নিজেদের ছাত্র সংসদের সঙ্গে দলীয় সাংসদের বিরোধ ঘিরে তীব্র অস্বস্তিতে শাসকদল রাজ্য January 27, 2018 ছাত্র সংসদের বৈঠক অথচ ডাক পেলেন না প্রাক্তন সংসদ সভাপতি, আর তাই নিয়ে জলপাইগুড়ি এসি কলেজে তৃণমূল সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মণকে আটকে বিক্ষোভ দেখালো টিএমসিপি। এমনকি ছাত্র সংসদ থেকে তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে ‘গো ব্যাক’ শ্লোগানও দেওয়া হয় বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। এই প্রসঙ্গে কলেজের তরফে জাননো হয় উত্তরবঙ্গ বিশ্ব বিদ্যালয়ের নির্দেশ অনুসারে গত ৩১ ডিসেম্বর যে কোনও কলেজের ছাত্র সংসদের মেয়াদ শেষ হয় এবং তারপর থেকে সংসদের কোনও প্রতিনিধি পরিচালন কমিটির বৈঠকে অংশ নিতে পারবে না এবং এই কারনেই তাদের ডাকা হয়নি। অন্যদিকে কলেজের প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ যে সকালে পরিচালন সমিতির মিটিং ছিল এবং সেখানে ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিদের ডাকা হয়নি বলে সকাল থেকেই তারা অধ্যক্ষের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। সংসদের সম্পাদক দেবজিৎ সরকার বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের নেতৃত্ব দেয় বলেও অভিযোগ। বিক্ষোভকারীদের পাল্টা অভিযোগ, কলেজের ৭৫ বছর পুর্তি অনুষ্ঠানে টি শার্ট তৈরির জন্য কলেজের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে ৩০০ টাকা করে নেয় কলেজ কতৃপক্ষ। কিন্তু টি শার্ট তৈরিতে খরচ হয় ১৮০ টাকা, বাকি ১২০ টাকা আত্মসাৎ করার চেষ্টা করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই প্রসঙ্গে দেবজিৎ সরকার জানান, আমি এর আগের পরিচালন সমিতির মিটিংয়ে ১২০ টাকা ছাত্র-ছাত্রীদের ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলাম, কিন্তু তখন এই বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছিল। রাজ্যের শীক্ষা মন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী চলতি ছাত্র সংসদ ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বহাল থাকবে এবং নিজেদের কাজকর্ম করতে পারবেন, কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশ মানছেন না। কলেজ সুত্রে খবর ঘটনার দিন দুপুর দুটোর সময় স্থানীয় সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মন মিটিংয়ে যোগ দিতে আসেন। সেইসময়েই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা, এমনকি দেওয়া হয় ‘গো-ব্যাক’ স্লোগানও। অবশেষে অনেক বাগ-বিতন্ডার পর তাঁকে অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকতে দেওয়া হয়। শেষপর্যন্ত অধ্যক্ষের নির্দেশে পড়ুয়াদের নিয়ে আলোচনার ব্যবস্থা করা হয় তাঁর ঘরে, সেই সময় পরিচালন সমিতির মিটিং আদতে আইনসঙ্গত কিনা তা নিয়েই তীব্র বচসা হয় দুপক্ষের বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে। সামগ্রিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজের অধ্যক্ষ জানান, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী গত ৩১ ডিসেম্বর বর্তমান ছাত্র সংসদের মেয়াদ কাল শেষ হয়ে গেছে। সেইসাথে বর্তমান ছাত্র সংসদের সম্পাদক গত পাঁচমাস আগে পাশআউট হয়ে গিয়েছেন। এমনকি আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই সংসদ বহাল রাখার জন্য কোনও নির্দেশিকা আসেনি সরকারের তরফে। যে কারনে পরিচালন সমিতির সভাপতির নির্দেশ মতো আমরা ছাত্র প্রতিনিধিদের মিটিংয়ে ডাকিনি। অন্যদিকে স্থানীয় সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মন এই প্রসঙ্গে বলেন, আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং সত্য নয়। কলেজে যা হয় তা পুরোটাই পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হয়। আর লবির যে অভিযোগ বলা হচ্ছে তা পুরোটাই মিথ্যে। কলেজ এবং উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী আমাদের সমস্ত কাজ কর্ম করতে হয়। সব মিলিয়ে নিজেদের ছাত্র সংসদের সঙ্গে নিজেদের দলীয় সাংসদের এই বিরোধ ঘিরে তীব্র অস্বস্তিতে শাসকদল। আপনার মতামত জানান -