এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > CAA নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা নেই, বরং এই অস্ত্রেই হবে নির্বাচনে বাজিমাত, কার্যত নিশ্চিত বিজেপি

CAA নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা নেই, বরং এই অস্ত্রেই হবে নির্বাচনে বাজিমাত, কার্যত নিশ্চিত বিজেপি

গোটা দেশজুড়ে ইতিমধ্যেই এনআরসি এবং সিএএ বিরোধিতা করে আন্দোলনে শরিক হয়েছে একাধিক বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে আগামী পৌরসভা ভোটকে মাথায় রেখে নিজেদের প্রচারের প্রধান অস্ত্র হিসেবে সংশোধিত নাগরিক আইন অর্থাৎ সিএএকেই ব্যবহার করতে চায় পদ্মফুল শিবির। সম্প্রতি ব্যারাকপুর পৌরসভা ভোটের আগাম প্রস্তুতি হিসাবে এরকম ধরনের কথাই শোনা গিয়েছে রাজ্যস্তরের ভারতীয় জনতা পার্টির নেতাদের কন্ঠে।

বস্তুত, ব্যারাকপুর এলাকায় 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীকে পরাজিত করে অনেক ভোটে জিতেছেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী অর্জুন সিংহ। লোকসভা নির্বাচনের পৌরসভা ভিত্তিক ফলাফল দেখা গিয়েছিল, এলাকার আটটি পৌরসভার মধ্যে 6 টি পৌরসভাতেই এগিয়ে গিয়েছিল পদ্মফুল শিবির। এমনকি পরবর্তীতে এলাকার বেশ কয়েকটি তৃণমূলের জিতে থাকা পৌরসভা ভারতীয় জনতা পার্টির দখলে চলে যায়।

তবে এই যাত্রা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বিজেপিতে যোগদান করার কয়েক মাসের মধ্যেই পুনরায় তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসে পৌরসভাগুলির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য। যার কারণে পুনরায় হাতছাড়া হয়ে যাওয়া পৌরসভাগুলি দখলে চলে আসে রাজ্যের শাসকদলের। কিন্তু এবার পৌরসভা নির্বাচন আসন্ন মনে করেই এলাকার আটটি পৌরসভাকেই রীতিমত টার্গেট করেছে বঙ্গ বিজেপি। নির্বাচনী যুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রচারের ব্রম্ভাস্ত্র হিসাবে ভারতীয় জনতা পার্টি যে সংশোধিত নাগরিক আইনকেই ব্যবহার করতে চায়, সেই বিষয়ে প্রশ্নের কোনো অবকাশ নেই।

কারণ ইতিমধ্যেই এই এলাকায় প্রত্যেকটি মন্ডল সভাপতিদেরকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই স্থানীয় নেতৃত্বদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পৌরসভা নির্বাচনের প্রচার হিসেবে সিএএকেই মূল তালিকায় রাখতে হবে। শুধু তাই নয়, রীতিমতো লিফলেট, পোস্টার, ব্যানার ইত্যাদি তৈরি করে মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে গেরুয়া শিবিরের স্থানীয় নেতাদের।

এমনকি তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে আঘাত আসলেও কোনোরকম প্রত্যাঘাত করা যাবে না বলে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে প্রচারের ক্ষেত্রে বিজেপি নেতৃত্ব যত বাধাপ্রাপ্ত হবে, তত বেশি করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে পারবে গেরুয়া শিবির বলে মত ভারতীয় জনতা পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের। যদি কোনো বাড়িতে সামনের দরজায় বাধা আসে, তাহলে পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকতে হবে, এমনটাও শোনা যায় পদ্মফুল শিবিরের নেতাদের মুখে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু শুধু সংশোধিত নাগরিক আইন নয়, প্রচার তালিকায় রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে পুলিশি সন্ত্রাস, শাসক দলের নেতাদের তোলাবাজি, তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ দলীয় কোন্দল ইত্যাদি বিষয়। মন্ডল সভাপতিদেরকে নিয়ে এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় সিং। পৌরসভা ভোটের আগাম প্রস্তুতি হিসাবে এই বৈঠকে 27 জন মন্ডল সভাপতি সম্মিলিত হয়েছিলেন।

ওই বৈঠক থেকেই পৌরসভা নির্বাচনের প্রচার তালিকা ঠিক করে দিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব বলে খবর। তৃণমূল কংগ্রেসের পুলিশি নির্ভরতা আগামী দিনে যত বাড়বে, ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষে ততই সুবিধা হবে বলেও আলোচনা হয়েছে এই সভাতে, এমনটাই জানা যাচ্ছে বিজেপি সূত্রে। আবার এদিনের সভার পরপরই জেলা সভাপতি পদে ফাল্গুনী পাত্রের পরিবর্তে উমাশঙ্কর সিংকে স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।

স্বাভাবিকভাবেই এইরকম সময় দলীয় সভাপতি পরিবর্তনের কারণে কিছুটা অসন্তোষ দেখা দিয়েছে সদ্য প্রাক্তন জেলা সভাপতি ফাল্গুনী দেবীর ঘনিষ্ঠ শিবিরে। যদিও এই ব্যাপারে বিশেষ আতঙ্কিত নন ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য নেতৃত্ব বলে জানা যাচ্ছে। নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা সভাপতি উমাশঙ্কর সিং বলেন, “পৌরসভা ভোটে আমাদের প্রথম ইসু সিএএ নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচার চলবে কোনো বাড়ি বাদ দেব না।”

নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা সভাপতি বলেন, “প্রচার তালিকা সংশোধিত নাগরিক আইনের পাশাপাশি পুলিশের সন্ত্রাস তৃণমূলের নেতাদের তোলাবাজি, কাটমানি ইত্যাদি তৃণমূল বিরোধী ইস্যু অবশ্যই থাকবে।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রথমদিকে যেভাবে এনআরসি এবং সিএএ বিরোধিতা করে ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে প্রচারে দিক থেকে বিজেপি থেকে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল।

রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস, বর্তমান পরিস্থিতি কিন্তু সেরকম নেই। কারণ ইতিমধ্যেই অভিনন্দন যাত্রা থেকে শুরু করে পথসভা, মিটিং, মিছিল ইত্যাদি করে রাজ্যের মধ্যে সংশোধিত নাগরিক আইনের সমর্থনে অনেকগুলো সভা করতে দেখা যাচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টিকে। তাই আগামী দিনে প্রচারের ক্ষেত্রে যদি সংশোধিত নাগরিক আইনকে কাজে লাগাতে চায় বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব, তাহলে মানুষের মধ্যে তা নিয়ে কি রকম প্রভাব পড়বে!

সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে ওয়াকিবহাল মহলের। এমনকি ভোটের হিসেবে প্রচার বিজেপির পক্ষে যায়, নাকি সেলফ গোল খেয়ে বসে গেরুয়া শিবির নেতারা! সেদিকেও নজর থাকবে বিশ্লেষকদের। তবে সিএএ নিয়ে কোনও চিন্তা নেই – উল্টে এই অস্ত্রেই নির্বাচনী যুদ্ধে বাজিমাত করা যাবে বলে কার্যত নিশ্চিত গেরুয়া শিবিরের নেতারা। বিশেষ করে একবার সিএএ চালু হয়ে গেলে – এই নিয়ে মানুষের মধ্যে যে বিভ্রান্তি আছে, তা কার্যত দূর হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন তাঁরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!