এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > সরাসরি তৃণমূল নয়? পুরোনো সঙ্গীদের কাছে টানতে ছত্রধর মাহাতো এবার নিলেন বড়সড় পদক্ষেপ?

সরাসরি তৃণমূল নয়? পুরোনো সঙ্গীদের কাছে টানতে ছত্রধর মাহাতো এবার নিলেন বড়সড় পদক্ষেপ?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে তৃণমূল শিবিড়ে সম্প্রতি বড়সড় রদবদল হয়েছে সংগঠনের। রাজ্যের সাথে সাথে জেলাতেও সাংগঠনিক স্তরে পরিবর্তন হয়েছে। এবং উল্লেখযোগ্যভাবে এবার রাজ্য সংগঠন এর অন্যতম মুখ হয়ে উঠে এসেছেন একদা জঙ্গলমহলের একচ্ছত্র অধিপতি ছত্রধর মাহাতো। লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহল থেকে রীতিমতো নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে তৃণমূল শিবির। আর সে জায়গায় ঘাঁটি গেড়েছে বিজেপি। এই অবস্থায় ছত্রধর মাহাতোকে সামনে রেখে তৃণমূল জঙ্গলমহলে উন্নয়নের ধ্বজা উড়িয়ে আবারো পরিস্থিতি নাগালে আনতে চাইছে বলে মত অনেকের।

কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ছত্রধর মাহাতো সম্প্রতি একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের মিটিংয়ে যোগ দিয়ে বিতর্ক বাড়িয়ে তুললেন বাংলার রাজনৈতিক মহলে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি ছত্রধর মাহাতো তাঁর পুরনো সঙ্গী সাথীদের ডাকে লালগড় ব্লকে একটি অরাজনৈতিক সভায় যোগদান করেন, যার মুখ্য ভাগে ছত্রধর মাহাতো ছিলেন। এই অরাজনৈতিক সভাতে তৃণমূলের লালগড় ব্লক বা জেলাস্তরে কোনো নেতাকর্মী ডাক পাননি। তবে সভায় যোগ দেওয়ার জন্য হাতে লিখে আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছিল শালবনি ব্লকের গ্রামে গ্রামে।

এই সভাটি ডেকেছিলেন জনসাধারণ কমিটির প্রাক্তন নেতা সুখশান্তি বাস্কে। প্রসঙ্গত, মাওবাদী পর্বে এই জনসাধারণ কমিটির মুখপাত্র ছিলেন ছত্রধর মাহাতো। অন্যদিকে, জনসাধারণের কমিটির প্রাক্তন নেতা সুখশান্তি বাস্কেও সম্প্রতি জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। তবে, ছত্রধর মাহাতো ওই সভাতে উপস্থিত থাকার কথা মেনে নিয়েছেন। তবে তিনি যুক্তি দিয়েছেন, যারা ঐ অরাজনৈতিক সভার আয়োজক ছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই জনসাধারণ কমিটির সদস্য এবং প্রত্যেকেই ছত্রধর মাহাতোর কাছের লোক।

শুধু তাই নয়, ছত্রধর মাহাতো জানান- 2018 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় যারা বিজেপির পক্ষে ছিলেন, তাঁরা এই সংবর্ধনা সভায় উপস্থিত ছিলেন এবং তাঁরাই ছত্রধর মাহাতোকে জানিয়েছেন, তাঁরা ছত্রধর মাহাতোর নেতৃত্বে অর্থাৎ তৃণমূলের ছত্রছায়ায় খুব শীঘ্রই আসবেন। উল্লেখ্য, ছত্রধর মাহাতো জেল থেকে ছাড়া পেয়ে প্রাথমিক অবস্থায় নিজের মতন করেই জনসংযোগ চালাচ্ছিলেন। কিন্তু তার কিছুদিন পরেই তিনি তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি উপস্থিত হন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এই অবস্থায় বর্তমানে ছত্রধর মাহাতো পেয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব। কিন্তু তার মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ছত্রধর মাহাতো ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, দলের মধ্যে তাঁকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছেনা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলার নেতা নেত্রীদের জানিয়ে দেন, প্রতিটি সাংগঠনিক সভা এবং বৈঠকে ছত্রধর মাহাতোকে ডাকার কথা। কিন্তু তা সত্বেও অনেক ক্ষেত্রেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথা মানা হচ্ছে না বলে জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে ছত্রধরের জন্য আরো একটি দুঃসংবাদ। সম্প্রতি 11 বছরের পুরনো দুটি মামলা আবার নতুন করে তুলেছে এনআইএ।

যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে এখনও এই নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। অন্যদিকে বিরোধীরা ইতিমধ্যে ছত্রধরকে নিয়ে শুরু করেছে তীব্র কটাক্ষ। বিজেপির জেলা সভাপতি সুখময় শতপতি জানিয়েছেন, আসন্ন বিধানসভা ভোটে সন্ত্রাস করার উদ্দেশ্যে ছত্রধর কে রাজ্য সম্পাদক করেছে তৃণমূল। অন্যদিকে ছত্রধর গ্রামে ফিরে মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে বলে দাবি করেছে গেরুয়া শিবির। তবে ছত্রধর মাহাতো এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘‘জঙ্গলমহলে তৃণমূলকে সমৃদ্ধিশালী করতে গেলে আমাকে যদি অরাজনৈতিক ভাবে আলোচনায় বসতে হয়, সেটা আমি করব, কারণ এঁরা সব আমারই অনুগত লোকজন।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে ছত্রধরের ওপরে কিন্তু আইনি চাপ আবার বেড়েছে। সেক্ষেত্রে ছত্রধর মাহাতো লালগড়ে অরাজনৈতিক সংগঠনের মিটিংয়ে গিয়ে দলকে কি বার্তা দিতে চাইলেন, তা নিয়ে কিন্তু কৌতুহল ক্রমশ বাড়ছে। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, শুধুমাত্র জঙ্গলমহলে আবার ক্ষমতা ফিরে পেতেই তৃণমূল শিবির এই মুহূর্তে ভরসা রাখছে ছত্রধর মাহাতোর ওপর। আর সে কারণেই তাঁকে রাজ্য সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!