এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > বিজেপির সভায় উপচে পড়ছে ভিড়! তৃণমূল ও পুলিশ টপকে বাজিমাতের আশায় গেরুয়া শিবির

বিজেপির সভায় উপচে পড়ছে ভিড়! তৃণমূল ও পুলিশ টপকে বাজিমাতের আশায় গেরুয়া শিবির

আগামী 25 শে নভেম্বর খড়গপুর, করিমগঞ্জের সাথে সাথে করিমপুরেও বিধানসভা উপনির্বাচন হতে চলেছে। করিমপুর অবশ্য তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি। গত লোকসভা ভোটে করিমপুর কেন্দ্রটি তৃণমূলের দখলে ছিল। এই কেন্দ্রে লোকসভা ভোটে তৃণমূল 14 হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি প্রার্থী থেকে। যদিও লোকসভা নির্বাচনের পরে রাজ্যে বিজেপি পায়ের তলার মাটি শক্ত করেছে। তাই এবার করিমপুর নিয়ে আলাদা ভাবনা শুরু হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে। করিমপুরে এবার বিজেপির পক্ষ থেকে দাঁড়িয়েছেন, ভূমিপুত্র জয়প্রকাশ মজুমদার।

সম্প্রতি করিমপুরে উপনির্বাচনের প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদার এর সমর্থনে জন্য নির্বাচনী সভায় উপস্থিত হন বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তাঁর সাথে ছিলেন দলের অন্যান্যরা, যথা – মুকুল রায়, ভারতী ঘোষ, মাফুজা খাতুন, অভিনেত্রী কাঞ্চনা মৈত্র এবং বিজেপির তিন বিধায়ক। এই সভাতে উপচে পড়া ভিড় দেখে বিজেপি নেতারা যথারীতি নিজেদের উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেননি। সভা থেকে কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানান, নির্বাচনে জিতলে তাঁরা করিমপুরে চার লেনের রাস্তা ও নতুন রেলপথ তৈরি করবেন। সাথে কৃষিপণ্য মজুদের জন্য হিমঘর তৈরি হবে।

নির্বাচনী সভা থেকে মুকুল দাবি করেন, “এই রাজ্যে কাজ না থাকায় এখান থেকেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গার সবচেয়ে বেশি শ্রমিক কাজ করতে যাচ্ছেন। ওঁরা এনআরসি নিয়ে সংখ্যালঘুদের ভুল বোঝাচ্ছেন। তৃণমূল একসময় জাতীয় দলের স্বীকৃতি পেয়েছিল। এখন ভোট কমতে কমতে সেই স্বীকৃতি হারিয়েছে।”

অন্যদিকে, করিমপুরের থানারপাড়ার দোগাছি আনাজ হাটে সম্প্রতি প্রচারে গিয়ে আক্রান্ত হন বিজেপির নেতাকর্মীরা। প্রচারে উপস্থিত ছিলেন টালিগঞ্জের দুই অভিনেত্রী রিমঝিম মিত্র ও রূপাঞ্জনা মিত্র। বিজেপি এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল তোলে তৃণমূলের দিকে। তাঁদের দাবি, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা এই সভায় হামলা করে। এ প্রসঙ্গে রিমঝিম মিত্র জানান, “কিছু লোক যখন গোলমাল পাকায়, একটু দূরেই পুলিশ দাঁড়িয়েছিল। তাঁরা কেউ এগিয়ে আসেনি। অন্ধকারে ভিড় থেকে বেরিয়ে আসার সময় অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করা হয়েছে। কোনরকমে প্রাণে বেঁচে ফিরতে হয়েছে।”

এই ঘটনায় বিজেপি উত্তর জেলা সংগঠনের সভাপতি মহাদেব সরকার জানিয়েছেন এলাকার 15 জন দুষ্কৃতী তৃণমূল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। এছাড়াও মুখ্য নির্বাচন কমিশন অফিসার, রিটার্নিং অফিসার ও করিমপুর ভোট কেন্দ্রে সাধারণ ও পুলিশ পর্যবেক্ষককেও এই ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এলাকায় বিজেপির সভা করতে গেলে 48 ঘণ্টা আগে অনুমতি চাইলেও অনুমতি একদম শেষ মুহূর্তে এসে দেওয়া হচ্ছে। তবে এদিনের সভার জন্য পুলিশ অনুমতি দেয়নি বলে জানা গেছে। নির্বাচন কমিশনে বিজেপি থানারপাড়া থানার আইসির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রচারে গিয়ে বিজেপি কর্মীদের ওপর তৃণমূলের হামলার অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অন্যদিকে, প্রচারের অনুমতি না থাকা সত্বেও বিজেপি সভা করায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। যদিও বুধবার রাত পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে কাউকে কোন ঘটনার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তদন্ত চলছে। অন্যদিকে, এই প্রসঙ্গে কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার কৃষানু রায় জানিয়েছেন, “মঙ্গলবার থানারপাড়ায় বিজেপির প্রচারের অনুমতি ছিল না। সে কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। বিজেপির করা হামলার অভিযোগের তদন্ত চলছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিজেপির অভিযোগের তালিকায় নাম আছে করিমপুর 2 নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি রাজু মল্লিকের। এই ঘটনা সম্পর্কে রাজু জানিয়েছেন, তৃণমূল কোনোভাবেই জড়িত নন এই ঘটনায়। অভিনেত্রীরা আসায় এলাকায় কিছু মানুষ তাঁদের দেখার জন্য জড়ো হয়েছিলেন। কিন্তু সেই ভিড় সামলানোর মতো প্রস্তুতি বিজেপির ছিলনা। যার ফলে এ ধরনের গণ্ডগোলের সূত্রপাত হয়েছে। রাজু মল্লিক এ প্রসঙ্গে বলেন, “বিজেপি প্রচার পাওয়ার জন্যই আমাদের নাম জড়াচ্ছে।”

অন্যদিকে সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ যাওয়ার পথে কৃষ্ণনগরের সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর জানিয়েছেন, “গত লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় সন্ত্রাস হয়েছিল। গোটা দেশের কাছে বার্তা গিয়েছিল যে এখানে সন্ত্রাস হয়। আমি চাই এখানে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হোক, দেশের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিককে অনুরোধ করেছি যাতে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত প্রান্তের মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন। এই তিনটি উপনির্বাচনে যেন সন্ত্রাস না হয়, অশান্তি না হয়।” রাজ্যপালের এই বক্তব্য উপনির্বাচনের প্রাক্কালে যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য বলে দাবি করা হয়েছে রাজনৈতিক মহল থেকে।

তবে বলা যায়, তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত করিমপুরে বিজেপিকে বেশ জোর লাগাতে হবে এই উপ নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য। কারণ করিমপুরের কথা মাথায় রেখে তৃণমূলের প্রার্থী করেছে দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত সৈনিক বিমলেন্দু সিংহ রায়কে। ইতিমধ্যে করিমপুরে তৃণমূল নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিয়েছে বিমলেন্দু সিংহ রায়কে সামনে রেখে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে লোকসভা ভোটে বিজেপির ভালো ফলাফলকে মাথায় রেখে প্রথম থেকেই উপনির্বাচনকে ঘিরে বিজেপি ঝাঁপিয়ে পড়েছে জেতার ধারা বজায় রাখতে। তাই এবার দেখার ভূমিপুত্র জয়প্রকাশ মজুমদার তাঁর রাজনৈতিক ক‍্যারিশমাসম্পন্ন ব্যক্তিত্বকে সামনে রেখে এই উপ নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারেন কিনা!

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!