এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > লকডাউনের মাঝেই রেশনের চাল খোলাবাজারে পাচার ও কালোবাজারির বিস্ফোরক অভিযোগ!

লকডাউনের মাঝেই রেশনের চাল খোলাবাজারে পাচার ও কালোবাজারির বিস্ফোরক অভিযোগ!


তিন সপ্তাহের লকডাউন এর আজ দশম দিন। বিশ্বজুড়ে বাড়তে থাকা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ক্রমে ভারতেও আশ্রয় নেয়। বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে করোনা সংক্রমণ পশ্চিমবঙ্গেও দেখা গেছে। ফলস্বরূপ, তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় লকডাউন এর। লকডাউনের শুরু থেকেই মানুষ গৃহবন্দী। ফলে কোন কাজ হচ্ছে না। ব্যবসা-বাণিজ্য পুরোপুরি বন্ধ। এই অবস্থায় সবথেকে বিপাকে পড়েছেন দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলি। অন্যদিকে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উভয়ই একযোগে এই দিন দরিদ্র মানুষদের পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ইতিমধ্যে।

তার মধ্যে বিনামূল্যে রেশন বিতরণ অন্যতম পদক্ষেপ। রেশনে চাল, ডাল ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস দেওয়া হবে বলে জানা যায়। কিন্তু এই রেশনের চাল নিয়েই এবার কালোবাজারির অভিযোগ উঠল। জলপাইগুড়ির মালবাজারের ওদলাবাড়ি বাজার এলাকায় এদিন স্থানীয়রা অভিযোগ আনেন, লকডাউনের মধ্যেই 28 বস্তা চাল পাচার হচ্ছিল। ঘটনাটি নজরে আসার সাথে সাথেই এই চাল পাচার রুখে দেন এলাকাবাসীরা। এপ্রসঙ্গে এলাকাবাসীরা বলেন, প্রতিটি চালের বস্তায় সরকারি লেভেল রয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত এদিন সকাল ন’টায়। ওদলাবাড়ি হাটখোলা থেকে 28 বস্তা চাল রওনা হয় দক্ষিণ ওদলাবাড়ি দিকে। ঘটনাটি নজরে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় বাসিন্দারা এই টোটোগুলি আটকে দেন এবং তল্লাশিতে দেখা যায় এফসিআই এর লোগো ও সরকারি লেভেল লাগানো প্রায় 28 বস্তা চাল রয়েছে টোটোর মধ্যে। স্থানীয় বাসিন্দারা সমস্ত চাল আটক করে তা পৌঁছে দেন ওদলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসে। আর তার সাথে ওদলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, মালবাজার পুলিশ ও বিডিওকেও খবর দেন তাঁরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকার রেশনের জন্য যে চাল বরাদ্দ করেছ্নে, তা বাইরের বাজারে বিক্রি হওয়ার জন্যই যাচ্ছিল। এ ব্যাপারে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাঁরা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে এই পাচার হতে চলা চালের মালিক মহেশ প্রসাদ দাবি করেছেন, “আমি আমার মুদি দোকানে বিক্রি করার জন্য বাজারের চাল ব্যবসায়ী মোহন অগ্রওয়ালের কাছ থেকে এই চাল কিনে নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমি জানি না এটা রেশন এর চাল কি না।”

আবার অন্য কথা বলেছেন চাল ব্যবসায়ী মোহন অগ্রওয়াল। তিনি বলেন, “এগুলো কোনওটাই রেশনের চাল না। রেশনের চালের বস্তায় মেশিন সেলাই থাকবে। কিন্তু এই চালের বস্থায় হাত সেলাই আছে। এটা হান্ডিয়া চাল। আমার গোডাউনে এক বস্তাও রেশনের চাল নেই।” প্রসঙ্গত লকডাউন এর সময় থেকেই বারংবার রাজ্য সরকার সতর্ক করে আসছে কালোবাজারি নিয়ে। অন্যদিকে চাল নিয়ে এই কালোবাজারীর ঘটনায় মালবাজার ব্লক তৃণমূল সভাপতি তমাল ঘোষ জানান, “এ ব্যাপারে পুলিসকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। রেশনের চাল কেন বাজারে বিক্রি হবে? পুলিস সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নিক।”

অন্যদিকে ওদলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মধুমিতা ঘোষ জানিয়েছেন”সমস্ত চাল গ্রাম পঞ্চায়েতে আটক করে রাখা হয়েছে। পুলিসকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” লকডাউন এর শুরু থেকেই বাজারে চাল অমিল হতে শুরু করে। তার সাথে আটা ও অন্যান্য দ্রব্যো যোগ হয়। অন্যদিকে সরকারি নির্দেশনামায় লকডাউন চলাকালীন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যকে তার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। তবে এই মুহূর্তে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সে সময় থেকেই অভিযোগ আসছিল এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা লকডাউন এর সুযোগে সাধারণমানুষকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা চালাচ্ছে।”

তিনি এই ব্যাপারে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ারও আবেদন করেন। তবে এখনও বিভিন্ন জায়গা থেকে যেভাবে কালোবাজারির কথা উঠে আসছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে সরকার যখন করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারাত্মক চিন্তিত অবস্থায় প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে এ থেকে বাঁচার, সে সময় সুযোগ কাজে লাগিয়ে এক ধরনের অসাধু ব্যবসায়ী কালোবাজারিতে মেতে উঠেছেন। আপাতত ওদলাবাড়ির ঘটনা সামনে আশায় প্রশাসন কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, সেদিকেই নজর থাকবে সবার।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!