এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > চাকরি পাননি প্রাক্তন মাওবাদীরা , ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতির সামনেই

চাকরি পাননি প্রাক্তন মাওবাদীরা , ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতির সামনেই


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – যে মাওবাদীদের সঠিক রাস্তায় নিয়ে আসার কথা বলে উন্নয়নের ভিত্তিতে জঙ্গলমহলের মন জিতেছিলেন তৃণমূল নেত্রী, সেই মাওবাদী স্কোয়াডের সদস্যরাই এবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিলেন। রাজ্যে বঞ্চনার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে সর্বত্র। আর এবার বঞ্চনার তালিকায় নাম যুক্ত হলো মাওবাদী স্কোয়াডের বিভিন্ন সদস্যদের। তাঁদের দাবি, বরাবর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সরকারি চাকরি দেওয়ার, কিন্তু দেখা যাচ্ছে চাকরি দেওয়ার নামে রীতিমত প্রহসন চলছে। এই অভিযোগ কমবেশি সবারই। এদিন সরকারের 10 বছরে রিপোর্ট কার্ড নিয়ে সভা করতে এসেছিলেন জনসাধারণের কমিটির অন্যতম নেতা বর্তমান বলরামপুর তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি।

তাঁর সামনেই মাওবাদী স্কোয়াডের সদস্যরা নিজেদের অভিযোগ তুলে ধরেন। প্রসঙ্গত এই সভায় পুরুলিয়া বরাবাজার থানার বেড়াদা গ্রামের অদূরে শতাধিক প্রাক্তন মাওবাদী স্কোয়াড সদস্য জড়ো হয়েছিলেন। একসময় পুরুলিয়ার বরাবাজার বলরামপুর, আরসা সহ নটি এলাকায় মাওবাদীদের দৌরাত্ম্য ছিল অত্যধিক। পুলিশের অস্ত্র লুট করা থেকে শুরু করে সিপিআইএম কর্মী-সমর্থকদের খুন করা কিছুই বাকি ছিলনা। 2011 নির্বাচনের আগে বাম শিবির থেকে অভিযোগ ওঠে তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূলের সঙ্গে একসাথে কাজ করছে মাওবাদীরা। এবং সেই অভিযোগ আরও তীব্র হয় সিঙুর নন্দীগ্রাম লড়াইয়ের পটভূমিকায়। আর এবার সেই মাওবাদীরাই বর্তমান শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হলেন।

প্রসঙ্গত, সরকারের ঘোষিত নীতি ছিল, মাওবাদী স্কোয়াডের সদস্য যারা ছিলেন বা বা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন যারা, তাঁদের পরিবারের প্রত্যেককে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। অবশ্য ঘোষিত সেই নীতি অনুযায়ী জঙ্গলমহলের অনেকেই চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু তাও এখনো অনেকেই বঞ্চিত হয়েছেন। আর তাই এবার তাঁদের বড় একটা অংশ সেই বঞ্চনার কথা তুলে ধরলেন। অভিযোগ উঠেছে, যারা মাওবাদী স্কোয়াডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না তারাও সরকারি সুবিধা ভোগ করছেন। অবশ্য এই অভিযোগ কিছুটা মেনে নিয়েছেন বলরামপুর তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি অঘোর হেমব্রম। তবে তিনি জানিয়েছেন, 50 ভাগের চাকরি যখন হয়েছে বাকি 50 ভাগেরও হয়ে যাবে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত, এদিন যে জায়গায় তৃণমূলের সভা ছিল সেখান থেকে কিছু দূরেই মাওবাদীরা আবার সক্রিয় হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিনের সভায় জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে মাওবাদীরা যোগ দিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত 2003-2004 সাল থেকে রাজ্য জুড়ে শুরু হয় মাওবাদী কার্যকলাপ। শুরু হয়েছিল জমিদার জগদীশ তিওয়ারির হত্যায়, পরবর্তীতে বিভিন্ন ভাবে নাশকতার ঘটনা ঘটে চলেছে কমবেশী এখনো পর্যন্ত। এদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে এখনও আদালতে মামলা চলছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী নতুন করে আবার মাওবাদী স্কোয়াড সদস্যবৃন্দের সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। আর তারপরেই মাওবাদী স্কোয়াড সদস্যরা পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন সরকারি চাকরির দাবি পূরণ না হলে তাঁরা অন্য রাস্তা ধরবেন।

পাশাপাশি এই স্কোয়াড সদস্যরা স্পষ্ট করে বলেছেন, তৃণমূল নেত্রী যদি তাঁদের দেখেন তাহলে তাঁরা তাঁকে মাথায় করে রাখবে। যদিও জঙ্গলমহল থেকে লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বেশ বড়সড় অংশ হারিয়েছে তৃণমূল। বিধানসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে সেই জায়গা ফেরত পাবার আশাতেই রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি বলে মনে করা হচ্ছে। তবে গত কয়েক মাসে জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে মাওবাদীদের যে আনাগোনা বাড়ছে তা গোয়েন্দা রিপোর্টে স্পষ্ট।

পাশাপাশি বিধানসভা নির্বাচনের আগে মাওবাদীদের স্বরে যেভাবে অসন্তোষ প্রকাশ পাচ্ছে, তাতে কিন্তু জঙ্গলমহলের ফিরে পাবার আশায় যথেষ্ট প্রশ্নচিহ্ন রাখছে। রাজ্যজুড়ে বিরোধীরা ইতিমধ্যেই তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ প্রতিনিয়ত করে চলেছে। তবে এদিন মাওবাদী স্কোয়াড সদস্যদের যে তীব্র অভিযোগ তা কিন্তু যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে বঞ্চনার কথা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বঞ্চনা যদি না মেটানো যায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাহলে জঙ্গলমহল ফেরত পাবার আশা ছেড়ে দেওয়া উচিত।

 

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!