এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > উপনির্বাচনে জয়ে আত্মতুষ্টি? এবার জিততে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক শুভেন্দুর

উপনির্বাচনে জয়ে আত্মতুষ্টি? এবার জিততে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক শুভেন্দুর


 

খড়গপুর বিধানসভা নির্বাচনে জয় যুক্ত হয়েছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। পরবর্তীতে 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে ভোটে জিতে সাংসদ হয়েছেন দিলীপবাবু। খড়গপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকেও লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফল অনুযায়ী, প্রায় 46 হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। কিন্তু দীলিপবাবুর খালি করা খড়গপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন বিজেপির কাছে যেমন ছিল পেস্টিজ ফাইট, তৃণমূলের কাছে তেমনই ছিল খড়্গপুরে অস্তিত্বের লড়াই।

সেই লড়াইয়ের দায়িত্ব তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় দলের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ শুভেন্দু অধিকারীকে। নিজের দায়িত্ব যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তা এবং বিচক্ষণতার সঙ্গে পার করেন শুভেন্দুবাবু। লোকসভা ভোটের ফলাফল অনুযায়ী যে খড়গপুর কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসকে কোনোভাবেই অ্যাডভান্টেজ পেতে দেখা যাচ্ছিল না, সেই খড়গপুর বিধানসভা কেন্দ্রে 22 হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজেপি প্রার্থীকে পরাজিত করে জয় যুক্ত হয় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী।

কিন্তু এই জয়ের কারণে কোনভাবেই আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগে আগামী পৌরসভা নির্বাচনের আগে দলকে শিথিল করা যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মেদিনীপুরের তৃণমূল কংগ্রেস পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার মেদিনীপুরের সার্কিট হাউসে সাংগঠনিক বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় নেতাকর্মীদেরকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব খুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে ভাবে কাজ করতে হবে বলে স্পষ্ট জানান শুভেন্দুবাবু। দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে তার বার্তা, খড়গপুর জিতে গেলাম বলে আত্মসন্তুষ্টি ঠিক হবে না। তারা একজোট হয়ে কাজ করেছে বলেই খড়গপুর উপনির্বাচনে জয় এসেছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু সেই জয়ের ফলে ঝাড়গ্রামের নেতাদের মধ্যে আত্মসন্তুষ্টি জন্ম নিয়েছে। আসন্ন ঝাড়গ্রাম পৌরসভার ভোটের লড়াইটা কঠিন। মেদিনীপুর সার্কিট হাউজের দলীয় বৈঠক থেকে সহ-সভাপতি প্রশান্ত রায় ও তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অজিত মাহাতো দেখা যায় শুভেন্দু অধিকারীকে।

এই বিষয়ে অজিতবাবুকে সতর্ক করে পরিবহনমন্ত্রী বার্তা দেন, মাদার সংগঠনের সভাপতিকে জানিয়ে কর্মসূচি নিতে হবে। কোনোভাবেই শহর তৃণমূল সভাপতি প্রশান্ত রায়কে বাদ দিয়ে কাজ করা যাবে না। দলের উন্নতির পথে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব একটা বিশাল বড় অন্তরায়, তাও এদিন স্পষ্ট হয় শুভেন্দু অধিকারীর কথায়। তিনি বলেন, “গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব করে সবাইকে একসঙ্গে চলতে হবে।”

পাশাপাশি শহরে তৃণমূল কংগ্রেস এবং তৃণমূল যুব কংগ্রেসের লবিবাজি যে তিনি ভালো চোখে নিচ্ছেন না, তাও স্পষ্ট করে তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক দলীয় কর্মী-সমর্থকদেরকে। রীতিমত সতর্ক করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “ভবিষ্যতে এই ধরনের বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না। সব তথ্য আমার কাছে রয়েছে। কিছু নেতার গোষ্ঠীবাজির জন্য মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে। ঝাড়গ্রামে নেতারা কি করছেন, সেই খবর আমার কাছে আছে।”

এদিনের বৈঠক থেকেই গোপীবল্লভপুর 2 গোপীবল্লভপুর 1, সাঁকরাইল এবং নয়াগ্রাম এই চারটি ব্লকের দলের কমিটি গঠন করেন শুভেন্দু অধিকারী। নয়াগ্রামের ক্ষেত্রে 14 জনের কমিটি গঠন করা হয়েছে। গোপীবল্লভপুর 1 ব্লকের ব্লক সভাপতি শংকরপ্রসাদ হাসদাকে পরিবর্তন করার জন্য জেলা পর্যবেক্ষকের কাছে দুলাল মূর্মু প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

এই বিষয়ে দুলাল বাবু জানিয়েছিলেন, শংকর হাসদাকে নিয়ে সংগঠন করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি দলের কোনো নির্দেশ মানছেন না। আবার দুলাল মুর্মুর দলের একশ্রেণীর নেতা-কর্মীরা পর্যবেক্ষকের কাছে অভিযোগ করেন। আর এরপরেই শুভেন্দুবাবু শংকরবাবুকে ডেকে দলীয় বিধায়কের সঙ্গে তার সম্পর্কের উন্নতি ঘটানোর নির্দেশ দেন এবং সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য 7 দিনের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন শুভেন্দুবাবু।

পরবর্তীতে গোটা ব্যাপারটা খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূল পর্যবেক্ষক। একইভাবে জেলা পরিষদ থেকে শুরু করে ব্লক ইত্যাদি জায়গায় নানান রকম দলের খুঁটিনাটি সমস্যা এক এক করে বিশ্লেষণ করতে দেখা যায় জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক তথা দলের হেভিওয়েট নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। সকলকে সঙ্গে নিয়ে নতুন বছরে 6 জানুয়ারি নয়াগ্রামের সবুজ উৎসব এবং 7 জানুয়ারি নেতাই দিবসে লালগড়ের নেতাই গ্রামে উপস্থিত থাকবেন পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলে এদিনের সভা থেকে জানিয়েছেন তিনি।

সবকিছু মিলিয়ে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দক্ষ সংগঠক শুভেন্দুবাবুর হাতে যে যে জেলার দায়িত্ব তৃণমূল কংগ্রেস দিয়েছে, সেই জেলাতেই সংগঠনকে চাঙ্গা করতে যথারীতি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা গিয়েছে পরিবহনমন্ত্রীকে। আর নিজের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে এবারে এই জেলাতে দলীয় দ্বন্দ্ব মিটিয়ে জেলায় ভেঙে পড়া সংগঠনকে সবদিক দিয়ে চাঙ্গা করতে উদ্যোগ নিতে দেখা গেল শুভেন্দু অধিকারীকে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!