পৌরসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে নয়া পদক্ষেপ তৃণমূলের, বজায় রইল গোষ্ঠীকোন্দল! কলকাতা রাজ্য December 20, 2019 2019 এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল 42 এ 42 এর স্লোগান তুলেছিল। কিন্তু বিজেপি হাওয়ায় তৃণমূলের স্লোগান বাস্তবায়িত হয়নি। উল্টে 22 টি আসন পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। অন্যদিকে 18 টি আসন পেয়ে তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর লোকসভায় ধাক্কা খাওয়ার পর আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ভালো ফল করাই এখন তৃণমূলের কাছে মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সেই বিধানসভার আগে রাজ্যের বেশ কয়েকটি পৌরসভার নির্বাচন রয়েছে। যে নির্বাচনে ভালো ফল করতে পারলে, তৃণমূল তাদের শক্তিপরীক্ষা করে নিতে পারবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাই এই পরিস্থিতিতে পৌরসভা নির্বাচনের দামামা না বাসলেও, নতুন বছরের শুরুতেই পৌরসভা নির্বাচন হতে পারে একথা ভেবে নিজেদের প্রস্তুতি শুরু করে দিল ঘাসফুল শিবির। তবে পৌরসভা নির্বাচনের জন্য তৃণমূল প্রস্তুতি নিলেও তাদের অস্বস্তি বজায় থাকল। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার নদীয়ার কল্যাণীর বিদ্যাসাগর মঞ্চে পৌরসভা ভোট নিয়ে একটি প্রস্তুতি বৈঠক করেন নদীয়া জেলার তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন, রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি শঙ্কর সিং এবং কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি মহুয়া মৈত্র। জানা যায়, এদিনের এই বৈঠকে তৃণমূলের সমস্ত কাউন্সিলর, ওয়ার্ড সভাপতি এবং শহর সভাপতিদের ডাকা হয়েছিল। তবে আশ্চর্যজনকভাবে এদিনের এই বৈঠকে অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায় হরিণঘাটা পৌরসভার একাধিক তৃণমূল কাউন্সিলরকে। যা নিয়ে দলের অন্দরে ছড়িয়ে পড়ল ব্যাপক জল্পনা। জানা যায়, এদিনের এই বৈঠকে হরিণঘাটা পৌরসভার 11 জন তৃণমূল কাউন্সিলরের মধ্যে গুটিকয়েক তৃণমূল কাউন্সিলর উপস্থিত হন। সভা শুরু হওয়ার পরে সেখানে উপস্থিত হতে দেখা যায় চেয়ারম্যান মানিক ভট্টকে। যদিও বা এই ব্যাপারে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের গলায়। একাংশের বক্তব্য, এই সভায় শহর তৃণমূল সভাপতি উত্তম সাহা ডাক পাননি। তিনি যদি ডাক পেতেন, তাহলে তিনি সকলকে নিয়ে যেতে পারতেন। অন্যদিকে হরিণঘাটা পৌরসভায় দলের কাউন্সিলরদের একাংশ বৈঠকে অনুপস্থিত থাকায় তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলে খবর। তবে কেন এই বৈঠকে শহর তৃণমূল সভাপতি উত্তমবাবুকে ডাকা হল না! আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে সেই উত্তমবাবু বলেন, “আমাকে নাকি মঙ্গলবার রাতে মেসেজ করা হয়েছিল। কিন্তু তন্নতন্ন করে খুঁজেও মোবাইলে এরকম কোনো মেসেজ আমি পাইনি। একটা ফোনও তো করা যেত। এটা পর্যবেক্ষককে বলব। লোকসভা ভোটে আমাদের শহর থেকে লিড পেয়েছিল দল। ভোটের ফল বেরোনোর পরে বিজেপির একাধিক হামলা আমি রুখে দিয়েছিলাম। কয়েকজন কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দিলেও পুরপ্রধান বদলে বোর্ড টিকিয়ে রেখেছি। নিজের পকেট থেকে টাকা খরচ করে লোকসভা ভোটের পর আমি সংগঠন ধরে রাখলাম। আর এখন ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে কেউ কেউ আমার বিরোধিতা করছেন।” এদিকে শহর তৃণমূলের সভাপতিকে বৈঠকে না ডাকায় আফসোসের সুর শোনা গেছে পুরপ্রধানের গলাতেও। এদিন এই প্রসঙ্গে পুরপ্রধান মানিক ভট্ট বলেন, “শুনেছি উত্তমকে বৈঠকে ডাকা হয়নি। খুবই খারাপ লাগছে। পুরসভা দখলে রাখার ক্ষেত্রে ওর অবদান ভুললে চলবে না।” কিন্তু তিনি বৈঠক হচ্ছে জানা সত্ত্বেও, কেন বৈঠকে অনেক দেরি করে পৌছলেন! এদিন এই প্রসঙ্গে সেই মানিক ভট্ট বলেন, “বুধবার শংকর সিংহ আমার মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠিয়েছিলেন। সেটা আমি দেখিনি। এদিন সভা শুরুর সময় বিধায়ক নীলিমা নাগ ও সভাপতি ফোন করে আসতে বলেন। তার পরেই আমি আর উপ পুরপ্রধান সঞ্জীব রাম চলে যাই। আগের পুরপ্রধান রাজীব দালালও ছিলেন। কিন্তু বেশিরভাগ কাউন্সিলর ভুল বোঝাবুঝির কারণে যেতে পারেননি।” আর পুরসভা দখলের জন্য ভোটের আগে রণনীতি তৈরীর এই বৈঠকে দলের একাধিক কাউন্সিলরের অনুপস্থিতি এখন চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে তৃণমূলকে। এদিন এই প্রসঙ্গে রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি শংকর সিং বলেন, “আজ এগারোটা পৌরসভা জনপ্রতিনিধি ও নেতারা এসেছিলেন। কিন্তু হরিনঘাটার পুরপ্রধান মেসেজ দেখেননি। ফলে দেরিতে এসেছেন। কিছু কাউন্সিলর অনুপস্থিত ছিলেন। আর উত্তম সাহার ক্ষোভ থাকলে তাকে বিষয়টা দলে জানাতে হবে। তার অনুপস্থিতি নিয়ে কিছু বলব না।” তবে শঙ্করবাবু যে কথাই বলুন না কেন, যেদিকে জল গড়াচ্ছে, তাতে হরিণঘাটা নিয়ে যে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়ছে, তা দলীয় বৈঠকেই প্রমাণ হয়ে গেল বলে মত বিশেষজ্ঞদের। আপনার মতামত জানান -