এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বনধের বিরোধিতা করতে গিয়ে এবার এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ‘একলা চলো’ নীতির ঘোষণা

বনধের বিরোধিতা করতে গিয়ে এবার এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ‘একলা চলো’ নীতির ঘোষণা


8 বছরে এই প্রথম কোনও ধর্মঘটে ব্যতিক্রমী ছবি দেখল বাংলা। বুধবার কাজের দিনে ধর্মঘটে বিঘ্নিত হল রাজ্যের স্বাভাবিক জনজীবন। বুধবার সারা ভারত জুড়ে বাম কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের ডাকা বনধে সকাল থেকে উত্তপ্ত পরিস্থিতি ছিল পশ্চিমবঙ্গের জেলা জুড়ে। এদিন রাস্তাঘাটে লোকজন কম ছিল। ধর্মঘটকারীরা পথে নেমে তাঁদের আন্দোলন দেখিয়েছে। তবে এদিনের বন্ধ নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ মনোভাব প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতায় যে যে ইস্যুতে বন্ধ হয়েছিল তাতে তাঁর দল সমর্থন দিয়েছিল, কিন্তু তা সত্বেও রাজ্যজুড়ে এরকম হিংসার আগুন জ্বলল কেন, তা নিয়ে কোনো উত্তর নেই। আর বনধের 24 ঘন্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, আগামী 13 ই জানুয়ারি দিল্লিতে যে বৈঠক হবে দেশের সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে, তাতে তিনি হাজিরা দেবেন না। এই ঘটনায় তুমুল সমালোচনার ঝড় উঠেছে দেশের রাজনৈতিক মহলে।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, এনআরসি ও নাগরিকত্ব ইস্যুতে তৃণমূল একাই লড়বে– তাই 13 ই জানুয়ারি বিরোধীদের ডাকা বৈঠকে যাওয়া নিস্প্রয়োজন। উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব ইস্যু নিয়ে সাম্প্রতিক কালে যেভাবে হিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে একের পর এক, সেই নিয়ে বিরোধিতার জন্যই বিরোধী দলের বৈঠক হওয়ার কথা দিল্লিতে। এই একই ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল দেশের রাজনৈতিক দলগুলিকে আগেই সমর্থন জানিয়েছে। কিন্তু বুধবার বনধের ফলে যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সৃষ্টি হল পশ্চিমবঙ্গ জেলা জুড়ে, তাতেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে ‘একলা চলো রে’ নীতি গ্রহণ করলেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বুধবারের বনধের কারণে হিংসার ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন, ‘বাম ও কংগ্রেস বাংলায় নোংরা রাজনীতি করছে। ওরা হিংসায় মদত দিয়েছে মালদায়। সেখানে গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ায় ঘটনায় ওরাই দায়ী (কংগ্রেস ও বাম )। এদিন মুখ্যমন্ত্রী কড়া ভাষার সমালোচনা করে বাম ও কংগ্রেস দলের বিরুদ্ধে ‘গুন্ডারাজ’ চালানোর অভিযোগ আনেন। শুধু তাই নয়, এই দুই দল যে ‘নিম্নমানের রাজনীতি’ চালিয়ে যাচ্ছে সেকথাও তিনি বলেন অত্যন্ত ক্ষোভের সাথে।

অন্যদিকে, নাগরিকত্ব ইস্যুতে বিধানসভার একটি বিল পাস করার কথা ছিল তৃণমূল সরকারের। যদিও বিভিন্ন কারণবশত এই মুহূর্তে সেই বিল পাস হচ্ছে না। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী আজকেও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে রাজপথে প্রতিবাদে নামছেন। তবে এই মুহূর্তে সব থেকে বড় খবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘একলা চলো’ নীতি গ্রহণ করা। নিজে যেখানে তিনি এতদিন দেশের প্রতিটি অবিজেপি রাজনৈতিক দলগুলিকে একজোট হয়ে আন্দোলন করার আবেদন জানিয়েছিলেন, সেখানে তিনি একা লড়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- তা এই মুহূর্তে জাতীয় রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য ঘটনা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস বাম-কংগ্রেস নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বলেন, বনধ সফল হয়নি। জনজীবন স্বাভাবিক ছিল। বিভিন্ন জায়গায় ট্রেন অবরোধ হওয়ার পরেও সরকারের তরফ থেকে অতিরিক্ত যানবাহন দেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে পশ্চিমবঙ্গে গত আট বছরে বারবার মুখ থুবড়ে পড়েছে হরতাল-ধর্মঘট চেষ্টা। বনধ বিরোধী সংস্কৃতি গড়ে বাংলায় কর্মদিবস বৃদ্ধির লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লাগাতার প্রচেষ্টায় বহুবার সাড়া দিয়েছে রাজ্যের বড় অংশের মানুষ। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, এদিন বাম-কংগ্রেসের ডাকা বনধকে সফল করে তোলার পেছনে পুলিশ প্রশাসনের যথেষ্টই হাত ছিল। ধর্মঘটীদের রাস্তা থেকে তোলার কোন প্রচেষ্টাই করেনি পুলিশ প্রশাসন। আপাতত পুরো বিষয়টি নজরে রেখেছে ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!