প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বেশ কিছুদিন ধরেই প্রতিবেশী দেশ চীন ভারতের প্রতি আগ্রাসনী ভূমিকা গ্রহণ করেছে। গত জুন মাস থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। গালওয়ান সীমান্তে চীনা সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিক সীমান্তরেখা অতিক্রম করে ভারতের মাটিতে পা দেয়। যদিও ভারতীয় সেনারা নিজেদের জীবন বাজি রেখে চিনা সেনাদের ফিরে যেতে বাধ্য করে। কিন্তু তার মধ্যেই শহীদ হন ভারতের অন্তত কুড়ি জন সেনা জওয়ান। আর তারপর থেকেই পরিস্থিতি রীতিমতো উত্তপ্ত। এদিকে বরাবরই পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে শত্রুতার ভূমিকা পালন করেছে। এবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে চীন।

গালওয়ান সীমান্তে বাধা পাওয়ার পর একই সপ্তাহে পরপর দুবার চীনা সেনারা সীমান্তরেখা লংঘন করেছে বলে জানা গেছে। আর তাই নিয়ে চিন্তিত প্রতিরক্ষা দপ্তর। যদিও চীনা সেনারা বাধা পেয়েছে ভারতীয় সেনার কাছে। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে ভারত-চীন যুদ্ধের লক্ষণ ক্রমশ ফুটে উঠছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই অবস্থায় প্যাংগং লেকে চীনা বাহিনীর শক্তি প্রদর্শনের পর পূর্ব লাদাখের সামনের অঞ্চলগুলিতে সেনাবাহিনীর তৎপরতা দেখা গেছে।

এ ব্যাপারে আলোচনা করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল এম এম নারভানে। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার চিপ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত জানান, চীন এবং পাকিস্তান ক্রমাগত দ্বিমুখী হুমকি দিয়ে চলেছে ভারতকে। তবে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী এর জবাব দেবে বলেই তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন। বৃহস্পতিবার ইউএস-ভারত স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ ফোরাম সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেনারেল বিপিন রাওয়াত। আর সেখানেই তিনি জানান, বর্তমানে চীন এবং পাকিস্তান একে অপরের বন্ধু হয়ে উঠেছে।

দুজনেই একে অপরকে সামরিক অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিকভাবে সহযোগিতা করে চলেছে। তিনি আরো জানান, উত্তর এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় মোর্চাগুলিতে যাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সেরকম হুমকিও দিয়ে চলেছে তাঁরা। তবে ভারতের প্রতিরক্ষা দপ্তর পুরো ব্যাপারটি নজরে রেখেছে। এ প্রসঙ্গে বিপিন রাওয়াতও জানিয়েছেন, সশস্ত্র বাহিনী হামলা করলে ভারতীয় সেনারা তৈরি আছে। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা প্রাথমিক ফ্রন্টকে মোকাবিলা করার জন্য কৌশল অবলম্বন করেছি এবং অন্য ফ্রন্টটি হবে সেকেন্ডারি।’

তবে এদিন চীনের পাশাপাশি পাকিস্তানকেও রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে জেনারেল রাওয়াত জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আমাদের উত্তর সীমান্তে যদি সমস্যা তৈরি করে চীন তবে পাকিস্তান এর সদ্ব্যবহার করতে পারে। পাকিস্তান যদি সেটা করতে চায় তবে তাদেরকেও ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুহূর্তে ভারত-চীন আন্তর্জাতিক সীমান্ত সমস্যা রীতিমতো যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে রূপান্তরিত হয়ে উঠছে। তবে মনে করা হচ্ছে, পাকিস্তানের পাশাপাশি এবার চীনও আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছে। অন্যদিকে সীমান্তে যুদ্ধ তৎপরতা চোখে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে ভারত চীন আন্তর্জাতিক সীমান্ত সমস্যা কোন দিকে মোড় নেয়, সে দিকেই লক্ষ্য রাখবেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।