এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > সিএএ নিয়ে সংঘর্ষে দিল্লি উত্তাল,জেরবার পুলিশ পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে

সিএএ নিয়ে সংঘর্ষে দিল্লি উত্তাল,জেরবার পুলিশ পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে


জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে সারা দেশজুড়ে আন্দোলন আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। পুঞ্জিভূত ক্ষোভ ক্রমশ বাড়তে বাড়তে আগ্নেয়গিরির আকার ধারণ করে। যার ফল সোমবার দিল্লিবাসী দেখলো। এতদিন ধরে দিল্লির শাহীনবাগে বিক্ষোভ সমাবেশ চলছিল। কিন্তু এবার সোজাসুজি সম্মুখ সমর শুরু হয়েছে। একদিকে সিএএ পক্ষের লোকজন, অন্যদিকে সিএএর বিপক্ষে। দুই পক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়ছে। এখানেই শেষ নয়, উন্মত্ত জনতার রোষ গিয়ে পড়েছে রাস্তার ধারে দাঁড়ানো গাড়ি, বাইক, স্কুটির ওপর। এর মধ্যেই বিক্ষোভ আটকাতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে এক পুলিশ কনস্টেবলের। দিল্লির বিভিন্ন জায়গা থেকে মৃত্যুর খবর উঠে আসছে।

সোমবার থেকেই দিল্লির পরিস্থিতি রীতিমতো উত্তাল। এই সময়ে আবার দিল্লিতে এসে উপস্থিত হয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থাকাকালীন এরকম অশান্তির আবহাওয়া সৃষ্টি হওয়ায় যথেষ্টই অস্বস্তিতে পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যে এই অশান্তিকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সূত্রের খবর, সোমবার দুপুরে এক পুলিশ কর্মীসহ সাত জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এই সংঘর্ষের ফলে এখনো পর্যন্ত জানা গেছে প্রায় শতাধিক আহত হয়েছে। পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে দেখেই ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সাথে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৈঠকে বসেছেন। অন্যদিকে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বিজেপি নেতাদের বারংবার উস্কানির ফলেই কি এই চরম অশান্তির সৃষ্টি হল দিল্লিতে?

এদিন দিল্লির বিজেপি সাংসদ গৌতম গম্ভীর এ প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ‘কপিল মিশ্রই হোক বা অন্য কেউ, যে পার্টিরই সদস্য হোক, যদি কেউ উস্কানিমূলক বক্তব্য রেখে থাকেন, তাহলে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।’ রাজনৈতিক মহলের দাবি, গৌতম গম্ভীর পরিষ্কার করে অভিযোগের আঙুল তুললেন কপিল মিশ্রের দিকে এবং নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে দিলেন। অন্যদিকে, সদ্যসমাপ্ত দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী মনোজ তিওয়ারিও একই সুরে বলেন, দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থীর হারের পেছনের কারণ একমাত্র দিল্লির বিজেপি নেতাদের প্ররোচনামূলক মন্তব্য। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে মনোজ তিওয়ারিও নাম না করে কপিল মিশ্রের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।

উল্লেখ্য, সিএএ নিয়ে যে আন্দোলন চলছে দেশজুড়ে, সেখানে বিভিন্ন সময় বেশ কিছু বিজেপি নেতাদের উস্কানিমূলক মন্তব্য করতে দেখা গেছে। কেউ আন্দোলনকারীদের সমাজবিরোধী বলেছেন, কেউ তাঁদের গুলি করে মারার নিদান দিয়েছেন। অন্যদিকে অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সাথে যে বৈঠকে তিনি বসেছিলেন, তা ইতিমধ্যে ফলপ্রসূ হয়েছে। তবে দিল্লীতে যে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে তা ইতিমধ্যে বন্ধ করার জন্য দেশের বিভিন্ন মহল থেকে আবেদন জানানো শুরু হয়েছে।

সূত্রের খবর, সব থেকে ভয়াবহ অবস্থা এই মুহূর্তে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে। বিভিন্ন দৃশ্য ধরা পড়ছে সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়। অন্যদিকে দিল্লি পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, সোমবার যেভাবে উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিস্তীর্ণ এলাকা রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে তা পূর্বপরিকল্পিত। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বহুদিন ধরেই এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে দেশবাসীর মনে ক্ষোভ জমা হচ্ছে। এবার সময় এসেছে পুরো ব্যাপারটি নিয়ে ভাবনা চিন্তা করার। অন্যদিকে রাজনৈতিক মহলের দাবি, নাগরিকত্ব ইস্যুকে কেন্দ্র করে এমনিতেই বিজেপি শিবির যথেষ্ট কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে। তারমধ্যে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উপস্থিতিতে এ ধরনের অশান্তি তাঁদেরকে লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে ফেলল। আপাতত পরিস্থিতি কোন দিকে এগোচ্ছে সেদিকে নজর রাখবে ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!