এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মুখ্যমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠকের পরে কি নতুন সমীকরণ সামনে আসবে? জল্পনা চরমে

মুখ্যমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠকের পরে কি নতুন সমীকরণ সামনে আসবে? জল্পনা চরমে

প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের পরই এবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাথেও বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চূড়ান্ত বিরোধিতা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় বিরোধী নেতৃত্বের সাথে একের পর এক বৈঠক করে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকারের যাবতীয় নীতির বিরুদ্ধে এতদিন চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাথে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রায় সকলের প্রতি ছিল তীব্র বিষোদগার।

এনআরসি ইস্যুতে তো মুখ্যমন্ত্রী রাজপথেও নেমেছিলেন বিরোধিতা জানাতে। এত তুমুল বিরোধিতার পর গত আড়াই বছরের মধ্যে প্রথমবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে মিলিত হলেন – যা নিয়ে তামাম রাজনৈতিক মহলে কৌতুহল চরমে। তার সাথে অবশ্যই আছে রাজ্যের সমস্ত বিরোধীদলগুলোর থেকে ভেসে আসা কটুক্তি। প্রত্যেকটি বিরোধী দলই মুখ্যমন্ত্রীর সাথে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ এর প্রথম দিন থেকেই বৈঠকের কারণ নিয়ে চরম সন্দিহান।

প্রশ্ন উঠেছে, গত আড়াই বছরে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা নীতি আয়োগের বৈঠক থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক পর্যন্ত কোন স্থানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হাজিরা দেননি। তাহলে হঠাৎ রাজ্যের উন্নয়ন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর এতো তড়িঘড়ি প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের কি কারণ? জল্পনা আরো চরমে উঠেছে, যখন দেখা গেছে, উন্নয়ন বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে অর্থমন্ত্রী না থেকে আইনমন্ত্রী ও আইনজ্ঞ সাংসদের সাথে থাকা।

আর, এই মুহুর্তে জল্পনার আগুনে আরও ঘি ঢেলেছে মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ রাজীব কুমারের সি বি আইয়ের হাত থেকে পালিয়ে বেড়ানো। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করার পরেরদিনই মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সাথে বৈঠক করেন। যা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী দলগুলি থেকে তুমুল কটুক্তি ভেসে আসছে। এযাবৎকাল মুখ্যমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কোনরকম বার্তাতেই যাননি। বরং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে এনআরসি চালু হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিরুদ্ধে চরম তিক্ততা পোষণ করেছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বৈঠকের শেষে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক মাধ্যমে জানান, তাঁদের বৈঠকে মূলত এনআরসি প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তরফ থেকে অবশ্য জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি অপ্রয়োজনীয় বলে তা নিয়ে কোন কথাই হয়নি। কথা হয়েছে অসমে এনআরসি প্রয়োগ নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করা হয়েছে, অসমে যে 19 লক্ষ মানুষের নাম বাদ গেছে, তাঁদের মধ্যে অসংখ্য বাংলাভাষী, হিন্দিভাষী ও গোর্খাদের নাম ঢুকেছে।

তাই যাদের নাম বাদ গেছে, তাঁরা যাতে আরেকবার সুযোগ পায় সে কথাই বলা হয়েছে। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী জানান, পশ্চিমবঙ্গের আন্তর্জাতিক সীমানা নিরাপত্তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাথে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি চিঠিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
এছাড়াও মনে করা হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাথে মুখ্যমন্ত্রীর আলোচনার প্রথম ধাপ হিসেবে উঠে এসেছে রাজ্যের নাম বদল। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বেশ কয়েকবার কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করলেও কোন সাড়া মেলেনি।

ফলে অনুমান, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সামনে। তাছাড়া রাজ্যের নাম বদল করতে গেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সবুজসংকেত পেতেই হবে। এদিন বিরোধীদের সমস্ত কটূক্তি উড়িয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাথে তার এই সাক্ষাৎ শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক সৌজন্যমূলক। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “এটি একটি চেয়ারের সঙ্গে একটি চেয়ারের বৈঠক। আমি এর আগে যখনই দিল্লি এসেছি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সঙ্গে দেখা করেছি।”

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকই হোক বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক, দেশজুড়ে কিন্তু তুমুল আগ্রহ জনগণের মনে। শুধুমাত্র বিরোধীরাই নয়, মুখ্যমন্ত্রীর এহেন সিদ্ধান্তে সারা দেশের জনগণই অবাক। তবে এই বৈঠকের ফলে আগামী দিনের রাজনীতিতে কোন ইকুয়েশন তৈরি হবে কিনা তা এখনই ঠিক বলা যাচ্ছে না। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, আগামী দিনের রাজনৈতিক মঞ্চে এই বৈঠক বিশেষ আলোকপাত করতেই পারে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!