শুধু করোনাই নয়, তার থেকেও ভয়ঙ্কর বিপদ হতে চলেছে চের্নোবিলের পারমাণবিক বিস্ফোরণের সম্ভাবনা! আন্তর্জাতিক April 16, 2020 চেরনোবিল নাম শুনলেই ভয়ংকর পারমাণবিক বিস্ফোরণের কথাই সবার আগে মনে আসে। 1986 সালে চেরনোবিল বিস্ফোরণের ফলে ইউক্রেনের প্রিপ্রিয়াত শহরটি ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড়ায়। বর্তমানে একদা জনপ্রিয় শহরটি আবারও একটি ভয়ঙ্কর ঘটনার মুখোমুখি। এবার প্রিপ্রিয়াত শহরে লেগেছে ভয়ঙ্কর দাবানল এবং সবথেকে যেটা আশঙ্কার কথা সেটা হল চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে দাঁড়িয়ে আছে এই দাবানল। জনমানবহীন প্রিপ্রিয়াত শহরটি এই মুহূর্তে চরম বিপর্যয়ের মুখে। 5 লক্ষ মানুষের বাস ছিল একদা যে শহরে, সেই শহর আজ খালি হলেও নতুন করে ধ্বংসের মুখে ইউক্রেনের পরিতক্ত চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। এই চেরনোবিলের কিছুটা দূরেই আছে ঘন জঙ্গল আর সেখানেই শুরু হয়েছে দাবানল। যার গতি পারমাণবিক কেন্দ্রের দিকেই বলে জানা যাচ্ছে। ইউক্রেন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দাবানল যাতে আর না ছড়ায় তার জন্য ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে গাছ কাটা। সূত্রের খবর, 16 মাইল দূরে প্রিপ্রিয়াত নদী, সেখানেও দূষণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে ইউক্রেনের ডেপুটি ইন্টেরিয়ার মিনিস্টার অ্যান্টন হেরাশেঙ্কো সম্প্রতি জানিয়েছেন, আপাতত ইউক্রেন প্রশাসন এই দুটি দাবানল আয়ত্তে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। জানা যাচ্ছে, সবচেয়ে বড় দাবানলটি ছড়িয়ে আছে 34000 এক্টর এলাকাজুড়ে এবং অন্য আরেকটি দাবানল শুরু হয়েছে 12 হাজার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। চিন্তা এই দ্বিতীয় দাবানলটি নিয়েই। আশংকার খবর এটাই যে, চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্রের থেকে মাত্র দু কিলোমিটার দূরে এই দ্বিতীয় দাবানলটি অবস্থান করছে এবং ক্রমশ এর একটি মুখ এগিয়ে যাচ্ছে চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লির দিকে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - যেখানে পারমাণবিক বর্জ্য আছে বলে জানা যায়। অন্যদিকে, চেরনোবিলের ট্যুর ম্যানেজার অ্যানট ইউহিমেঙ্কো জানিয়েছেন, দাবানলের আগুন চুল্লির কাছে পৌছানোর আগেই বাতাসে তীব্র তেজস্ক্রিয়তার ছড়িয়ে পড়ার প্রবল আশঙ্কা। তার কারণ, পারমাণবিক চুল্লি পর্যন্ত যেতে হবেনা তার আগেই প্রচুর রাসায়নিক বর্জ্য জমা করা রয়েছে। সূত্রের খবর, গত সোমবার থেকে আচমকা বাতাসের অভিমুখ ঘুরে যায় এবং তার ফলেই দাবানলের একটি মুখ চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রের দিকে এগোতে শুরু করে। এই গরমের সময় প্রায়দিনই ইউক্রেনে দাবানলের মতো ঘটনা ঘটে। তবে এবার সম্পূর্ণ বিষয়টি অন্যরকম ভাবে শুরু হয়েছে। অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে যে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে, সেই লড়াইকেই প্রবল গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন ইউক্রেন সরকার। অন্য ব্যাপারে তাঁরা নজর দিচ্ছেন না। ফলে এই দাবানল কি পরিমান ক্ষতি করতে পারে সে বিষয়ে ধারণা নেই কারোর। অন্যদিকে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে মারাত্মক আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ইউক্রেনবাসীরা। সূত্রের খবর, শুধুমাত্র একটা হেলিকপ্টার এবং একটি বিমান দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে, যাতে ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে যাওয়া এই দাবানলের আগুন নেভানোর জন্য জল দিতে পারে। তবে স্টেট এমার্জেন্সি সার্ভিস এই তথ্যকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, একাধিক বিমান এবং কপ্টার দাবানল নেভানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। অন্যদিকে ইউক্রেন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই দাবানল নেভাতে এই মুহূর্তে দেশের দমকল বাহিনীর তিনশ সদস্য কাজ করছেন বলে জানা গেছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছে পৌঁছে যাওয়ার আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে তাঁরা মনে করছেন। তবে তাঁদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে তীব্র বাধা দিচ্ছে আচমকা গতিমুখ বদলে ফেলা বাতাস। দাবানল চেরনোবিলের দিকে এগোনো নিয়ে মারাত্মক উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদরা। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইউক্রেন সরকার কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে সে দিকেই লক্ষ্য রাখছে সবাই। আপনার মতামত জানান -