এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > চূড়ান্ত ‘অসম্মানিত’ হয়ে ইস্তফা দিলেন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা! বিধানসভার আগে অস্বস্তি শাসকদলে

চূড়ান্ত ‘অসম্মানিত’ হয়ে ইস্তফা দিলেন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা! বিধানসভার আগে অস্বস্তি শাসকদলে


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এখন সংগঠনকে সাজাতে শুরু করেছে। যার ফলে বিভিন্ন জেলায় নতুন মুখ এনে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে পুরনো দিনে যারা সংগঠন সামলেছিলেন, তাদেরকে এই ভাবে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে সেই সমস্ত নেতারা বিদ্রোহ ঘোষণা করতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। আর এবার সেই আশঙ্কাতেই সীলমোহর পড়ল। জানা গেছে, নতুন সাংগঠনিক কমিটি ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথেই তার ডানা ছাটা হওয়ার কারণে জেলা কমিটির সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিলেন লালগড় ব্লক যুব তৃনমূলের সদ্য প্রাক্তন সভাপতি তন্ময় রায়।

যার ফলে ব্যাপক গুঞ্জন তৈরি হয়েছে জেলা তৃণমূলের অন্দরমহলে। জানা গেছে, সম্প্রতি এই তন্ময় রায়কে লালগড় ব্লক যুব তৃনমূলের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে 98 জন সদস্যের অন্যতম হিসেবে রাখা হয়েছে জেলা কমিটিতে। কিন্তু তাকে ব্লক যুব সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে জেলা কমিটিতে রাখার কারণেই এখন সেখান থেকে ইস্তফা দিয়ে তার চিঠি জেলা নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন তন্ময়বাবু। সূত্রের খবর, শুক্রবার জেলা সভাপতি, জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান এবং দুই কো-অর্ডিনেটরের কাছে নিজের ইস্তফা পত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি।

কিন্তু এইভাবে জেলা কমিটির সদস্য পদ পেয়েও যেভাবে তিনি ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতির পক্ষ থেকে তাকে সরানোর কারণে সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দলকে চিঠি দিলেন, তাতে তো দল আরও বিড়ম্বনায় পড়ল! জানা গেছে, এদিন নিজের দলীয় প্যাডে ছাপানো “সভাপতি” কথাটি কেটে তন্ময়বাবু দলকে লেখা চিঠিতে লেখেন, “শহীদের রক্তে রাঙ্গা নেতাইয়ের পবিত্র ভূমিতে শপথ নিয়েছিলাম, সিপিএমের অস্তিত্ব মুছে দেব। সেই কাজে আমরা সফল। 2011 সালে মা মাটি মানুষের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে বিনপুর 1 ব্লকে যুব সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কর্তব্যে অবিচল থেকে 9 বছর ধরে সেই দায়িত্ব পালন করেছি। এখন দেখলাম আমাকে অব্যাহতি দিয়ে জেলা কমিটির সদস্য করা হয়েছে। এতে আমি চরম অপমানিত বোধ করছি। আমরা জঙ্গলমহলবাসী জানি, অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে জঙ্গলমহলে মুক্তিসূর্য চির উজ্জ্বল থাকবে।” আর তন্ময়বাবুর পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে এই চিঠিকে ঘিরে এখন নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

হঠাৎ করে জঙ্গলমহলের মুক্তিসূর্য নামক শব্দটি কেন চিঠিতে তুলে ধরলেন তন্ময় রায়? অনেকে বলছে, এই ব্যাপারে শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ টানা হয়েছে‌ কেননা এই তন্ময়বাবু শুভেন্দু অধিকারীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। বর্তমানে শুভেন্দু অধিকারী দলে তেমনভাবে কোনো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা না পাওয়ায় তার সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি হতে দেখা যাচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে তন্ময় রায়কে যুব সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর যেভাবে তিনি জেলা কমিটির সদস্য পদ ছাড়ার ব্যাপারে দলকে চিঠি দিলেন, তাতে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী হিসেবে তিনি নিজের বিদ্রোহ জিইয়ে রাখলেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

একাংশ বলছেন, 2009 সালে শুভেন্দু অধিকারী যখন লালগড় থেকে তারা আন্দোলন শুরু করেছিলেন, তখন তার অন্যতম সৈনিক ছিলেন এই তন্ময় রায়। আর তখন থেকেই তন্ময়বাবু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুনজরে পড়তে শুরু করেন যার লালগড় ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু সম্প্রতি লালগড় ব্লক যুব তৃনমূলের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে সেখানে প্রশান্ত রাউতকে আনা হচ্ছে বলে জানা যায়। আর এই পরিস্থিতিতে নতুন কমিটি হওয়ার সাথে সাথেই তন্ময় রায়কে যুব সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে জেলা সদস্য করে দেওয়ায় তিনি তার বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যার প্রভাব আগামী দিনে নির্বাচনে অবশ্যই পড়বে বলে দাবি একাংশের।

কিন্তু এভাবে তিনি দলের অনুগত সৈনিক হওয়া সত্ত্বেও পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সাথে সাথেই কেন বিদ্রোহ ঘোষণা করে জেলা কমিটির সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিলেন? এদিন এই প্রসঙ্গে তন্ময় রায় বলেন, “দলের কাজ করে প্রতিদানে অসম্মান পেলাম। কোনো পদ আর দরকার নেই। দলের কর্মী হয়েই থাকব।” এদিকে গোটা বিষয়টি নিয়ে তিনি তন্ময়বাবুর সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি দুলাল মূর্মু। তবে জেলা তৃণমূল নেতারা এই ব্যাপারে যে কথাই বলুন না কেন, যেভাবে নতুন কমিটি হওয়ার সাথে সাথেই চূড়ান্ত সম্মানিত হলেন এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা, তাতে তার ফলে জেলা তৃণমূলের অন্দরে যে ব্যাপক চাপের সৃষ্টি হল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, বিদ্রোহী এই তৃণমূল নেতার রাজনৈতিক ভবিষ্যত এবং তার ফলে তৃণমূল কংগ্রেস কতটা চাপে পড়ে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!