনা পরিস্থিতিতে বাইরে থেকে স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে অনুষ্ঠান সূচি রূপায়ণ করার চেষ্টা চালায়। তাতে কিছু মানুষ সংক্রমণের আশঙ্কায় প্রতিবাদ করে। তবে কাউকে মারধর করা হয়নি। অন্যদিকে এদিন পাল্টা দেপাল গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অভিযোগ জানান, বিজেপির লোকজন তৃণমূলের দলীয় পতাকা ছিঁড়ে দিয়েছে।

অন্যদিকে সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক স্বদেশ নায়েক জানিয়েছেন, তৃণমূল শিবির থেকে বিজেপির কর্মসূচি বানচাল করার চেষ্টা চালালেও তা সফল হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে তোড়জোড়। রাজ্যের সবকটি রাজনৈতিক দলই এই মুহূর্তে চূড়ান্ত ব্যস্ত। কিন্তু তার মধ্যেও তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে লড়াই যে জোরদার হতে চলেছে, তা ইতিমধ্যে স্পষ্ট। এবং এই লড়াই দুই দলের জন্যই যে একটা প্রেস্টিজ লড়াই, সে কথা অনস্বীকার্য। আপাতত বাংলার বুকে কে এগিয়ে থাকবে সে কথা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরো বেশ কয়েক মাস।