এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > বাড়ছে উপনির্বাচনের উত্তাপ: লড়াইয়ে তৃনমূলের প্রতিশ্রুতির বন্যা বনাম বিজেপির হেভিওয়েট প্রচার

বাড়ছে উপনির্বাচনের উত্তাপ: লড়াইয়ে তৃনমূলের প্রতিশ্রুতির বন্যা বনাম বিজেপির হেভিওয়েট প্রচার

 

দক্ষিণপন্থীদের বিশেষত কংগ্রেসিদের ঘাঁটি বলেই পরিচিত উত্তর দিনাজপুর জেলা। রায়গঞ্জ থেকে কালিয়াগঞ্জে এককালে কংগ্রেসের পতাকা ছাড়া আর কিছু দেখা যেত না। কিন্তু প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই সেখানে কংগ্রেসের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে শুরু করে।

সদ্য সমাপ্ত 2019 এর লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি দখল করায় সেই কংগ্রেস দলে আরও অস্তিত্ব সংকট দেখা দেয়। তবে 2016 র বিধানসভা নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র দখল করেছিল কংগ্রেস। যেখানে বিধায়ক ছিলেন প্রমথনাথ রায়। কিন্তু তিনি পরলোকগমন করায় এবার তাঁর ছেড়ে যাওয়া এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে।

আগামী 25 নভেম্বর এই কেন্দ্রের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর কংগ্রেসের দখলে থাকা এই কেন্দ্র এবার নিজেদের দখলে আনতে ইতিমধ্যে তৎপর হয়ে উঠেছে তৃণমূল এবং বিজেপি। বিজেপির প্রার্থী কমল চন্দ্র সরকার এবং তৃণমূলের প্রার্থী তপন দেব সিংহকে জেতাতে দুই দলেরই রাজ্য নেতৃত্বরা ময়দানে নেমে পড়েছেন।

সূত্রের খবর, শুক্রবার কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে ঝড় তুলতে দেখা গেল জলপাইগুড়ি, কোচবিহারের বিজেপি সাংসদের পাশাপাশি বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে। এদিকে তৃণমূল প্রার্থী তপন দেব সিংহর হয়ে জোর প্রচার করেন রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। আর প্রচারে দুই দলের হেভিওয়েটরাই একে অপরকে টেক্কা দিয়ে, এক দল ক্ষমতায় এলে কি করবে, আর অন্য দল সরকারে থাকায় কি কি উন্নয়ন করেছে, তার কথা বলে ভবিষ্যতে কি উন্নয়ন করবে সেই প্রতিশ্রুতি দিতে শুরু করেছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন কালিয়াগঞ্জ শহরের 5 নম্বর ওয়ার্ডের পিরতলায় একটি নির্বাচনী প্রচারে তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে উপস্থিত হন রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই প্রচার সভা থেকেই সাধারণ মানুষের মন খুশি করতে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দেন মন্ত্রী মহোদয়। তিনি বলেন, “আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বর্তমানে এই বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। দেশের মধ্যে একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সাধারণ মানুষের জন্য পরিষেবা চালু করেছেন। কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা আমাদের হাতে আসার পর আমরা অনেক উন্নয়ন করেছি। আপনাদের কাছে অনুরোধ করব, একবার অন্তত পক্ষে আমাদের দলীয় প্রার্থীকে বিধানসভায় পাঠান। আমরা স্বাস্থ্য পরিষেবা ঢেলে সাজিয়ে দেব। 250 বেডের হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হবে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালকে। তৃণমূলই একমাত্র দল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী, যিনি বছরের 365 দিনই সাধারণ মানুষের পাশে থেকে মানুষের হয়ে কাজ করেন।”

এদিকে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হতেও দেখা যায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, “বিজেপি শুধুমাত্র ধর্মের নামে বিভেদ সৃষ্টি করছে।” এদিকে লোকসভা নির্বাচনের কথা তুলে ধরে বিজেপিকে ভোট দিয়ে কোনো উন্নয়ন হয়নি বলে দাবি করেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। তবে তৃণমূলের দুই হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী যখন কালিয়াগঞ্জে দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচার করছেন, ঠিক তখনই পার্শ্ববর্তী লোকসভার সাংসদদের এনে প্রচারে ঝড় তুলল বিজেপি।

জানা যায়, এদিন কালিয়াগঞ্জের অনন্তপুর, শেরগ্রাম, ফতেপুর ও বড়ুয়া এলাকায় কমল সরকারের প্রচার করেন কোচবিহারের নিশীথ প্রামানিক, জলপাইগুড়ির জয়ন্ত রায় এবং বালুরঘাটের সুকান্ত মজুমদার। যেখানে এনআরসি নিয়ে তৃণমূল মিথ্যে কথা বলছে বলে দাবি করার পাশাপাশি তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস এবং দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগ তুলে সরব হন এই বিজেপি সাংসদরা।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কংগ্রেসের দখলে এই কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থাকায় এখন রাজ্যের মূল দুই শক্তি তৃনমূল এবং বিজেপি দুজনেই চাইছে, এই কেন্দ্র দখল করে একে অপরকে টেক্কা দিতে। আর তাই তো দুই দলের হেভিওয়েট নেতা মন্ত্রী-সাংসদেরা এবার ময়দানে নামতে শুরু করেছেন। কিন্তু এত কিছু করেও শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসই এই কেন্দ্র দখলে রাখে, নাকি ঘাস বনাম পদ্মের লড়াইয়ে জমে ওঠে কালিয়াগঞ্জের মাটি, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!