কোন পথে সিএবি বিরোধিতা? তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল চরম সীমায়? হতাশা বাড়ছে কর্মীদের উত্তরবঙ্গ কলকাতা রাজ্য December 17, 2019 নাগরিকপঞ্জী আইনের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক উপায়ে দলকে রাস্তায় নামার নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু দলের নেতায়-নেতায় গন্ডগোলে সেই বিরোধী দল বিজেপিকে কিভাবে কোণঠাসা করা যাবে! তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কমানো উচিত, নাকি বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত! এখন এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের অন্দরমহলে। সূত্রের খবর, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে রবিবার উত্তর দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন ব্লকে সিএবির বিরোধিতা করতে দেখা যায় তৃণমূল কংগ্রেসকে। তবে পৃথকভাবে ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী তার নিজের ঘোষিত ব্লক কমিটিকে নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকাতে একটি মাঠে সভা করেন। তবে জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের ঘোষিত ব্লক সভাপতি জাকির হোসেনের নেতৃত্বে ইসলামপুরের রামগঞ্জে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। আর বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের কর্মসূচি একসাথে না হয়ে পৃথক পৃথকভাবে হওয়ায়, তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলই প্রকাশ্যে চলে আসছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বস্তুত, ইসলামপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি পদ নিয়ে সেখানকার বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইলাল আগরওয়ালের দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল সেখানকার ব্লক সভাপতি হিসেবে জাকির হোসেনকে ঘোষণা করলে, বিধায়ক করিম চৌধুরী নিজের ছেলে মেহতাব চৌধুরীকে সেখানকার ব্লক সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করে দেন। আর তারপর থেকেই বিভিন্ন সময়ে করিম চৌধুরী বনাম কানাইলাল আগরওয়ালের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - আর সিএবি বিরোধিতায় যখন দলকে ময়দানে নামার নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, ঠিক তখনই ইসলামপুরের দুই নেতার পৃথক পৃথক সভা নিঃসন্দেহে বিড়ম্বনা বাড়ানোর বাড়াল তৃণমূলের। বিজেপির বিরোধিতা যখন একসাথে পথে নামা উচিত, তখন কেন তিনি পৃথকভাবে সভা করছেন! এদিন এই প্রসঙ্গে করিম চৌধুরী বলেন, “আমার এই দিনের কর্মসূচি পূর্বঘোষিত। এই কর্মসূচির সঙ্গে জেলা কমিটির নির্দেশের কোনো সম্পর্ক নেই। তৃণমূল কংগ্রেসের একটি গোষ্ঠী চা বাগানের জমি দখল করে নিচ্ছে। প্রতিবাদ করলে মানুষকে হুমকি দিচ্ছে। এর প্রতিবাদেই পাটাগুড়িতে এই সভা। সেই সভায় আমরা সিএবি ও এনআরসির বিরোধিতাও করেছি। কেন্দ্র সরকারের নীতির ফলে মানুষকে বিভাজন করছে। সংবিধানকে মানছি না। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। আমরাও তার সৈনিক। তাই আমরাও আন্দোলন করছি।” তবে এই ব্যাপারে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল বলেন, “রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে জেলার সমস্ত ব্লকেই কর্মীরা বিক্ষোভ কর্মসূচির মাধ্যমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরোধিতা করেছে। আমাদের মধ্যে কোনো গোষ্ঠী কোন্দল নেই।” কিন্তু জেলা তৃণমূল সভাপতি যে কথাই বলুন না কেন, করিম চৌধুরীর পৃথক সভা নিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতির অনুগামী পরিচিত ইসলামপুর ব্লক সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, “আমি দলের নির্দেশে সভা করেছি। অন্য কে কোথায় সভা করেছে, তা আমার জানা নেই।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলকে বিরোধিতা করতে গেলে আগে নিজেদের একত্রিত হতে হবে। কিন্তু তা না করে সিএবির মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে একসাথে রাস্তায় না নেমে যেভাবে বিধায়ক এবং ব্লক সভাপতি পৃথক পৃথক মিটিং করলেন, তাতে দলের শৃঙ্খলা নিয়েই বড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিল বলে মত বিশেষজ্ঞদের। আপনার মতামত জানান -