প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গত ১৪ ই জুনের দিনটিকে আমরা একটি বিনামেঘে বজ্রপাতের দিন হিসাবে নির্দেশ করতে পারি। কারণ, এদিন মুব্বাইয়ের বান্দ্রায় নিজের ফ্লাটবাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হন বিখ্যাত বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত কিন্তু ততক্ষনে তার জীবনদীপ নির্বাপিত হয়ে গেছে। বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ হিসাবে প্রথমদিকে তাঁর মানসিক অবসাদকে দায়ী করা হয়েছিল। এমনও বলা হয়েছিল যে, বলিউডে অভিনয়ের সুযোগ না মেলায় মানসিক অবসাদগ্রস্থ হয়ে তিনি আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন।

তাঁর ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও তাঁর আত্মহত্যার কথাই বলা হয়েছিল। কিন্তু তার পর থেকে সময় যতই এগিয়েছে ততই ঘনীভূত হয়েছে তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যুর রহস্য। তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত চালাতে গিয়ে মুম্বাই পুলিসের একের পর এক জেরা চলতে থাকে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের ডাক পান বহু স্বনামধন্য বলিউড ব্যক্তিত্ব।

এরপরেই সন্দেহ করা হয় আত্মহত্যা নয় হত্যা করা হয়েছে অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতেকে। সুশান্ত সিং রাজপুতের পিতা কে কে সিং সুশান্তের বাঙালি বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ করেছেন। মুম্বাই পুলিশের কাজকর্মের উপরে আস্থা রাখতে না পেরে সুশান্তের পিতা কে কে সিং বিহার পুলিসের কাছে ৬টি ধারায় বান্ধবী রিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আত্মহত্যায় প্ররোচনা ছাড়াও তিনি ছেলের বান্ধবী রিয়ার বিরুদ্ধে ১৫ কোটি টাকা আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ ও দায়ের করেছেন। এরপর পিতা কে কে সিং এর করা এফআইআরের ভিত্তিতে বিহার পুলিশের এক বিশেষ দল মুম্বাই পৌঁছায়। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ রিয়ার বাড়িতে গেলেও সেখানে কারোর দেখা মেলেনি। বেমালুম বেপাত্তা বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী। এতেই ঘনীভূত হয় সন্দেহের তীর। আর এবার সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যু মামলায় এল নতুন মোর।

সংবাদসূত্রে জানা গেছে, সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু মামলার সঠিক তদন্তের জন্যে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করলেন, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই সকালে সুশান্ত সিং রাজপুতের পিতা কে কে সিং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের সঙ্গে তাঁর পুত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। গতকাল সোমবার তিনি এবিষয়ে একটি ভিডিওও সামনে এনেছিলেন। আর এই ভিডিওটির মাধ্যমে জানা গেছে, তিনি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসেই পুত্র সুশান্তের জীবন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন ও তাঁর এই আশঙ্কার কথা তিনি মুম্বাই পুলিশকেও বিশেষভাবে অবগত করিয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, সুশান্তের পিতা কে কে সিং এর সঙ্গে কথপোকথনের পরেই মুখ্যমন্ত্রী সুশান্ত সিং এর মৃত্যুর তদন্তে সিবিআই এর হস্তক্ষেপের সুপারিশ করেছেন। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “বিহার সরকার বিষয়টি নিয়ে সিবিআই তদন্তের জন্য বলবে।” মুখ্যমন্ত্রী এপ্রসঙ্গে আরো জানিয়েছেন যে, সুশান্ত সিং রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তের জন্য তিনি সুশান্তের পরিবারের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী আরো জানিয়েছেন যে, এই তদন্তের জন্য সুশান্তের পরিবার পুলিশের উপরে বিশেষ আস্থাশীল নয়। তাই তাঁরা চাইছেন এ ব্যাপারে সিবিআই তদন্ত।