এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতেই হাজার-হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি থেকে রেহাই অজিত পাওয়ারের!

বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতেই হাজার-হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি থেকে রেহাই অজিত পাওয়ারের!


শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোরের মধ্যেই মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড়োসড়ো পরিবর্তন ঘটে যায়। শনিবার ভোরে ঘোর লাগা চোখে প্রাথমিক অবস্থায় কেউই বুঝতে পারেনি কি ঘটছে। বুঝতে বুঝতেই কিছুটা সময় চলে যায়। এবং বোঝার পরে সারা দেশের রাজনৈতিক মহল স্তম্ভিত হয়ে যায়। রাতের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এভাবে যে রাজ্যের শাসক এর মুখ বদলে যেতে পারে সে সম্পর্কে কোন ধারনাই ছিল না কারোর। আর এই ঘটনা ঘটানোর পেছনে মূল কান্ডারী যিনি, তিনি হলেন এনসিপির অজিত পাওয়ার। মাঝরাতে বিজেপি শিবিরের সাথে যোগ দিয়ে মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলাতে সাহায্য করলেন।

সদ্যই উপ মুখ্যমন্ত্রীর পদ পেয়েছিলেন এনসিপি থেকে দলে যোগ দেওয়া অজিত পাওয়ার। এবার মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক মোড় ঘোরানো চিত্রনাট্যে উপহার দেওয়ার ফলে অজিত পাওয়ার কে পুরস্কারস্বরূপ সমস্ত দুর্নীতি থেকে ক্লিনচিট দেওয়া হল। 2014 সালের যে দুর্নীতিতে নাম থাকার জন্য অজিত পাওয়ার উপ মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন, সেই 70 হাজার কোটি টাকার সেচ মামলা থেকে তিনি মাত্র একদিনের মধ্যে ক্লিনচিট পেয়ে গেলেন।

মহারাষ্ট্রের দুর্নীতি দমন দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, অজিত পাওয়ার এর বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। খুব স্বাভাবিকভাবেই বিরোধীরা এই ঘটনাকে অজিত পাওয়ারের রাজনৈতিক বিশ্বাসঘাতকতার পুরস্কার হিসেবেই দেখছেন। অন্যদিকে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে অজিত পাওয়ার যেভাবে নিজস্ব চিন্তাভাবনা নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন বিজেপির দিকে, সেই চিন্তা ভাবনার ফসল- তিনি ক্লিনচিট পেলেন সমস্ত দুর্নীতি থেকে।

2010 সালে কংগ্রেস ও এনসিপি মহারাষ্ট্রের সরকার গঠন করেছিল। সে সময় উপ মুখ্যমন্ত্রী পদে যোগদান করেন অজিত পাওয়ার। এর সাথে তিনি সেচ মন্ত্রীও ছিলেন। সেসময় তাঁর দপ্তর এর বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে অতিরিক্ত টাকা খরচ করার কথা বলা হয়। শুধু তাই নয়, বিদর্ভের উন্নতিতে দেওয়া কয়েক হাজার কোটি টাকারও দুর্নীতি করেছেন তিনি বলে অভিযোগ করা হয়। এর পরেই অজিত পাওয়ার মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন এবং জানিয়ে দেন দুর্নীতিমুক্ত না হলে তিনি আর এই পদে ফিরে আসবেন না।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এরপর 2014 সালে হয় রাজনৈতিক পালাবদল। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেই তিনি প্রথম নির্দেশ দেন পাওয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার। কড়া তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি। এমনকি অজিত পাওয়ারকে তিনি জেলে ঢোকাবেন ইঙ্গিতও দেন। যদিও গত পাঁচ বছর অজিত পাওয়ার বহাল তবিয়তেই রাজনীতি করে গেছেন‌। আর এবার মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পাল্টাতে অজিত পাওয়ার যেভাবে বিজেপিকে সাহায্য করলেন, তার ফলস্বরূপ তিনি সমস্ত দুর্নীতি থেকে এক কথায় ক্লিনচিট পেয়ে গেলেন।

তবে এই ঘটনায় চূড়ান্ত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এমনিতেই মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহল শনিবারের পর থেকে রাজনৈতিক নাটকীয়তার ধাক্কায় পর্যুদস্ত। তবে এখনো মহারাষ্ট্রের নাটক শেষ পর্যায় পৌঁছয়নি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এখনো শেষ ভরসা আস্থা ভোট। আস্থাভোটে বিরোধীরা যদি নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারে, তাহলেই আবার মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বদল হবে। সেক্ষেত্রে ক্লিনচিট পেয়ে গেলেও অজিত পাওয়ারের বর্তমান রাজনৈতিক ভূমিকা সম্পূর্ণ বিফলে যাবে। আপাতত মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিতে চলেছে, সেদিকে নজর রাখছে দেশের ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!