সিএএ নিয়ে জোড়া ধাক্কা রাজ্যের! স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কড়া নির্দেশিকা, হাইকোর্টের রিপোর্ট তলব কলকাতা রাজ্য December 17, 2019 নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আইনে পরিণত হওয়ার পর থেকেই ক্রমশ অস্বস্তির বেড়েই চলেছে বাংলার তৃণমূল সরকারের। প্রথম থেকেই এই বিলের বিরোধিতা করতে দেখা গেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। তবে এই বিল আইনে পরিণত হওয়ার পর, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রবল বিক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে। কোথাও বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভে ভস্মীভূত হয়েছে স্টেশন, আবার কোথাও বা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাস। এই পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করার কথা বলে বারবার বিক্ষোভকারীদের শান্ত থাকার নিদান দিয়েছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। তবে তা সত্ত্বেও সেই বিক্ষোভ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আর নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের পরিপ্রেক্ষিতে যে ব্যাপক হাঙ্গামা সৃষ্টি হয়েছে বাংলায় এবং তাতে যে ক্ষতি হয়েছে, তার ব্যাপারে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল বি রাধাকৃষ্ণাণের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। বস্তুত, এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাসের পর বাংলায় কোথাও ট্রেন পুড়িয়ে দেওয়া, আবার কোথাও বাস জ্বালিয়ে দেওয়ায় যে বিপুল সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে, তার ব্যাপারে সম্প্রতি হাওড়া জেলার বিজেপি নেতা সুরজিৎ সাহা মামলা দায়ের করেন। জানা গেছে, এদিন সুরজিৎবাবুর আইনজীবী স্মরজিত রায়চৌধুরী আদালতে বলেন, “এই কেন্দ্রীয় আইন রাজ্যে কার্যকর করতে দেব না বলার এক্তিয়ার রাজ্য সরকারের নেই। রাজ্যের শাসক দলের তরফে এমন মন্তব্য করায় যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে রেলের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি পূরণ করার নির্দেশ রাজ্যকে দেওয়া হোক। সেই সঙ্গে যেসব নাগরিক এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত, তাদেরও ক্ষতিপুরণ দেওয়া উচিত রাজ্যের।” আর বিজেপি নেতার আইনজীবী রাজ্যের অস্বস্তি বাড়িয়ে এহেন দাবি করার পরই বিচারপতিদের বেঞ্চ রাজ্যকে এই ব্যাপারে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ফলে এবার রাজ্য সরকার এই ব্যাপারে ঠিক কি রিপোর্ট জমা করে আদালতে, সেদিকে নজর থাকবে সকলেরই। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অন্যদিকে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে রাজ্যে হিংসার ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনার নির্দেশ দিয়ে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সূত্রের খবর, সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ডেপুটি সচিব শ্রী নিবাসন কে রাজ্যের মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং কলকাতা পুলিশের কমিশনারকে একটি লিখিত বার্তা পাঠান। যেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়, “রাজ্যে যে উন্মত্ত জনতা হিংসা চালাচ্ছে, তাতে রেল স্টেশন, রেলের সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। রেল পুলিশ এবং অন্যান্য কর্মীরা আহত হচ্ছেন। হিংসা নিয়ন্ত্রণ, জীবন এবং সম্পদহানি রুখতে রাজ্য অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস প্রথম থেকেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এর বিরোধিতা করে আসছিল। পরে সেদিক থেকে এই বিল আইনে পরিণত হওয়ার পর রাজ্যের কিছু জনতা যাত্রী পরিষেবা, ট্রেন বাস পরিষেবা অচল করে দেওয়ার পর রাজ্যে যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাতে কেন্দ্র বর্তমানে রাজ্য প্রশাসনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে। তবে রাজ্যের প্রশাসনের তরফ থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পক্ষে বরাবরই সওয়াল করা হয়েছে। কিন্তু তা না করে যেভাবে উন্মত্ত জনতা বিক্ষোভে নেমেছে, তাতে রাজ্য প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করে রাজ্যে শান্তি ফেরাতে এবার কড়া নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তবে একদিকে আদালতের পক্ষ থেকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ, আর অন্যদিকে রাজ্যে শান্তি ফেরাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশ নির্দেশ যে এখন ব্যাপক চাপে পড়তে চলেছে বাংলার প্রশাসন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত প্রায় সকলেই। এখন গোটা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসন কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে! সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -