এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা >  সিএবি নিয়ে জ্বলছে রাজ্য! মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া বার্তা রাজ্যপালের! বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি মমতার

 সিএবি নিয়ে জ্বলছে রাজ্য! মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া বার্তা রাজ্যপালের! বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি মমতার


 

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে কার্যকাল শুরু করার পর থেকেই ছোট-বড় নানান বিষয়ে রাজ্য সরকারের বিপরীত মন্তব্য করতে দেখা যায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকারকে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে অবস্থান প্রসঙ্গে সশরীরে সেখানে পৌঁছে যাওয়া থেকে শুরু করে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় রাজ্যপাল হিসেবে প্রশাসনিক বৈঠক করতে গিয়ে আমলা তথা রাজনৈতিক জনপ্রতিনিধিদের অনুপস্থিতিকে কটাক্ষ করা, দূর্গাপূজা কার্নিভাল অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলেও নিজেকে অপমানিত করার অভিযোগ থেকে শুরু করে নানা প্রসঙ্গেই সরকারের সঙ্গে তীব্র বিপরীত মেরুতে অবস্থান করতে দেখা যায় রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে।

সম্প্রতি কয়েকদিন আগে রাজ্য বিধানসভার আনা এসসি, এসটি বিলে স্বাক্ষর না করে কার্যত সরকারের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন রাজ্যপাল। কিন্তু এই সবকিছুর ঊর্ধ্বে সম্প্রতি সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট বিল নিয়ে এবং তার রাজ্যে সংঘঠিত সহিংস প্রতিবাদ কটাক্ষ করে রাজ্য সরকারকে এবং মুখ্যমন্ত্রীকে এবার কড়া বার্তা দিতে দেখা গেল সংবিধানিক প্রধান রাজ্যপালকে। উল্লেখ্য, গত বুধবার রাজ্যসভা থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হওয়ার পরে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত্রে সেই বিলে স্বাক্ষর করেন মহামহিম রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।

যার পরেই বর্তমানে সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট বিল আইনে পরিণত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভারতবর্ষে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর পাশাপাশি এই আন্দোলনের বিরোধিতা করতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তেও ভয়ানক বিশৃংখলা, সহিংস আন্দোলন, বাসে আগুন লাগানো, রেললাইন অবরোধ, চলন্ত ট্রেনে ঢিল ছোড়া, যাত্রীদের হেনস্থা, পথ অবরোধ সহকারে বিভিন্ন ঘটনার ছবি সামনে আসতে শুরু করে রাজ্যজুড়ে। যাতে রীতিমতো উদ্বেগের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, সেই বিষয়ে প্রায় একমত সব বিশেষজ্ঞরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বিক্ষোভের জেরে শিয়ালদা- হাসনাবাদ শাখার রেল চলাচল ভোরবেলা থেকেই বন্ধ রয়েছে। লক্ষ্মীপুর, নামখানা, মালদা, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ইত্যাদির পাশাপাশি বিক্ষোভকারীদের প্রদর্শন থেকে বাদ পড়েনি মহানগরী কলকাতাও। একাধিক জায়গায় অগ্নিসংযোগ, প্রধানমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা দাহ সহ ভিন্ন ভিন্ন রকমের প্রশাসনিক বিশৃংখলার চিত্র ফুটে ওঠে সর্বত্র। যদিও এই বিষয়ে রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন। স্পষ্ট ভাষায় তিনি বলেন, “এই অশান্তি বরদাশ্ত করা হবে না এবং অশান্তি সৃষ্টিকারীদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনকে কড়া বার্তা দিলেও এই বিষয়ে কার্যত রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। এদিন এই বিষয়ে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে বলেন, “এই মুহূর্তে রাজ্যে যা করছে, তাতে আমি অত্যন্ত আহত। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ায় সংবিধানের উপর আস্থা থাকা উচিত ওনার। তবে রাজ্যপাল হিসেবে সংবিধান এবং আইন রক্ষা করতে সাধ্যমত চেষ্টা করব আমি।”

আর রাজ্যপালের এই বক্তব্যের মাধ্যমেই স্পষ্ট, সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট বিল নিয়ে রাজ্য সরকার যে অবস্থান গ্রহণ করুক না কেন, নিজের পদাধিকার প্রয়োগ করতে কিন্তু পিছপা হবেন না পশ্চিমবঙ্গের সাংবিধানিক প্রধান। সম্প্রতি এনআরসি এবং সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট বিল নিয়ে একাধিকবার বিরোধিতা করতে দেখা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এদিন আবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভুল বোঝাবুঝি করবেন না। কোনোরকম উত্তেজনা ছড়াবেন না। কোনো প্ররোচনায় পা দেবেন না। সাম্প্রদায়িক উস্কানিতে কান দেবেন না। নিশ্চিন্তে থাকুন। বাংলায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জী কার্যকারী হচ্ছে না।”

যদিও এদিনই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কেন্দ্রীয় তালিকাভুক্ত আইন না মানার কোনো রকম অধিকার নেই রাজ্য সরকারের। এক্ষেত্রে রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের যদি কোনরকম সাংবিধানিক লড়াই তৈরি হয়, সেই ক্ষেত্রে রাজ্যপাল যে কড়া অবস্থান গ্রহণ করবেন, তা এদিন জগদীপ ধনকারের মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট। যদিও রাজ্যপালের এই মন্তব্যকে রীতিমতো কটাক্ষ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। গোটা পরিস্থিতিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দক্ষ হাতে সামাল দিচ্ছেন বলেও ব্যাখ্যা করেন শিক্ষামন্ত্রী।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোট-বড় নানান ইস্যুতে যেমন রাজ্যপালকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধংদেহী মূর্তি ধারণ করতে দেখা গিয়েছে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধিতায় যদি রাজ্যে সেরকম প্রকারের কোনো বিশৃঙ্খলা দেখা যায়, সেক্ষেত্রে সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে রাজ্যপালের ভূমিকা কি হবে! তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!