এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > পঞ্চায়েতের মাধ্যমে নয়, গরীব মানুষকে সরাসরি টাকা দিতে হবে! জল্পনা বাড়াচ্ছেন খোদ মমতা!

পঞ্চায়েতের মাধ্যমে নয়, গরীব মানুষকে সরাসরি টাকা দিতে হবে! জল্পনা বাড়াচ্ছেন খোদ মমতা!


গত বুধবার আসা সর্বনাশা আমফানের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত গোটা পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের জেলায় জেলায় আমফান তার দাপট দেখিয়ে গেছে। তিলোত্তমা সহ বহু এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এরইমধ্যে সূত্রের খবর মারফত যে পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে তা থেকে জানা যাচ্ছে প্রবল ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই ২৪ পরগনা। তারমধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রায় ৭৩ লক্ষ মানুষ এই ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে জানা গেছে।

এলাকায় অবস্থিত ৫৬ কিলোমিটার নদী বাঁধ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের বাড়ি এই সুপার সাইক্লোন আম আমফানের দাপটে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে গেছে। জানা গেছে এর মধ্যে শুধুমাত্র ডায়মন্ড হারবারে ভাঙ্গা পড়েছে প্রায় দেড় লক্ষ ঘরবাড়ি। কার্যত গোটা পরিস্থিতি সামাল দিতে গত বৃহস্পতিবার একটি প্রেস কনফারেন্সে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি কে পশ্চিমবঙ্গে এসে সহায়তা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

আর আহ্বান পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নরেন্দ্র মোদীর তরফে পশ্চিমবঙ্গের দিকে সাহায্যের হাত এগিয়ে আসে। জানা গেছে আহ্বান পাওয়া মাত্রই নরেন্দ্র মোদি যথেষ্ট তৎপরতার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে এসে উপস্থিত হন এবং একটি হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে গোটা এলাকা পরিদর্শন করেন। আর এরপরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তরফে ১০০০ কোটি টাকা বাংলাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেয়া হয়েছে।

বিধ্বস্ত বাংলার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সেই পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজোট হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন দলের নেতাকর্মীদের। গরিবদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তা যেন সরাসরি গরীবদের হাতেই যায় শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের মহকুমা শাসকের দপ্তরে আয়োজিত বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এই ঘটনার ফলেই রাজ্য-রাজনীতিতে শুরু হয়েছে তীব্র জল্পনা। কেননা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের ট্যাগ লাইনই হল – মা-মাটি-মানুষ! অর্থাৎ তাঁর দলের নেতা-কর্মীরা সবসমই দাবি করে থাকেন তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় ২৪ ঘন্টা, ৩৬৫ দিন মানুষের পাশে থেকে মানুষের হয়ে কাজ করেন। আর সেই মানুষের জন্য কাজ বেশি করে করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবসময়েই দাবি করে থাকেন তাঁকে ১০০% আসনে জয়ী করতে হবে।

তা সে লোকসভা নির্বাচন হোক বা পঞ্চায়েত – তৃণমূল নেত্রী বারেবারেই জানান যে যত বেশি তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি থাকবে তত বেশি করে নাকি পরিষেবা পৌঁছে যাবে মানুষের কাছে। তাহলে আমপান বিধ্বস্ত বাংলায়, তিনি পঞ্চায়েতের মাধ্যমে টাকা মানুষের কাছে না পাঠিয়ে সরাসরি গরীব মানুষের অ্যাকাউন্টে পাঠানোর কথা বলছেন কেন? এইখানেই শুরু হয়েছে তীব্র জল্পনা! বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, তাহলে তৃণমূল নেত্রী আশঙ্কা করছেন কিছু?

বিরোধীদের আরও প্রশ্ন, কিছুদিন আগেই কাটমানি বিতর্কে উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা বাংলা। এই কঠিন পরিস্থিতিতে আবারো কি সেই বিতর্ক মাথা চারা দিয়ে উঠতে পারে? বিধানসভা নির্বাচনের আগে, কোনো বিতর্ক চান না বলেই কি এবার গরীবের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানোর কথা বলছেন তিনি? নাকি তাঁর দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর আস্থা উড়ছে ক্রমশ? বিশেষ করে জল্পনা আরও বেড়েছে, যখন ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে এক বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী এদিনে বলেন, ‘জয় বাংলা জয় জহর’ প্রকল্পের এক পয়সা যেন নয়-ছয় না হয়। তাহলে আমি ছেড়ে কথা বলবো না। সরাসরি প্রাপকদের হাতে টাকা দেওয়া হবে, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পঞ্চায়েত সমিতির কাউকে নয়। টাকা গরীব মানুষের হাতে দিতে হবে। আর এখানেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা রয়েছে মানুষের কাছে আরও সহজে সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার জন্য। আর বাংলায় এর বেশির ভাগটাই রয়েছে শাসকদলের হাতে। তবুও, সেই ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন না খোদ মুখ্যমন্ত্রী! এখানেই কি অনেক রহস্য লুকিয়ে নেই? উত্তরের অপেক্ষায় রাজনৈতিক মহল!

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!