এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > একাধিক ইস্যুতে মতানৈক্যের পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণের পর জল্পনা বাড়ালেন রাজ্যপাল

একাধিক ইস্যুতে মতানৈক্যের পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণের পর জল্পনা বাড়ালেন রাজ্যপাল


পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে রাজ্য বনাম কেন্দ্রের সংঘাত নতুন কিছু নয়। আর বরাবরই কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে মুখর হয়েছে বাংলার শাসকদল। সেটা বাম আমল হোক বা তৃণমূল আমল, চিত্রটা কিন্তু পাল্টায়নি। আর যেহেতু রাজ্যপাল কেন্দ্র সরকার দ্বারা নিয়োগীত, তাই বারবার রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। একসময় তদানীন্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর সঙ্গে বারবারই যুদ্ধে মেতে উঠতে দেখা গিয়েছিল পশ্চিমবাংলার বামফ্রন্ট সরকারকে।

পরবর্তীতে তৃণমূল সরকার আসার পরে কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এবং নবনিযুক্ত রাজ্যপাল জগদীশ ধনকারের সঙ্গেও বারবার সংঘাত সামনে আসে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের। সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রখ্যাত গায়ক বাবুল সুপ্রিয়কে হেনস্থার মুখে পড়তে হয়। যাকে কেন্দ্র করে ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে উপস্থিত হন আচার্য পদে আসীন স্বয়ং রাজ্যপাল মহাশয়। আর এই ব্যাপারকে কটাক্ষ করতে ছেড়ে দেননি রাজ্যের শাসক দলের নেতৃত্ব।

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তার বক্তব্যের মাধ্যমে পরোক্ষে কটাক্ষ করেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে। এমনকি শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের পাল্টা বিবৃতি দিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে দেখা যায় রাজ্যপাল জগদীশ ধনকারকে। যাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় জোর জল্পনা। তারপরেই আবার উত্তরবঙ্গে রাজ্যপালের ডাকা বৈঠকে গরহাজির ছিলেন শাসক দলের নেতৃত্ব।

রাজ্যপাল ব্যাপারটাকে সাময়িক হতাশাজনক বলে ব্যক্ত করেন। এইসব ঘটনা থেকে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছিল, রাজ্যপাল বনাম রাজ্য সরকারের সংঘাত। কিন্তু ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেই জানেন, রাজ্যপাল জগদীশ ধনকার বাংলায় রাজ্যপাল হিসেবে নতুন হলেও বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ইত্যাদি নিয়ে তিনি অনেক পড়াশোনা করেছেন।

দূর্গাপূজা সম্পর্কে তার উৎসাহের অভাব ছিল না। সেই জন্য কলকাতার শহরতলি থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় তিনি যে রকম পূজা পরিদর্শন করেছেন, ঠিক তেমনই অনেক ক্লাবের উদ্বোধনেও অংশগ্রহণ করেছেন। আর এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অর্থাৎ রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান আগামী 11 অক্টোবর রেড রোডে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মেগা দুর্গা কার্নিভাল অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান রাজ্যপাল মহাশয়কে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অনেকের মনেই প্রশ্ন ছিল, রাজ্যপাল এই অনুষ্ঠানে সমবেত হবেন কিনা! কিন্তু সব রকমের জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান স্পষ্টতই জানিয়ে দেন, তিনি ওই অনুষ্ঠানে সস্ত্রীক উপস্থিত হচ্ছেন। এমনকি কলকাতায় দূর্গাপূজা দেখতে আসা তার মেয়ে, জামাতা এবং বেয়াইকেও তিনি সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন বলে তার ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন।

বিশেষ সূত্র মারফত পাওয়া খবর অনুযায়ী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে দূর্গাপূজার বিসর্জনের সাংস্কৃতিক মাহাত্ম্য এবং রাজ্যের ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিপূরক ভাবে যুক্ত এই অনুষ্ঠানকে দেখতে আসা অসংখ্য মানুষের উৎসাহ সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রেড রোডের দূর্গা কার্নিভালে প্রতি বছরই বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি সহকারে পর্যটক, বিদেশি দর্শক এবং উৎসাহিত দর্শকদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মত।

তাই রাজ্যপাল নিজের ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন, এই ধরনের অনুষ্ঠানকে তিনি কোনভাবেই মিস করতে পারেন না। তবে জানা গেছে, কার্নিভালের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র অনেক আগে ছাপানোয় তার মধ্যে রাজ্যপালের নাম থাকছে না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যপালকে জানানো এই অনুরোধ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।

অন্যদিকে প্রতিবারই বিজয় সম্মিলনীর মাধ্যমে শুভেচ্ছা আদান প্রদান করে থাকেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেই অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল এখনও ডাক পাননি বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু আগামী 11 অক্টোবর রেড রোড কার্নিভাল অনুষ্ঠানে যদি রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী সহযোগে উপস্থিত থাকেন, তাহলে বাংলার রাজনীতিতে যে একটি আকর্ষণীয় দৃষ্টান্ত তৈরি হবে, সেই বিষয়ে একমত প্রায় সকল রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাই। আর বিভিন্ন ইস্যুতে ঘাত-প্রতিঘাতের পর মা দুর্গার বিসর্জনের প্রাকমুহুর্তে রাজ্যে সাংবিধানিক প্রধান এবং প্রশাসনিক প্রধানের এই সহাবস্থান এখন কোন দিকে যায়! সেদিকেই দৃষ্টি থাকবে বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!