প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করেছিল। পরবর্তীতে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জয়লাভ করার পরেও নানা দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ হতে হয় বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহকে। সমবায় ব্যাংকের কোটি কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চলছিল। কিন্তু অবশেষে রবিবার অনাস্থা ভোটে সেই ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত হলেন অর্জুন সিংহ। যার ফলে গেরুয়া শিবির এবং অর্জুন সিংহের ঘনিষ্ঠ মহলে ব্যাপক হতাশার সুর শোনা যাচ্ছে।

বস্তুত, তৃণমূলে থাকার সময় বিধায়কের পাশাপাশি ভাটপাড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান এবং ভাটপাড়া- নৈহাটি সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন অর্জুন সিংহ। তবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, পৌরসভার কিছু ভুয়ো প্রকল্পের মাধ্যমে সমবায় ব্যাংকের কোটি কোটি টাকা তছরুপ করেছেন। আর এরপরই ভাটপাড়ার তৃণমূল নেতা সোমনাথ শ্যাম অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এদিকে এই ঘটনার পরেই গত 6 সেপ্টেম্বর অর্জুন সিংহকে অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিশ পাঠানো হয়। আর তারপরেই রবিবার সেখানে ভোটাভুটি হয়‌। যেখানে 15 জন সদস্যের মধ্যে মোট 12 জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। আর সব ভোটই অর্জুন সিংহের বিরুদ্ধে পড়েছে‌। যার ফলে এই সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত হতে হল অর্জুন সিংহকে।

একাংশ বলছেন, লোকসভা নির্বাচনের পরবর্তী সময়কালে অর্জুন সিংহকে ভাটপাড়ার চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানোর পাশাপাশি সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানোর জন্য উদ্যোগী হয় তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু এতদিন বহু চেষ্টা করেও তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাতে সফলতা পাওয়া যায়নি। কিন্তু এবার অনাস্থা ভোটে যেভাবে অর্জুন সিংহ পরাজিত হলেন, তাতে তৃণমূলের একটা উদ্দেশ্য সফল হল বলেই দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের সোমনাথ শ্যাম বলেন, “ভয় তো চিরকাল অর্জুন সিংহ দেখিয়ে এসেছেন। তিনি না থাকায় সদস্যরা খোলা মনে ভোট দিতে পেরেছেন। সাংসদের জেলযাত্রা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।” কিন্তু তিনি যেভাবে পরাজিত হলেন, তাতে তো তার শক্ত ঘাঁটিতে তার রাশ হালকা হতে শুরু করল? এদিন এই প্রসঙ্গে অর্জুন সিংহ বলেন, “লোকসভার অধিবেশন চলছে বলে আমি দিল্লিতে রয়েছি। হিসেব কষে সময়ে ভোটাভুটি করা হল। সদস্যদের ভয় দেখানো হয়েছে।”

সব মিলিয়ে এবার অর্জুন সিংহকে সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে তৃনমূল বিজেপি এবং অর্জুন সিংহকে কার্যত চাপে ফেলে দিল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।