বকেয়া বেতন ও অবসরকালীন ভাতা নিয়ে ক্ষোভ এক ছাতার তলায় এনে দিল তৃণমূল-বামফ্রন্টকে? জেনে নিন তৃণমূল বর্ধমান বামফ্রন্ট রাজনীতি রাজ্য September 23, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – মানব জীবনে প্রয়োজন বিষয়টির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা আছে। প্রয়োজনের কারণেই অনেক সময় গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব, কিংবা শত্রুতা। আবার, প্রয়োজনের তাগিদেই অনেক সময় সম্পূর্ণ ভিন্ন মতাদর্শের দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষও পরস্পরের কাছাকাছি চলে আসতে পারে। এমন চিত্র দেখা গেল পশ্চিম বর্ধমান জেলার বেসরকারি একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। যেখানে বকেয়া বেতন, অবসরকালীন ভাতা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত বিল না মেটাবার অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০ টা থেকে শুরু করে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভ ঘোষণা করল বামফ্রন্ট ও তৃণমূলের বেশকিছু শ্রমিক সংগঠন। প্রয়োজনের তাগিদই মিলিয়ে দিল লাল-সবুজের দুই বিপরীতধর্মী শিবিরকে। গতকাল পশ্চিম বর্ধমানের চিনাকুড়ির বেসরকারি একটি তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ডিসেরগড় ঝালবাগান স্থিত সদর কার্যালয়ের নিকটে সিটু, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি, আইএনটিটিইউসি এই চারটি শ্রমিক সংগঠনের কর্মীদের সম্মিলিত অবস্থান বিক্ষোভ চোখে পড়ল। বাম ও তৃণমূল মতাদর্শ প্রভাবিত এই চারটি সংগঠনের শ্রমিকরা অভিযোগ জানালেন যে, এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থায়ী শ্রমিকরা নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন, কিন্তু তাদের বেতন দীর্ঘসময় ধরে আটকে রয়েছে। তাদের অভিযোগ, এই সংস্থার স্থায়ী শ্রমিকেরা মাসে মাসে নিয়মিত তাদের বেতন পাচ্ছেন, কিন্তু ঠিকা শ্রমিকদের বেতন আটকে আছে গত তিন-চার মাস ধরে। তাদের আরও অভিযোগ, অস্থায়ী কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের ও ইএসআই-এর টাকাও জমা হচ্ছে না সঠিক সময়ে। পূর্বে এই টাকা সংস্থার কতৃপক্ষ সরাসরি জমা করতো, কিন্তু সম্প্রতি এক ঠিকাদারি সংস্থার হাতে এই কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই নানা সমস্যার সূত্রপাত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। ঠিকাদারি ব্যবস্থা প্রত্যাহার করে সাবেক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি তাঁরা জানালেন। সংস্থার কর্তৃপক্ষকে তাদের দাবি সম্পর্কিত স্মারকলিপিও তাঁরা দিয়েছেন। অন্যদিকে, এই বেসরকারি তাপবিদ্যুৎ সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ২৫০ জন স্থায়ী এবং ২২৫ জন অস্থায়ী শ্রমিক সম্প্রতি কর্মরত। রাজ্যজুড়ে করোনা সংক্রমনের কারণে, বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ ১২ থেকে ১৫ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু, চাহিদা কমে গেলেও, ১২ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দিতে পারে নি। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - আর এর ফলে সংস্থার আয় কমে গেছে, কিন্তু খরচ কমে নি। সংস্থার আয় কমে যাওয়ার কারণেই কিছু এই সংস্থা তাদের কিছু কর্মীর বেতন, ভাতা সঠিক সময়ে প্রদান করতে পারে নি। তবে, সংস্থার দাবি সম্প্রতি কর্মীদের বকেয়া বেতন, ভাতা মিটিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা মোটেই একমত নন সংস্থার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। তাদের আরও অভিযোগ, এই সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত স্থায়ী শ্রমিকরা তাদের গ্র্যাচুইটির টাকা পেলেও, পাননি তাদের বকেয়া চিকিৎসার বিল ও এলটিএর টাকা। তাদের একাধিক দাবি নিয়ে গতকাল সিটু নেতা তাপস কবি, আইএনটিটিইউসি নেতা শুভেন্দু গাঁতাইত, আইএনটিইউসি নেতা চণ্ডী চট্টোপাধ্যায় ও এআইটিইউসি নেতা সিঞ্চন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখরা জানালেন, ” স্থায়ী শ্রমিকদের বকেয়া গ্র্যাচুয়িটির জন্য নয় শতাংশ সুদ দিতে হবে। দ্রুত বকেয়া মেটাতে হবে। পুজোর আগেই দাবিগুলি পূরণ করতে হবে।’’ কিন্তু সংস্থার কর্তৃপক্ষ কর্মীদের এই অভিযোগকে আমল দেয়নি । এ প্রসঙ্গে এই সংস্থার সিনিয়র ম্যানেজার পার্থ চট্টরাজ জানালেন, ‘‘অস্থায়ী শ্রমিকদের অগস্ট পর্যন্ত বেতন মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, যে আর্থিক সংস্থার মাধ্যমে স্থায়ী শ্রমিকদের গ্র্যাচুইটির টাকা মেটানো হচ্ছে, সেই সংস্থাটি মাঝের কয়েক মাস লকডাউনের জেরে কাজ করতে পারেনি। তবে টাকা মেটানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চিকিৎসা সংক্রান্ত বিলও দ্রুত দেওয়া হবে।’’ আপনার মতামত জানান -