এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > উপনির্বাচনের আগে আক্রান্ত বিজেপি নেত্রী, প্রকাশ্যে গোষ্ঠী কোন্দল, অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির

উপনির্বাচনের আগে আক্রান্ত বিজেপি নেত্রী, প্রকাশ্যে গোষ্ঠী কোন্দল, অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির

 

আগামী 25 নভেম্বর করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। তৃনমূলের দখলে এই কেন্দ্র থাকায় সেখানে তৃণমূলকে বিপাকে ফেলে বিজেপি ব্যাপক প্রচার শুরু করেছে। কিন্তু প্রচার শুরু করলেও যদি দলের অন্দরে কোন্দল থাকে, তাহলে কোনোমতেই জয় সম্ভব নয়। ইতিমধ্যেই অতীতের বেশ কয়েকটা নির্বাচনে তৃণমূলের অবস্থাতেই তা প্রমাণিত হয়ে গেছে বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের। আর এই পরিস্থিতিতে করিমপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে সেখানে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এল।

সূত্রের খবর, এবার দলীয় প্রার্থীর হয়ে সভা করতে যাওয়ার সময় আক্রান্ত হলেন বিজেপি নেত্রী বৈশালী দাস। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রানাঘাট থানার আনুলিয়া ঘোষ কলোনিতে তার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি এবং বোমা ছোড়া হয়। আর সেই বোমার আঘাতে তার গাড়ির কাচ ভেঙে গেলে একটি কাচ সেই বৈশালীদেবীর গায়ে লাগে। বর্তমানে তিনি রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এত পর্যন্ত সব ঠিকঠাক থাকলেও এবার বৈশালী দাস বিজেপির প্রদীপ মণ্ডলের বিরুদ্ধে গোটা ঘটনায় অভিযোগ করায় প্রবল চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিন হাসপাতালের শয্যা থেকেই বৈশালীদেবী বলেন, “আমাদের দলেরই প্রদীপ মণ্ডল এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। আমি আমাদের দলের শ্রমিক সংগঠনের রানাঘাট দক্ষিণ জেলার সভাপতি। আমার কাছে সেই কাগজ রয়েছে। কিন্তু তিনি এখন আমার জায়গায় নেতা হতে চাইছেন। শিমুরালির সভা পন্ড করতে প্রদীপ মণ্ডলের লোকজন চেষ্টা চালাচ্ছিল বলে জানতে পেরেছি। তার পরেও আমি সেই সভায় যেতে চেয়েছিলাম। এটাই আমার অপরাধ। আমাকে কোনোভাবে থামাতে না পেরে পৃথিবী থেকেই সরে দিতে চেয়েছিলেন। একটু সুস্থ হয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাব।”

জানা যায়, এই বৈশালীদেবী বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের অনুগামী বলে পরিচিত। অন্যদিকে যে প্রদীপ মণ্ডলের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেছেন, সেই প্রদীপবাবু বিজেপির মানবেন্দ্রনাথ রায়ের লোক হিসেবে পরিচিত। আর দুই গোষ্ঠীর দুই নেতার মধ্যে গন্ডগোল এদিন চরম ধারণ করল বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। যার ফলে আসন্ন বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে করিমপুরে বিজেপি নিজেদের কোন্দলে তীব্র অস্বস্তিতে পড়ল বলে মনে করছে একাংশ। যদিও বা বৈশালী দাস এই ধরনের মন্তব্য করলেও তা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন প্রদীপ মণ্ডল।

এদিন তিনি বলেন, “কয়েকদিন আগে আমাকে রানাঘাট দক্ষিণ জেলা শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখনও নতুন কমিটি গঠন করে উঠতে পারিনি। আমার বিরুদ্ধে উনি ঠিক কি বলছেন জানি না। তবে আমার কোথাও সেই অর্থে কোনো লোকজন নেই। কারা আক্রমণ করেছে জানি না। তাদের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। উনি কি করবেন, সেটা তার বিষয়।” এদিকে নির্বাচনের আগে দলের নেত্রী এইভাবে আক্রান্ত হওয়ায় জেলা নেতৃত্ব কি ভাবছে!

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে নদীয়া দক্ষিণ জেলা বিজেপির সভাপতি মানবেন্দ্রনাথ রায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “বৈশালী দেবীর আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার কথা আমি কিছু জানি না। অভিযোগ পেলে দেখব। ওনারা আলাদাভাবে এসে আমাকে জানিয়েছিলেন যে, ওরা শ্রমিক সংগঠনের রানাঘাট দক্ষিণ জেলা সভাপতি। কে আসল সভাপতি, তা শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতির কাছে জানতে পারা যাবে। এখানে দলের অন্দরে কোন্দলের কোনো বিষয় নেই।”

এদিকে এই গোটা বিষয়টি মানবেন্দ্রবাবুই ভালো বলতে পারবেন বলে জানান রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। আর জগন্নাথবাবুর এই কথা থেকেই স্পষ্ট যে, দলের অন্দরে প্রবল গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে বলে দাবি একাংশের। কিন্তু এরকম দ্বন্দ্ব যদি চলতে থাকে, তাহলে জয়লাভ করার পেছনে কাটা হিসেবে তো তাদের কোন্দলই দায়ী থাকবে! এদিকে এই প্রসঙ্গে কৃষ্ণনগরে প্রচার করতে আসা বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি মনে করি না যে রানাঘাটে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে এমন হয়েছে। আপনাদের কাছে যদি তেমন অভিযোগ এসে থাকে, আপনারা তদন্ত করুন।”

তবে মুকুলবাবু যে কথাই বলুন না কেন, যেভাবে বৈশালীদেবী দলের প্রদীপ মণ্ডলের দিকে অভিযোগ করলেন, তাতে গোষ্ঠী কোন্দল এখানে অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। তাই বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ধরনের ঘটনা বিজেপির কোন্দলকে যেমন বাড়িয়ে দিল, ঠিক তেমনই গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তিও অনেকটাই বৃদ্ধি পেল বলে মত রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!