এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পঞ্চম দফায় অশান্তির আবহে রক্ত ঝরলেও, চুপচাপ ভোট অনেক হিসেব ওলোটপালটের ইঙ্গিত স্পষ্ট করছে

পঞ্চম দফায় অশান্তির আবহে রক্ত ঝরলেও, চুপচাপ ভোট অনেক হিসেব ওলোটপালটের ইঙ্গিত স্পষ্ট করছে

গতকাল বাংলার ৩ জেলার ৭ লোকসভা আসন – বনগাঁ, ব্যারাকপুর, হাওড়া, উলুবেড়িয়া, শ্রীরামপুর, হুগলি ও আরামবাগে হয়ে গেল ভোটগ্রহণ। ২০১৪ বা ২০১৬ সালের নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে এই ৭ আসনই কার্যত তৃণমূলের গড় ছিল বলা যায়, প্রতিটি জায়গাতেই ঘাসফুল শিবিরের প্রার্থীরা হাসতে হাসতে জিতেছিলেন। কিন্তু বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই যাচ্ছে – এই আসনগুলির প্রায় প্রতিটিতেই রীতিমত উঁকিঝুঁকি মারছে পদ্ম। এমনকি ভোট পূর্ববর্তী সমীক্ষাগুলিতেও ইঙ্গিত মিলছিল এই আসনগুলোতে বিজেপি ভালো ফলাফল করতে পারে।

তৃণমূল কংগ্রেস এবারে ‘উন্নয়নের জোরে’ বাংলায় ৪২ এ ৪২ আসন জেতার স্বপ্ন দেখছে – কিন্তু গতকালের নির্বাচনে দেখা গেল প্রায় প্রতিটি জায়গাতেই বোমাবাজি, গুলি, বুথজ্যাম ও ছাপ্পার অভিযোগ! আর আশ্চর্যরকমভাবে প্রায় প্রতিটি জায়গাতেই অভিযোগের তীর শাসকদল তৃণমূলের দিকে। এমনকি, এলাকাতে বহিরাগত ঢোকানো বা বিনা প্ররোচনায় প্রবীণ বা শিক্ষকদের মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার মত গুরুতর অভিযোগও শাসকদলের বিরুদ্ধেই গেছে। যদিও, প্রতি ক্ষেত্রেই শাসকদল হাত ধুয়ে ফেলে দোষ চাপিয়েছে বিরোধীদের উপর, বা ঘটনা সম্পর্কে জানা নেই জাতীয় দায়সারা বিবৃতি দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টায় আছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু, এত সবের মধ্যেও মতের উপর সাধারণ মানুষ বিপুলভাবেই ভোট দিতে পেরেছেন – কেন্দ্রীয় বাহিনীর সহায়তায় মানুষকে বুথমুখী করতে অনেকাংশেই সফল নির্বাচন কমিশন। কিছু কিছু জায়গা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন থাকলেও, রক্তাক্ত-অশান্তির পরিবেশের অভিযোগ উঠলেও – সার্বিকভাবে বিভিন্ন বুথের বাইরে সকাল থেকেই গরম উপেক্ষা করে মানুষের লম্বা লাইন দেখা গেছে। অনেক জায়গাতেই অভিযোগ উঠেছে, বিরোধীদের বাড়ির মধ্যেই আটকে দিচ্ছে শাসকদল বা বুথের বাইরে জমায়েত করে ভোটারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু, বেলা বাড়তেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর ‘কুইক রেসপন্স টীম’ সেইসব জায়গায় গিয়ে জটলা ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে, এমনকি বহিরাগতদের বাড়ি থেকে টেনে এনেও পিটিয়েছে।

আর কেন্দ্রীয় বাহিনীর এই ভূমিকায় ক্রমশ আস্থা ফিরেছে সাধারণ মানুষের। আর তাই দুপুরের খাওয়া-দাওয়ার পর নতুন করে লাইন দিয়েছেন বুথের বাইরে। যদিও এর মধ্যেই রাজ্য পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তিতে মুখ ফেটেছে বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংয়ের, বুথের মধ্যে ‘জোর দেখাতে’ গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর লাঠির বাড়ি পড়েছে তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন ব্যানার্জির পিঠে, ইভিএম ভাঙার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি প্রার্থী লকেট চ্যাটার্জির বিরুদ্ধে, শো-কজ করা হয়েছে বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরকে। তবে, সেসব উপেক্ষা করেই মানুষ ভোট দিয়েছেন নিজেদের মতোই।

আর তাই দিনের শেষে দেখা যাচ্ছে সব আসনেই ৭৬-৮২% মত ভোটদান। চুপচাপ ভোট আর বিশাল সংখ্যায় ভোট কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ‘বড় পরিবর্তনের সূচক’ হিসাবে পরিগণিত হয় রাজনীতির মঞ্চে – যার স্বরূপ ২০০৯ বা ২০১১ তে দেখেছে বঙ্গবাসী। ফলে সব মিলিয়ে এবারেও কিন্তু অনেক হিসেব ওলোটপালটের ইঙ্গিত ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। আর মাত্র দুদফা – তারপরেই ২৩ তারিখে ভোটগণনা। ততদিন পর্যন্ত কিন্তু এই ‘চুপচাপ’ ভোট কোন সমীকরণ বদলাচ্ছে তা নিয়ে জল্পনা অব্যাহত থাকবেই।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!