এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > পুত্রের মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা নয়! সিআইডি তদন্তের দাবি হেভিওয়েট তৃণমূল নেতার, পাশে বিজেপি-বাম

পুত্রের মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা নয়! সিআইডি তদন্তের দাবি হেভিওয়েট তৃণমূল নেতার, পাশে বিজেপি-বাম

 

আলোর উৎসবে যখন ঝলমল করছিল গঙ্গারামপুর, ঠিক তখনই সরকার পরিবারে নেমে এসেছিল অন্ধকার। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সান্ধ্যভ্রমণে গিয়ে প্রাণ হারান গঙ্গারামপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান অমলেন্দু সরকারের ছেলে কুনাল সরকার। জানা যায়, 37 বছরের যুবক কুণালবাবু পেশায় গঙ্গারামপুর মহাবিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে বর্তমানে শোকাহত গোটা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা।

জানা যায়, পিতা রাজনীতি করলেও পুত্র কুনাল সরকারের রাজনীতির সঙ্গে কোনো সম্পর্কই ছিল না। ব্যক্তি হিসেবে তিনি ছিলেন নিছক ভালো মনের মানুষ। এদিকে গঙ্গারামপুর পৌরসভার চেয়ারপার্সনের ছেলের মৃত্যুর ঘটনার পরই জেলার অনেকেই এই ব্যাপারটি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন।

বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন রটতে শুরু করে, তাহলে কি শুধুমাত্র চেয়ারপার্সনের ছেলে হওয়ার জন্য রাজনৈতিক কারণে মৃত্যু হল কুনাল সরকারের! আর এবার ছেলের মৃত্যুতে সিআইডি তদন্তের দাবি করলেন তারই পিতা তথা গঙ্গারামপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান অমলেন্দু ভূষণ সরকার।

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার নিজের বাড়িতে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন অমলেন্দুবাবু। আর সেখানেই তিনি বলেন, “আমি আমার ছেলেকে আর ফিরে পাব না। আমি পৌরসভার চেয়ারম্যান হওয়ায় আমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্যই ছেলের ওপর হামলা হতে পারে। আমি কারও উপর দোষারোপ করছি না। আমার ছেলের কিভাবে মৃত্যু হল, তা জানতে আমি রাজ্য সরকারের কাছে সিআইডি তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। আমি দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইকটি দেখেছি। জখমদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এই বিষয়ে কিছুই বলতে পারেনি। ছেলের মৃত্যু নিয়ে আমি যথেষ্ট রহস্যে রয়েছি। এজন্য সিআইডি তদন্ত চাইছি। নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য গঙ্গারামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করব।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে নিজের পুত্রশোকে বিদ্ধ হয়ে অমলেন্দুবাবু সিআইডি তদন্তের দাবি করায় তাঁর পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে। তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়ে কুণালবাবুর মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন করার কথা বলা হয়েছে।

এদিন এই প্রসঙ্গে বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, “অমলেন্দুবাবুর ছেলের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। আমার রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকায় ওনার বাড়িতে যেতে পারিনি। তবে দলের কর্মসূচি শেষ করে তাঁর সঙ্গে দেখা করব। চেয়ারম্যান সিআইডি তদন্তের দাবি করেছেন। আমরা মনে করি, সিআইডি অপেক্ষা সিবিআই তদন্তের দাবি করুন। যেভাবেই ঘটনাটি ঘটুক না কেন, সত্য সামনে আসবে।”

এদিকে এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সিপিএমের সম্পাদক নারায়ন বিশ্বাস বলেন, “আমি ঘটনা শোনামাত্র চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেছি। তার পাশে থেকে সমবেদনা জানিয়েছি। জানি কোনো সমবেদনাই সন্তানহারা পিতার জন্য যথেষ্ট নয়। চেয়ারম্যান সিআইডি তদন্তের দাবি রাখতেই পারেন। আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত কামনা করি।”

বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বিপ্লব মিত্র বিজেপিতে যোগদানের পরই গঙ্গারামপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান পদ নিয়ে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়। ভাইস চেয়ারম্যান অমলেন্দু ভূষণ সরকারের নেতৃত্বে বিপ্লব মিত্রের ভাই প্রশান্ত মিত্রকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানোর জন্য অনাস্থা আনে তৃণমূল। পরবর্তীতে সেই অনাস্থায় জিতে তৃণমূলের তরফে চেয়ারম্যান করা হয় অমলেন্দু ভূষন সরকারকে।

আর চেয়ারম্যান হওয়ার কিছুদিন পরেই নিজের ছেলের এই মৃত্যুকে রীতিমতো অন্যভাবেই দেখতে শুরু করেছে অমলেন্দুবাবু এবং তৃণমূল কংগ্রেস। যার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন অমলেন্দু ভূষণ সরকার নিজের ছেলের মৃত্যুতে সিআইডি তদন্তের দাবি করে জল্পনাকে অনেকটাই বাড়িয়ে দিলেন বলে মত বিশ্লেষকদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!