প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – আবার একবার ভুয়ো পোষ্ট ঘিরে তীব্র অশান্তি ছড়ালো রাজ্যে। সম্প্রতি ভুয়ো পোস্ট ঘিরে অশান্তির কারণেই ইতিমধ্যে রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দুর্গাপূজার সংক্রান্ত ভুয়ো পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে অশান্তি লাগার উপক্রম হতেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে পোস্ট কর্তাদের। তার মধ্যেই আরো একটি পোস্ট ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। পোস্টটিতে দেখা যায়, আসানসোল পুরনিগমের একটি সাইনবোর্ডের ছবি যেখানে শুধুমাত্র হিন্দি, ইংরেজি এবং উর্দুতে সাইনবোর্ড লেখা আছে বলে দেখানো হয়।

কিন্তু আসলে এই তিনটি ভাষা ছাড়াও বাংলাতেও এই সাইনবোর্ড লেখা ছিল। কিন্তু পুলিশ এবং প্রশাসকের মতে ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলা ভাষাটিকে বাদ দিয়ে বাকি তিনটি ভাষা নিয়ে সাইনবোর্ডের ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয় অশান্তি লাগানোর উদ্যোগে। ‌এ ব্যাপারে আসানসোল পুরকর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বাংলা হরফটি সুকৌশলে বাদ দিয়ে আর্দ্ধেক সাইনবোর্ডের ছবি নিয়ে বাংলাকে উপেক্ষা করা হচ্ছে বলে পোস্টটি ভাইরাল করার উদ্যোগ নেয় বিজেপির আইটি সেল। ইতিমধ্যেই এই ভুয়ো পোষ্ট শেয়ার করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সম্পাদক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়।

আর এই গ্রেফতারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আরো একজন বিজেপির হেভিওয়েট নেতা গ্রেপ্তার হলেন। আর তিনি হলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। যে পোস্টটি ভাইরাল হয়েছিল তাতে দেখা যাচ্ছে, একটি ছবি রয়েছে যেখানে হিন্দি ইংরেজি এবং উর্দুতে লেখা রয়েছে আসানসোল পুরো নিগমের সাইনবোর্ড। পোস্টটিকে কেন্দ্র করে প্রচারে নামে বিজেপির আইটি সেল। ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হতে থাকে ছবিটি। বিজেপি রাজ্য মুখপাত্র তরুণজ্যোতি তিওয়ারিও ফেসবুকে এই ছবি পোস্ট করেন।

হুরমুড়িয়ে এই পোস্টটি শেয়ার হতে থাকে। জেলার বিজেপির যুব মোর্চা এবং ছোট বড় নেতারা এই ছবিটিকে কেন্দ্র করে শুরু করে রাজনীতি। ব্যাপারটি পুলিশের নজরে আসার সাথে সাথেই শুক্রবার রাতে বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য সম্পাদক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়।অন্যদিকে বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকে পুলিশ কমিশনারের অফিসের সামনে ধর্নায় বসেন যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সহ বিজেপির বেশ কয়েকজন নেতা।

সৌমিত্র খাঁ অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাবুল সুপ্রিয়র নামেও সব সময় ভুয়ো পোস্ট ছড়ানো হচ্ছে ইচ্ছাকৃতভাবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। সে ক্ষেত্রে কেন পুলিশের ধরপাকড় হয়না বলে প্রশ্ন তোলেন তিনি। ইচ্ছাকৃতভাবে বিজেপিকে কোণঠাসা করার জন্য এভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। পরিস্থিতি বেগতিক অবস্থায় যখন, তখন সেখানে পৌঁছায় বিশাল পুলিশবাহিনী এবং সৌমিত্র খাঁ সহ অন্যান্য বিজেপি নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানা গেছে।

দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল এবং বিজেপির রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চলছিল। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচন কাছে আসার সাথে সাথে এই দ্বন্দ্ব বহুগুণে বেড়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি ভুয়ো পোস্ট কান্ডে এমনিতেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করেই বিজেপিকে অভিযুক্ত করেছিলেন। এবার সরাসরি বিজেপির হেভিওয়েট নেতা ধরা পড়ায় তাঁর অভিযোগের সত্যতা কিছুটা হলেও প্রমাণিত হলো বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। আপাতত এই ভুয়া পোস্ট কান্ড ঘিরে রাজনৈতিক জল যে অনেকদূর গড়াবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল।