এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > সিএবি নিয়ে জ্বলছে গোটা রাজ্য! কি বলছেন বাংলার বিদ্বজনেরা?

সিএবি নিয়ে জ্বলছে গোটা রাজ্য! কি বলছেন বাংলার বিদ্বজনেরা?


 

সম্প্রতি লোকসভা এবং রাজ্যসভায় পাশ হয়ে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের স্বাক্ষরের পরে সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট বিল সংশোধিত নাগরিক আইনে পরিণত হয়ে গেছে। কিন্তু বিগত দুদিন থেকেই এই আইনের বিরোধিতা করে ভারতবর্ষের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলি থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ এবং সহিংস প্রতিবাদের ছবি সামনে আসতে শুরু করে। আর এবার সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নাম।

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চলন্ত ট্রেন ঢিল মারা, স্টেশন ভাঙচুর, রাস্তাঘাট অবরোধ, বাসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া ইত্যাদি আইনের শাসন লঙ্ঘনকারী বিক্ষোভের ছবি সামনে আসতে শুরু করেছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি জারি করে কড়া বার্তা দিতে দেখা গিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে। আন্দোলনের নামে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা, ট্রেনে পাথর ছোড়া, আগুন ধরানো, বাসে আগুন দেওয়া ইত্যাদি যে কোনভাবেই বরদাস্ত করবে না রাজ্য সরকার, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে।

মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতিতে এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, শুক্রবার দিন থেকেই অসম ত্রিপুরা ইত্যাদি উত্তর-পূর্ব রাজ্যে সিএবি বিরোধিতায় সংগঠিত আন্দোলনের মাশুল গুনতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ 24 পরগনা থেকে শুরু করে মুর্শিদাবাদ, মালদা থেকে শুরু করে রাজধানী কলকাতা, সর্বত্র আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে হিংসা রাস্তা বেছে নেওয়াকে রীতিমত ভৎসনা করতে দেখা গিয়েছে দেশের বুদ্ধিজীবী বর্গ থেকে শুরু করে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ দেখতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফ থেকেও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করার বার্তা দেওয়া হয়েছে বিক্ষোভকারীদেরকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু পাশাপাশি আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কেউ রেহাই পাবে না তাও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুদ্ধিজীবীদের তরফ থেকে অপর্ণা সেন, অরুন্ধতী রায় সহ অনেক গুণী মানুষ আগেই কেন্দ্রীয় সরকারকে সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট বিল বিরোধিতা করে চিঠি দিয়েছিলেন। সংশোধিত নাগরিক আইন বিরোধিতায় আন্দোলনের যে সহিংসতা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, সেই বিষয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে। এই বিষয়ে অপর্ণা সেন থেকে শুরু করে অন্যান্য বুদ্ধিজীবীদের মতে গণতন্ত্রের পথে আন্দোলন করা উচিত।

আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে তারা বলেছেন, শান্তি বজায় রাখুন। ভাঙচুর নয়, যেকোন ইস্যু চরমে পৌছলে হিংসাত্মক পথ নেয়, সেই জায়গায় মাথা ঠান্ডা রেখে প্রতিবাদ করা বুদ্ধিমত্তার পাশাপাশি বাংলায় প্রতিবাদ যেভাবে হচ্ছে, তা সমর্থনযোগ্য নয় বলেও মত প্রকাশ করেন বুদ্ধিজীবীরা। এছাড়াও কোনো প্রকারেই যেন সরকারি সম্পত্তিকে নষ্ট না করা হয়, সেই বিষয়ে আবেদন করা হয়েছে বুদ্ধিজীবীদের তরফ থেকে।

অপরদিকে প্রষিদ্ধ লেখক সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আইন জোর করে চাপানো উচিত নয়। এরকম বিশৃংখল আন্দোলন মোটেই সমর্থন করা যায় না। সংশোধিত নাগরিক আইন নিয়ে কৌশিক সেন থেকে শুরু করে বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত পর্যন্ত একাধিক বুদ্ধিজীবী কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা করেছে। তবে নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেনের মতে, আন্দোলন যেরকম হিংসাত্মক পথ নিচ্ছে, তাতে আখেরে লাভ হবে বিজেপির। তিনি আরও বলেন, “আন্দোলনের এমন ভাষাকে বিশ্রী হিংসাত্মক চিত্র দিয়ে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করবে গেরুয়া দল। যে অশান্তিতে সুবিধা হবে ওদের।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের মূল প্রভাব দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের থেকেও বেশি পড়তে চলেছে পশ্চিমবঙ্গে। কারণ গোটা ভারতবর্ষে সবচেয়ে বেশি উদ্বাস্তুদের বসবাস বাংলাতেই। এক্ষেত্রে সংশোধিত নাগরিক আইনের ফলে যেমন আফগানিস্তান, পাকিস্তান বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন সহ অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকতা পেতে সুবিধা হবে, তেমনই আশঙ্কার বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে ভারতের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মনে। কিন্তু আশঙ্কা যেরকমই সৃষ্টি হোক না কেন, রাজ্য প্রশাসন যদি কোনো প্রকার সহিংস আন্দোলনকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম না হয়, সেক্ষেত্রে কিন্তু অনেক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!