চিদাম্বরমের জেলযাত্রা প্রসঙ্গ টেনে “দিদিকে” জেলে পোড়ার জল্পনা বাড়িয়ে দিলেন স্বয়ং দিলীপ ঘোষ কলকাতা রাজ্য হাওড়া-হুগলি November 1, 2019 সারদা থেকে নারদা বিভিন্ন চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে তৃণমূলের একাধিক সাংসদ, মন্ত্রীকে একসময় জেলে যেতে হয়েছিল। যে ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে সিবিআইকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে সরব হতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। তারপর রাজ্য রাজনীতিতে অনেক উত্থান-পতন ঘটেছে। মাঝেমধ্যেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে সরব হয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে “অ্যাকশন” নেওয়ার মত মন্তব্য করতে দেখা গেছে। যা জল্পনা বাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য রাজনীতির। কিছুদিন আগেই প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরমকে আর্থিক দুর্নীতির দায়ে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। আর এই ঘটনার পরই সিবিআইয়ের এই পন্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর এবার সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যেও বিস্ফোরক মন্তব্য করে তাকে জেলে পোরার হুমকি দিলেন মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সূত্রের খবর, এদিন ধনেখালির বাসস্ট্যান্ডে একটি জনসভা করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। আর সেখানেই বিভিন্ন ইস্যুতে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেন তিনি। দিলীপ ঘোষ বলেন, “দুর্নীতির দায়ে দিদিকেও জেলে যেতে হবে। দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী চিদাম্বরম যদি জেলে যেতে পারেন, তবে দিদি কি!” আর বিজেপির রাজ্য সভাপতির এই মন্তব্যেই এবার ছড়িয়ে পড়েছে জল্পনা। তাহলে কি তিনি তৃণমূলের উদ্দেশ্যে এবার হুমকি দিয়ে রাখলেন! তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। অনেকে বলছেন, সারদা থেকে নারদা, বিভিন্ন চিটফান্ড কাণ্ডে “মাথাকে ধরা হবে” বলে মাঝেমধ্যেই মন্তব্য করতে দেখা গেছে বিজেপি নেতাদের। আর তাই দুর্নীতি ইস্যুতেও তৃণমূল দলের প্রধান জেলে যাবেন বলে বিজেপির রাজ্য সভাপতির এই মন্তব্যের পেছনে সেই কথাই কি বললেন উঠছে প্রশ্ন সমালোচক মহলে ?। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে অনেকে আবার বলছেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থেই বিজেপি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠরোধ করতে চাইছেন। আর তাইতো তাঁকে জেলে পোরার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি বিশ্লেষকদের। তবে এদিন শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যই নয়, তৃণমূল স্থানীয় নেতা এবং পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশ্যেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, “দুর্নীতির দায়ে তৃণমূলের পঞ্চায়েতের নেতাদের চুঁচুড়ার জেলে রাখব। রাজ্যস্তরের নেতাদের কলকাতার সেন্ট্রাল জেলে রাখব। আর তার চেয়েও বড় নেতাদের ওড়িশা জেলে রাখা হবে। যেসব পুলিশ অফিসার বিজেপি কর্মীদের নামে ভুলভাল কেস দিচ্ছেন, তাদের বলছি, এই সরকারের আর দেড় বছর সময় আছে। তারপর আপনাকে চাকরি করতে হবে। সেদিন সব হিসেব করব। কেসের যত খরচ হবে, তা পুলিশের কাছ থেকে আদায় করব। অবসর নিয়ে নিলেও পেনশনের টাকা থেকে সেই টাকা তুলব।” বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, দিলীপ ঘোষের এদিনের বক্তব্য রাজনৈতিক প্রতিহিংসা স্বরূপ। কি হবে, তা আগেভাগেই বলে দিয়ে কেন বিতর্ক বাড়িয়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি! তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। এদিকে তৃণমূলের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর এদিন কাশ্মীরের 5 বাঙালি শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করে এনআরসি নিয়েও নিজেদের বক্তব্য জানিয়ে দেন মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “এই বাংলার গরিব-মুসলিম পরিবারের ছেলেরা 400 টাকা মজুরির জন্য 4 হাজার কিলোমিটার দূরে কাশ্মীরে কেন কাজে গিয়েছে! কারণ বাংলায় পেটের ভাত নেই। সেই জন্য তারা পরিবার ছেড়ে, বউ ছেড়ে কাশ্মীরে পাড়ি দিয়েছে। তাই তাদের মৃত্যুর জন্য সম্পূর্ণ দায়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার কোল খালি হয়ে গিয়েছে। এনআরসি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন। ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। কেন্দ্রে কংগ্রেস রাজত্ব করেছে, বাংলায় সিপিএম- তৃণমূল রাজত্ব করেছে, তারা একবারও উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দিতে হবে, এই দাবি কেন তোলেনি!” সব মিলিয়ে এদিন ফের মন্তব্য করে বিতর্ক বাড়ালেন বলেই মত রাজনৈতিকমহলের। আপনার মতামত জানান -